ক্রমবর্ধমান সোশাল মিডিয়ার ব্যবহার এবং এর বিভিন্ন কেলেঙ্কারী ও বিপদ নিয়ে ব্যবহারকারীদের সচেতন থাকার জন্য সতর্ক করেছেন বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ও কর্তৃপক্ষ।
Published : 26 Jul 2024, 05:03 PM
‘সেক্সটরশন’ প্রতারণায় মানুষদের ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগে নাইজেরিয়া থেকে হাজার হাজার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এটি নিশ্চিত করেছে সোশাল মিডিয়া অ্যাপটির মালিক কোম্পানি মেটা প্ল্যাটফর্মস।
‘সেক্সটরশন’ কী?
এ ধরনের স্ক্যামার বা অপরাধীরা অনলাইনে কম বয়সী নারী সেজে যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কনটেন্ট পাঠাতে প্ররোচিত করে মানুষকে। পরবর্তীতে এসব কনটেন্ট ব্যবহার করেই মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করে বা হুমকি দেয় প্রতারকরা।
এ ধরনের যৌন নির্যাতনের অপরাধের শিকার মানুষ মানসিক চাপ, কলঙ্ক ও লজ্জা সইতে না পেরে নিজেদের জীবন নিয়ে নেওয়ারও উদাহরণ রয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।
এ অপরাধ করেছে বা করার পাঁয়তারা করছিল এমন অন্তত ৬৩ হাজার অ্যাকাউন্ট সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে গেল বুধবার এক ব্লগপোস্টে বলেছে মেটা।
“আর্থিক সেক্সটরশন একটি ভয়ঙ্কর অপরাধ যা ধ্বংসাত্মক পরিণতি বয়ে আনতে পারে।” – বলা হয় ব্লগ পোস্টে।
কোম্পানিটি আরও জানিয়েছে, অন্তত পাঁচ হাজার সাতশ ফেইসবুক গ্রুপও বন্ধ করা হয়েছে, যেখানে কীভাবে মানুষকে ঠকানো যায় তার কৌশল শেখাত স্ক্যামাররা।
এর আগে ক্রমবর্ধমান সোশাল মিডিয়ার ব্যবহার এবং এর বিভিন্ন কেলেঙ্কারী ও বিপদ নিয়ে ব্যবহারকারীদের সচেতন থাকার জন্য সতর্ক করেছেন বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ও কর্তৃপক্ষ।
মে মাসে, অপরাধীদের ফাঁদে পা দিয়ে নিজের জীবনাবসান ঘটিয়েছিলেন স্কটল্যান্ডের শহর ডানব্লেনের ১৬ বছর বয়সী মারে ডাডই। আর সে মাসেই সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ‘সেক্সটরশন’ বিষয়ক নির্দেশিকা বিক্রি করার তথ্য পেয়েছে বিবিসি।
সেক্সটরশন স্ক্যামের সঙ্গে জড়িতরা অনলাইনে ব্যবহারকারীর কাছে সম্ভাব্য ‘রোমান্টিক পার্টনার’ হিসেবে নিজেদের উপস্থাপন করে। এদের লক্ষ্য থাকে ব্যবহারকারীর কাছ থেকে অন্তরঙ্গ বা নগ্ন ছবি হাতিয়ে নেওয়া। অপরাধীরা প্রথমে একটি জাল নগ্ন ছবি পাঠিয়ে এর বিনিময়ে একইরকম আরেকটি ছবির অনুরোধ করে।
এরপর, অপরাধীদের অর্থপ্রদান না করা হলে এসব অন্তরঙ্গ ছবি প্রকাশ্যে প্রচার করার হুমকি দেওয়া হয় ব্যবহারকারীদের।
‘ইয়াহু বয়েজ’
সেক্সটরশন প্রচেষ্টায় জড়িত থাকার জন্য বাদ দেওয়া অ্যাকাউন্টগুলো নাইজেরিয়ায় পরিচালিত সাইবার অপরাধীদের একটি বিস্তৃত নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে বলেও বুধবার জানিয়েছে মেটা। তারা ‘ইয়াহু বয়েজ’ নামে পরিচিত।
টেক জায়ান্টটির বিপজ্জনক সংগঠনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এ প্রতারকদের নাম এবং কার্যক্রম চালাতে মেটা প্ল্যাটফর্মস ব্যবহারে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।
সেক্সটর্শন স্ক্যাম বা এ প্রচেষ্টায় জড়িত থাকতে পারে এমন অ্যাকাউন্টগুলো শনাক্ত করতে তারা বিভিন্ন প্রযুক্তির সংমিশ্রণ ব্যবহার করে থাকে বলে জানিয়েছে মেটা। এর মধ্যে রয়েছে ব্যবহারকারীদেরকে পাঠানো নগ্ন ছবি স্বয়ংক্রিয়ভাবে অস্পষ্ট করে ফেলা। ব্যবহারকারীর কোনো প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে না, এমন বার্তাসহ সেটি উপস্থাপন করা। পাশাপাশি, ছবির প্রেরককে তৎক্ষণিকভাবে ব্লক করা ও চ্যাটটি ‘রিপোর্ট’ করা।