সাড়ে ছয়শ কোটি কিলোমিটার যাত্রার এ মিশনটি শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের এপ্রিলে, যা শেষ হতে সময় লাগতে পারে আট বছরের বেশি সময়।
Published : 19 Aug 2024, 03:44 PM
বিশ্বের প্রথম ‘ফ্লাই-বাই’ মিশনের অংশ হিসেবে পৃথিবী অতিক্রম করতে যাচ্ছে ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘ইএসএ’র জুস মহাকাশযান।
‘জুস’-এর পূর্ণরূপ হল ‘জুপিটার আইসি মুনস এক্সপ্লোরার’, যার মধ্যে ব্যবহার করা হয়েছে যুক্তরাজ্যে তৈরি বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি। নভোযানটির নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা একে প্রথমে চাঁদের ও পরবর্তীতে পৃথিবীর ওপর দিয়ে নিয়ে যাবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ।
এ ঝুঁকিপূর্ণ কৌশল সফল হলে শুক্র গ্রহ পরিক্রমণ করে বৃহস্পতি গ্রহে যাওয়ার ‘শর্টকাট’ বা সহজ রাস্তা পাবে জুস, যেখানে প্রথমে চাঁদের ও পরবর্তীতে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ ব্যবস্থা একটি প্রাকৃতিক ব্রেক হিসেবে কাজ করে এর গতি কমিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি যাত্রার পরের ধাপে যাওয়ার ‘গুলতি’ হিসেবে কাজ করবে।
সাড়ে ছয়শ কোটি কিলোমিটার যাত্রার এ মিশনটি শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের এপ্রিলে, যা শেষ হতে সময় লাগতে পারে আট বছরের বেশি সময়।
মহাকাশযানটির ভেতর ১০টি বৈজ্ঞানিক যন্ত্র আছে, যা বৃহস্পতি গ্রহের তিনটি চাঁদ অর্থাৎ ‘ক্যালিস্টো’, ‘ইউরোপা’ ও ‘গ্যানিমেড’-এ খোঁজ করে দেখবে যে এদের মহাসাগরে জীবনধারণ সম্ভব কি না।
তবে, মিশনে সামান্য ত্রুটিও মহাকাশযানকে বেলাইনে নিয়ে মিশনটি একেবারে শেষ করে দিতে পারে, এ কথা অবশ্য স্বীকার করছেন ইএসএ’র বিশেষজ্ঞরা।
সংস্থাটি বলছে, মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় ভোর পাঁচটা ৫৭ মিনিট থেকে দুপুর পর্যন্ত নভোযানটি চাঁদ ও পৃথিবীতে ‘ফ্লাই-বাই’ শেষ করে দ্বিগুণ মাধ্যাকর্ষণের সহায়তায় নিজের যাত্রা অব্যাহত রাখবে, যা মহাকাশ অভিযানে এমন প্রথম ঘটনা।
এ কৌশল ব্যবহার করার পর জুসের গতি ও দিক নির্দেশনায় পরিবর্তন আসবে, যার ফলে মহাকাশেও এর গতিপথ পরিবর্তিত হবে।
পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ বল জুসের মহাকাশে যাওয়ার গতিপথ বাকিয়ে দিয়ে একে ২০২৫ সালের অগাস্ট মাস নাগাদ শুক্র গ্রহে একটি ‘ফ্লাই-বাই’ সম্পন্ন করতে সাহায্য করবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে স্কাই।
এর পর, সেখান থেকে মহাকাশযানটির শক্তি বাড়তে থাকবে, যেখানে প্রথমে শুক্র ও পরবর্তীতে পৃথিবীর সহায়তায় এর গতি বেড়ে যাবে।
এ মহাকাশযান দেখার সেরা উপায় হতে পারে শক্তিশালী দূরবীন বা টেলিস্কোপ।
এ ছাড়া, চাঁদ ও পৃথিবীর ওপর দিয়ে ফ্লাইবাই সম্পন্ন করার সময় ছবি তুলবে জুস নভোযানের ভেতরের দুটি ক্যামেরা, যে ছবিগুলো পরবর্তীতে জনসমক্ষে প্রকাশ পাবে।
স্কাই বলছে, যেহেতু পৃথিবী থেকে বৃহস্পতির গড় দূরত্ব ৮০ কোটি কিলোমিটার, তাই এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ কৌশল অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আর কোনো বিশাল রকেট ছাড়া, সোজাসুজি পথে গ্যাস জায়ান্ট গ্রহটিতে পৌঁছাতে প্রায় ৬০ হাজার কেজি প্রপেলান্ট প্রয়োজন, যা এক কথায় অবাস্তব।