গবেষকরা বলেছেন, এ নতুন পদ্ধতিতে লবণাক্ত পানি থেকে লিথিয়াম সংগ্রহের খরচ ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসতে পারে।
Published : 23 Aug 2024, 03:49 PM
সম্প্রতি সমুদ্রের পানি থেকে লিথিয়াম মাইনিং করার এক ‘সাশ্রয়ী’ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা, যা গোটা বিশ্বে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুতের ব্যবহার নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি পরবর্তীতে গিয়ে টেকসই উপায়ে খনিজ সংগ্রহের সুযোগ দেবে বলে দাবি তাদের।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় লিথিয়ামের বৈশ্বিক চাহিদা ব্যপক আকারে বেড়েছে, যা বিভিন্ন ধরনের ব্যাটারি উৎপাদনে ব্যবহার হয়ে থাকে। আর এতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির জনপ্রিয়তা।
অনুমান বলছে, ২০২১ সালে এই ধাতুর উৎপাদন মাত্রা পাঁচ লাখ মেট্রিক টন হলেও ২০৩০ সাল নাগাদ তা বেড়ে পৌঁছাতে পারে ৪০ লাখ মেট্রিক টন পর্যন্ত।
প্রচলিত উপায়ে, লিথিয়াম বিভিন্ন খনিজ পাথর থেকে আহরণ করা হলেও তা খরচসাপেক্ষ। আর এ প্রক্রিয়ায় বিপুল পরিমাণ শক্তি খরচ হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত রাসায়নিকও ব্যবহার করতে হয়।
সম্প্রতি লিথিয়াম ধাতুযুক্ত বিভিন্ন ঘনীভূত লবণাক্ত হ্রদের লবণ বাষ্পীভূত করে তা সংগ্রহ করতে দেখা গেছে খনি শ্রমিকদের। এ পদ্ধতির ক্ষেত্রেও আর্থিক ও পরিবেশগত খরচ অনেক বেশি। তবে, এক্ষেত্রে নির্ভর করতে হয় সুনির্দিষ্ট আবহাওয়া পরিস্থিতি ও লবণাক্ত হ্রদের প্রাপ্যতার মতো বিষয়গুলোর ওপর।
এজন্য বিজ্ঞানীরা লিথিয়াম সংগ্রহের সাশ্রয়ী, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন পদ্ধতি খতিয়ে দেখছেন, যেখানে সম্প্রতি এমনই এক উপায় খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছেন স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি’র একদল গবেষক।
গবেষকরা বলেছেন, এ নতুন পদ্ধতিতে লবণাক্ত পানি থেকে লিথিয়াম সংগ্রহের খরচ ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসতে পারে।
‘রিডক্স-কাপল ইলেক্ট্রোডায়ালাইসিস’ নামে ডাকা এ প্রক্রিয়াটি লিথিয়ামকে পানি থেকে একটি কঠিন ঝিল্লি’র মধ্য দিয়ে চলাচল করাতে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে, যার ফলে কম ঘনত্বওয়ালা লিথিয়ামকে আরও ঘনীভূত করে আগের চেয়েও বিশুদ্ধ সমাধান তৈরি করা সম্ভব।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এতে করে ঘনীভূত উপাদান থেকে লিথিয়ামকে পৃথক করা আরও সহজ হয়ে উঠে।
এমনকি লিথিয়াম উৎপাদনের ক্ষেত্রে পরিবেশ যে পরিমাণ ক্ষতির মুখে পড়ে, এ প্রক্রিয়ায় সেটিও কমিয়ে আনা যেতে পারে।
“আমাদের পদ্ধতিতে যে সুবিধা দেখা গেছে, সেগুলো প্রচলিত লিথিয়াম নিষ্কাশন কৌশলগুলোর তুলনায় পরিবেশবান্ধব ও সাশ্রয়ী। ফলে, লিথিয়াম উৎপাদনের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়,” বলেন এ গবেষণার প্রধান লেখক রং জু।
“আমরা আশা করছি, পরবর্তীতে গিয়ে আমাদের এ পদ্ধতি বিদ্যুচ্চালিত যান ব্যবস্থা ও নবায়নযোগ্য শক্তি সংরক্ষণের সক্ষমতায় বড় অগ্রগতি দেখাবে।”