“রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রকাশের ক্ষেত্রে নিজস্ব দায়িত্বের বিষয়টি বিবেচনায় নিলে, আমরা বিশ্বাস করি, আমেরিকান জনগণের কাছে সকল প্রেসিডেন্ট প্রার্থির কথা শোনার সমান সুযোগ থাকা উচিৎ।”
Published : 13 Jul 2024, 05:59 PM
ফেইসবুক ও ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ওপর জারি করা নিষেধাজ্ঞা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেটা।
সম্প্রতি নিজেদের মূল বিবৃতি আপডেট করে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে ফেইসবুক ও ইনস্টাগ্রামে ট্রাম্পের ওপর দেওয়া স্থগিতাদেশ সমাপ্তির ঘোষণা দিয়েছে সোশাল মিডিয়া জায়ান্ট কোম্পানিটি। বিষয়টি নিয়ে প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদ সাইট ‘অ্যাক্সিওস’।
মেটার মূল বিবৃতি অনুসারে, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্প সমর্থকদের দাঙ্গার পর একে ‘চরম ও খুবই অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি’ আখ্যা দিয়ে তারা এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল।
ক্যাপিটল ভবনে সহিংসতার সময় সাতজন ব্যক্তি নিহত হয়েছিলেন।
পরবর্তীতে সে বছরের মে মাসে মেটার ওভারসাইট বোর্ড বলেছিল, ফেইসবুক ও ইনস্টাগ্রামের কমিউনিটি গাইডলাইন ‘গুরুতরভাবে’ লঙ্ঘনের পর ট্রাম্পের বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হলেও ফেইসবুক তার ওপর উপযুক্ত শাস্তি প্রয়োগে ব্যর্থ হয়েছে।
সহিংসতা শুরুর তিন ঘণ্টা পর ট্রাম্প একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছিলেন, যেখানে বিক্ষোভকারীদেরকে ‘মহৎ দেশপ্রেমিক’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেছেন, “আপনাদের আমরা ভালোবাসি। আপনারা খুবই স্পেশাল।”
এ ছাড়া, ক্যাপিটল দাঙ্গার আগে ট্রাম্পের অন্যান্য বিবৃতি পর্যবেক্ষণ করে বোর্ড এ সিদ্ধান্তে পৌঁছায় যে, ট্রাম্প কোম্পানির নীতিমালা লঙ্ঘন করেছেন, যেখানে মেটার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে সহিংসতায় জড়ানো ব্যক্তিদেরকে প্রশংসা ও সমর্থন করেছিলেন তিনি।
এর দুই বছর পর ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট পুনর্বহাল করে মেটা, যেখানে কোম্পানির নীতিমালা লঙ্ঘনে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের শর্ত ছিল, যা ফেইসবুক ও ইনস্টাগ্রামের অন্য যে কোনো ব্যবহারকারীর তুলনায় বেশি। নিজেদের সর্বশেষ আপডেটে মেটা বলেছে, এখন থেকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রে অন্য সকল ব্যবহারকারীর মতো একই মানদণ্ড প্রয়োগ করা হবে।
“শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, যার মধ্যে রয়েছে রিপাবলিকান পার্টিও। আর এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক মনোনয়নও দেওয়া হবে,” বিবৃতিতে বলেছে মেটা।
“রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রকাশের ক্ষেত্রে নিজস্ব দায়িত্বের বিষয়টি বিবেচনায় নিলে, আমরা বিশ্বাস করি, আমেরিকান জনগণের কাছে সকল প্রেসিডেন্ট প্রার্থির কথা শোনার সমান সুযোগ থাকা উচিৎ।”
জানুয়ারির ক্যাপিটল দাঙ্গার পর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছিল আরেক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারও, যা এখন ‘এক্স’ নামে পরিচিত। সে সময় ট্রাম্প তিনটি এমন টুইট পোস্ট করেছিলেন, যেগুলোকে সহিংসতায় উস্কানি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।
প্রাথমিকভাবে, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি টুইটার ট্রাম্পের অ্যাকাউন্টে ১২ ঘণ্টার স্থগিতাদেশ দিয়েছিল টুইটার। তবে, এর দুই দিন পর ট্রাম্পের বিভিন্ন পোস্ট তাদের কমিউনিটি মানদণ্ড লঙ্ঘন করেছে, এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর পর তার অ্যাকাউন্ট পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় কোম্পানিটি।
এর পরের বছর টুইটারের নতুন মালিক ইলন মাস্ক নিজ অ্যাকাউন্ট থেকে একটি অনানুষ্ঠানিক জরিপ চালিয়ে জিজ্ঞেস করেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা তুলে ফেলা উচিৎ কি না। এর কিছুদিন পরই ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট পুনর্বহাল করে কোম্পানিটি।