টুইটারের সাবেক পাঁচ কর্মীর প্রস্তাবিত ক্লাস অ্যাকশন মামলার অভিযোগে উঠে আসে, ছাঁটাইয়ের আগে কোম্পানিটি কোনো অগ্রিম নোটিশ দেয়নি।
Published : 16 Jan 2023, 04:16 PM
কোম্পানি থেকে ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের ‘ক্লাস অ্যাকশন’ মামলার বদলে স্বতন্ত্র অভিযোগ জানানোর এক আইনি আদেশ নিশ্চিত করেছে ইলন মাস্ক মালিকানাধীন সামাজিক প্ল্যাটফর্ম টুইটার।
‘ক্লাস-অ্যাকশন’ হল এমন এক মামলা যেখানে বাদীপক্ষ একজন হলেও তিনি একই ধরনের ঘটনার শিকার অনেকের প্রতিনিধিত্ব করেন ও বাদী জয়ী হলে মামলার রায় ভুক্তভোগী সবার জন্যই প্রযোজ্য হয়।
টুইটারের সাবেক পাঁচ কর্মীর প্রস্তাবিত ক্লাস অ্যাকশন মামলার অভিযোগে উঠে আসে, ছাঁটাইয়ের আগে কোম্পানিটি কোনো অগ্রিম নোটিশ দেয়নি।
গেল শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিস্ট্রিক্ট জাজ’ জেমস ডোনাটো রায় দেন, ক্লাস অ্যাকশন মামলা নয়, বরং ব্যক্তিগত সালিশির মাধ্যমে ইলন মাস্ককে অবশ্যই তাদের দাবি অনুসরণ করতে হবে।
এর আগে কোম্পানির সঙ্গে পাঁচ কর্মীর স্বাক্ষর করা চুক্তিপত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে তাদের দাবি স্বতন্ত্রভাবে অনুসরণের অনুরোধ করেছিল টুইটার। ওই অনুরোধ মঞ্জুর করে তাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন ডোনাটো।
এই প্রসঙ্গে রয়টার্স টুইটারের মন্তব্য জানতে চাইলে তাৎক্ষণিক কোনো জবাব মেলেনি।
গোটা ক্লাস অ্যাকশন মামলাই খারিজ করা উচিত কি না, সেটি নির্ধারণে শুনানির জন্য আরেকটি তারিখ দিয়েছেন সান ফ্রান্সিসকোর এই বিচারক।
মামলাটি প্রথমে দায়ের করার পর এতে আরও তিন সাবেক টুইটার কর্মীর যোগ দেওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি। তাদের বিরুদ্ধে কোম্পানির সালিশি চুক্তি থেকে সরে আসার অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার বাদীপক্ষের আইনজীবি শ্যানন লিস-রিওর্ডান বলেন, এরইমধ্যে সাবেক টুইটার কর্মীদের পক্ষে তিনি তিনশটি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। আর সামনে হয়তো আরও শত শত অভিযোগপত্র জমা দেবেন।
অভিযোগপত্র দেওয়া সকল কর্মীর দাবি, তারা মাস্কের অধিগ্রহণের আগে প্রতিশ্রুতি দেওয়া ‘সেভারেন্স প্যাকেজের’ পুরো অংশ পাননি। এমনকি কেউ কেউ ‘লিঙ্গ পরিচয় বা শারীরিক অক্ষমতা নিয়ে বৈষম্যের’ অভিযোগও তুলেছেন।
গত বছর এমনই এক ক্লাস অ্যাকশন মামলার অভিযোগে ডোনাটো রায় দিয়েছেন, মাস্কের অধিগ্রহণের পর ছাঁটাই করা হাজার হাজার কর্মীদের ছাঁটাইয়ের বিষয়টি টুইটারকে অবশ্যই আগে থেকে জানাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, কর্মীদের মামলার ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া ‘বিচ্ছেদ চুক্তিপত্র’ স্বাক্ষর করতে বলার আগে টুইটারকে অবশ্যই তাদের একটি ‘সংক্ষিপ্ত ও সহজ শব্দের নোটিশ’ পাঠাতে হবে।
২০২২ সালের নভেম্বরের শুরুতে কোম্পানির খরচ কমানোর বিষয়টিকে কারণ দেখিয়ে প্রায় তিন হাজার সাতশ কর্মী ছাঁটাই করেছে টুইটার। আর পরবর্তীতে শত শত কর্মী পদত্যাগও করেছেন।
গত বছরের ডিসেম্বরে বেশ কিছু সংখ্যক সাবেক কর্মী অভিযোগ করেন, মাস্কের অধিগ্রহণের পর বিভিন্ন আইন লঙ্ঘন হয়েছে। এর মধ্যে আছে নারীদের লক্ষ্য করে ছাঁটাই কার্যক্রম চালানো ও প্রতিশ্রুত ক্ষতিপূরণ না দেওয়ার মতো বিষয়গুলো।
যুক্তরাষ্ট্রের এক ‘লেবার বোর্ডে’ দায়ের করা অন্তত তিনটি অভিযোগের মুখে পড়েছে টুইটার। এতে দাবি করা হয়, কোম্পানির সমালোচনা ও ধর্মঘট ডাকার চেষ্টার পাশাপাশি ফেডারেল শ্রম আইনে সুরক্ষিত অন্যান্য আচরণের জন্য কর্মীদের বরখাস্ত করেছে কোম্পানিটি।