নাসার পথিকৃত নভোচারী ওয়াল্টার কানিংহামের জীবনাবসান

প্রথম মানববাহী অ্যাপোলো মিশনের সর্বশেষ জীবিত নভোচারী ছিলেন তিনি। কানিংহামের বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Jan 2023, 12:10 PM
Updated : 4 Jan 2023, 12:10 PM

নাসার অ্যাপোলো প্রকল্পে প্রথম সফল মানববাহী মিশনের নভোচারী ওয়াল্টার কানিংহাম মারা গেছেন। ওই প্রথম মিশনের সর্বশেষ জীবিত নভোচারী ছিলেন তিনি।

মৃত্যুর সময় কানিংহামের বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।

১৯৬৮ সালে পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে ১১ দিনের অ্যাপোলো ৭ মিশনে সহকর্মী ওয়াল্টার স্কিরা ও ডন আইজেলের সঙ্গে যোগ দেন তিনি।

তাদের ওই মিশন অ্যাপোলো স্পেসক্রাফটের প্রথম পরীক্ষামূলক মানববাহী মহাকাশ যাত্রা ছিল। এরই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ১৯৬৯ থকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত ডজনখানেক নভোযাত্রী চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করেন।

অ্যাপোলো ৭ মিশনের ‘লুনার মডিউল পাইলট’ ছিলেন কানিংহাম, যদিও এতে চাঁদে অবতরণের জন্য কোনো যান ছিল না। আর এই মিশনের উৎক্ষেপণ ও ন্যাভিগেশন বাদে এর সকল ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণের দায়িত্বও ছিল তার কাঁধে।

ইতিহাস তৈরি করা ওই অভিযানের যাত্রীদের মধ্যে ১৯৮৭ সালে মহাকাশযানের কমান্ড মডিউল পাইলট ডন আইজেল মারা যান। আর ২০০৭ সালে মারা যান মিশন কমান্ডার ওয়াল্টার স্কিরা।

মৃত্যুর কারণ হিসেবে শারীরিক জটিলতার কথা উল্লেখ করেছে কানিংহামের পরিবার। তারা আরও বলেন, একটি ‘পরিপূর্ণ জীবন’ কাটানোর পর তিনি হাসপাতালে মারা গেছেন।

১৯৬৮ সালের ১১ অক্টোবর উৎক্ষেপিত অ্যাপোলো ৭ মিশন নাসার চন্দ্রাভিযান প্রোগ্রামের পুনঃসূচনা হিসেবে বিবেচিত হয় বলে উঠে এসেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজের প্রতিবেদনে।

মিশনের ২১ মাস আগে অর্থাৎ ১৯৬৭ সালের জানুয়ারির শেষে অ্যাপোলো ১ অভিযানের স্থল-ভিত্তিক ‘লঞ্চ রিহার্সাল’ চলাকালীন এক অগ্নিকাণ্ডে মারা যান এর তিন সদস্য গাস গ্রিসম, এড হোয়াইট ও রজার চাফি।

ওই দুর্ভাগ্যজনক অভিযানের ব্যাকআপ পাইলট হিসেবেও কাজ করেন কানিংহাম। পরবর্তীতে, অ্যাপোলো ২ মিশন বাতিল হওয়ার আগ পর্যন্ত ওই মহাকাশযাত্রা দলেরও সদস্য ছিলেন তিনি।

অ্যাপোলো ৭ মিশনে, মহাকাশযানে নভোচারীদের কার্যক্রমের সর্বপ্রথম ‘লাইভ টিভি ট্রান্সমিশন’ দেখানো হয়। এটি মিশনের স্থল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও নভোচারীদের মধ্যে পরীক্ষামূলক বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবেও বিবেচিত হয়েছিল, যেখানে যাত্রা চলাকালীন নভোচারীদের মাথা ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়ার পর কখনও কখনও মিশনের পরিচালকদের প্রতিও তাদের সরাসরি বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখা যায়।

এমন উত্তেজনার কারণে এই তিন নভোচারীর কেউই পরবর্তীতে আর মহাকাশ যাত্রা করেননি।

তবে, ১৯৬৯ সালের জুলাইয়ে অ্যাপোলো ১১ কে চন্দ্রপৃষ্ঠে নিয়ে যাওয়া বিভিন্ন সিস্টেমের সক্ষমতার প্রমাণ মেলায় মিশনটি প্রযুক্তিগতভাবে সফল হিসাবে বিবেচিত হয়েছিল।

কর্নেল হিসেবে অবসর নেওয়ার আগে মার্কিন নৌবাহিনী ও মেরিন কোরে ৫৪ মিশনের ফাইটার পাইলট হিসেবে কাজ করেছেন কানিংহাম। ১৯৬৩ সালে  তিনি নাসায় তৃতীয় শ্রেণির একজন নভোচারী হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন।