ইইউ’র অ্যান্টিট্রাস্ট প্রধান মারগ্রেথ ভেস্টেগার নভেম্বরে অফিস ছেড়ে যাওয়ার আগেই এ তদন্তের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে; আর সেখানে একটি কোম্পানির বিশ্বব্যাপী বার্ষিক আয়ের ১০ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা থাকতে পারে।
Published : 16 Jun 2024, 04:36 PM
সিলিকন ভ্যালি জায়ান্টদের একচেটিয়া ক্ষমতায় লাগাম টানার উদ্দেশ্যে ইইউ যে করে যুগান্তকারী আইন তৈরি করেছে, সেই আইনের আওতায় আসতে যাচ্ছে অ্যাপল ও মেটা। আর সম্ভবত, গ্রীষ্মের আগেই এ আইন মেনে চলতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে আদালতে ছুটতে হবে কোম্পানি দুটিকে।
ইইউ এ তদন্তে অ্যাপল ও মেটাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন এ বিষয়ে সরাসরি সংশ্লিষ্ট তিন সূত্র।
মার্চ মাসে ইউরোপীয় কমিশন ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্ট (ডিএমএ)’র অধীনে উল্লিখিত দুটি প্রযুক্তি কোম্পানি ও সার্চ জায়ান্ট গুগলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে।
এ খাতের ছোট কোম্পানিগুলোর জন্য প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করতেই ডিএমএ আইন প্রবর্তন করে ইইউ। ব্যবহারকারীরা যেন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইন্টারনেট ব্রাউজার বা অ্যাপ স্টোরে প্রতিযোগিতামূলক অনলাইন পরিষেবাগুলো নিজেদের ইচ্ছা অনুসারে বেছে নিতে পারে টেক জায়ান্টদের সেটি নিশ্চিতে বাধ্য করে এই আইন।
আগস্টে গ্রীষ্মের বিরতির আগেই ইইউ নিয়ন্ত্রকরা তদন্তের প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করবেন যা অনেকটা অ্যান্টিট্রাস্ট মামলায় অভিযোগ গঠনের মতো বিষয়। প্রথমে অ্যাপল এবং এরপর মেটার বিষয়ে অভিযোগ ইইউ প্রকাশ করবে বলে জানিয়েছেন সূত্ররা।
এ প্রসঙ্গে ইইউ কমিশন এবং মেটা রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিক কোনো সাড়া দেয়নি। এদিকে, অ্যাপল নিজেদের মার্চ মাসের এক বিবৃতির কথা উল্লেখ করেছে। সেখানে আইফোন নির্মাতা কোম্পানিটি বলেছিল তাদের কার্যক্রম ডিএমএ’র আইন মেনে চলছে এবং তারা ইইউ কমিশনের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে জড়িত বলে আত্মবিশ্বাসী।
ইইউ’র অ্যান্টিট্রাস্ট প্রধান মারগ্রেথ ভেস্টেগার নভেম্বরে অফিস ছেড়ে যাওয়ার আগেই এ তদন্তের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে; আর সেখানে একটি কোম্পানির বিশ্বব্যাপী বার্ষিক আয়ের ১০ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা থাকতে পারে। তবে, কোম্পানি দুটি চাইলে আগেই উদ্বেগ মোকাবেলায় নিজেদের সমাধান প্রস্তাব করতে পারে বলে উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে।
ইইউ’র তদন্তে কড়া নজরে রয়েছে অ্যাপলের ‘স্টিয়ারিং রুল’-এর ওপর। নিয়ন্ত্রকরা বলছেন, এই নিয়মের ফলে অ্যাপ নির্মাতারা অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরের বাইরে বিনামূল্যের বা কম খরচের বিভিন্ন অফার সম্পর্কে ব্যবহারকারীদের জানাতে পারেন না।
এ সমস্যাটি নিয়েই ইইউ নিয়ন্ত্রকরা অ্যাপলকে অভিযুক্ত করার আশা প্রকাশ করছেন বলে জানিয়েছে সূত্রগুলো। এ ছাড়া, অ্যাপলের নিজস্ব ‘সাফারি’ ওয়েব ব্রাউজারের ‘চয়েস স্ক্রিন’-এর ওপর নজর দিয়ে দ্বিতীয় আরেকটি তদন্ত শুরু হতে সম্ভবত সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন তারা।
পাশাপাশি, প্রাথমিক অনুসন্ধানটি মেটার ‘পে অর কনসেন্ট’ মডেলের ওপরেও চোখ রাখছে বলে জানিয়েছেন সূত্ররা। এ মডেলে ‘অ্যাড-ফ্রি’ বা বিজ্ঞাপন-মুক্ত ফেইসবুক ও ইনস্টাগ্রামের জন্য সাবস্ক্রিপশন ফি প্রদান করতে হয়, বলেছে সূত্ররা।
ইইউ’র নিয়মে অ্যাপলের অভিযুক্ত হওয়ার বিষয়টি প্রথম ব্রিটিশ পত্রিকা ফাইনান্সিয়াল টাইমস প্রকাশ করেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।