সৌরচ্ছটার শেষ পর্যায়, যা ‘এক্সট্রিম আল্ট্রাভায়োলেন্ট’ নামেও পরিচিত, তা পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা বিভিন্ন স্যাটেলাইটের জন্য হুমকিস্বরূপ।
Published : 20 Aug 2024, 02:01 PM
সৌরচ্ছটার শেষ পর্যায় পৃথিবী পৃষ্ঠে নানারকম যোগাযোগ ব্যবস্থায় যে ব্যাঘাত ঘটানোর ক্ষমতা রাখে, সেটি প্রচলিত ধারণার চেয়েও ক্ষতিকর হতে পারে, এমনই উঠে এসেছে নতুন এক গবেষণায়।
প্রচলিত ধারণা হল, সৌরচ্ছটার প্রথম ঢেউ তৈরি হয়ে থাকে সূর্যপৃষ্ঠে আকস্মিক কোনো বিস্ফোরণ থেকে। তবে, এটি যে বিভিন্ন জিপিএস সংকেতে আঘাত হানার পাশাপাশি বৈশ্বিক রেডিও ‘ব্ল্যাকআউট’ও সৃষ্টি করতে পারে, তা নিয়ে তেমন গবেষণা হয়নি।
নতুন এক গবেষণায় ইঙ্গিত মিলেছে, সৌরচ্ছটার শেষ পর্যায়, যা ‘ইইউভি (এক্সট্রিম আল্ট্রাভায়োলেন্ট)’ নামেও পরিচিত, তা পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা বিভিন্ন স্যাটেলাইটের জন্য হুমকিস্বরূপ, যেখানে দীর্ঘ মেয়াদে আরও শক্তিশালী আঘাত হানার ঝুঁকিও রয়েছে।
এর মানে, বায়ুমণ্ডলের ওপরের যে অংশটি ‘আয়নোস্ফিয়ার’ নামে পরিচিত, সেখার এর দীর্ঘায়িত প্রভাব থাকতে পারে। এই স্তরটি সূর্য থেকে শোষণ করা শক্তির ওপর নির্ভর করে সংকুচিত বা প্রসারিত হয়ে থাকে।
আয়নোস্ফিয়ারে বড় পরিবর্তন এলে তা যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি ব্যাহত করতে পারে। কারণ, এই স্তরেই থাকে বিভিন্ন স্যাটেলাইট, যা গোটা বিশ্বে সংকেত পাঠায়।
উত্তর আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্টে অবস্থিত কুইন্স ইউনিভার্সিটি’র গণিত ও পদার্থবিদ্যা বিভাগের গবেষক ও এ গবেষণার লেখক ড. সুজানা বেকার বলেছেন, তাদের ‘মূল মনযোগের বিষয়’ হল আয়োনোস্ফিয়ারে সৌরচ্ছটার প্রভাব বোঝার চেষ্টা করা।
“বিভিন্ন গবেষণা থেকে ইঙ্গিত মিলেছে, সৌর বিকিরণ প্রবাহে ভিন্নতা দেখা দিলে আয়োনোস্ফিয়ারের আলোকিত অংশ খুবই সংবেদনশীল হয়ে ওঠে, যার ফলে সচরাচর যেসব প্রযুক্তির ওপর মানুষ নিয়মিত নির্ভর করে থাকে, সেগুলোতেই গোলযোগ দেখা দিতে পারে।” - বলেন তিনি।
“এর চেয়েও শক্তিশালী ঘটনার ক্ষেত্রে আয়োনোস্ফিয়ারে আরও বেশি প্রভাব পড়ার ঝুঁকি থাকে। ফলে, সৌরচ্ছটার শেষ পর্যায় থেকে বিভিন্ন ন্যাভিগেশন ব্যবস্থা ও রেডিও যোগাযোগে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।”
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, সৌরচ্ছটার বেশিরভাগ অংশই আসলে ইইউভি’র শেষ পর্যায়, যার প্রভাব নিয়ে এখনও পরিষ্কার ধারণা মেলেনি।
সাধারণত সৌরচ্ছটার শ্রেণিবিন্যাস হয়ে থাকে এগুলো কতটা শক্তিশালী ও পৃথিবীর ওপর এদের সম্ভাব্য প্রভাব কেমন তার ভিত্তিতে, যেখানে ‘এক্স’ নামের শিখা সবচেয়ে আগ্রাসী হিসেবে বিবেচিত।
এজন্য গবেষকরা এর আগের বিভিন্ন এক্স শ্রেণির শিখার তথ্য খতিয়ে দেখেছেন যাতে আয়োনোস্ফিয়ার কীভাবে শেষ স্তরের ইইউভি শিখার বিপরীতে প্রতিক্রিয়া দেখায়, তা বিশ্লেষণ করা যায়।
এ গবেষণার বিভিন্ন ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে ‘অ্যাস্ট্রোফিজিকাল জার্নাল’-এ।