ক্ষতিকর কোনো রাসায়নিক উপাদানের উপস্থিতি টের পেতে সেখানের বায়ু পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ হলেও নমুনা সংগ্রহের জন্য সেখানে মানব উপস্থিতি বিপজ্জনক হতে পারে।
Published : 13 Jun 2024, 04:35 PM
বিপজ্জনক গ্যাসের সন্ধান দেবে এমনই এক রোবো-কুকুর তৈরির দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
এই রোবট কুকুরটির বিশেষত্ব হল– এটি মানুষের জন্য অনিরাপদ বা ঝুঁকিপূর্ণ জায়গার বিপজ্জনক গ্যাসের গন্ধ শুঁকতে পারে।
চার পাওয়ালা কুকুরের মতো দেখতে রোবটটিতে জুড়ে দেওয়া হয়েছে যান্ত্রিক হাত বা বাহু, যা পরিত্যক্ত ভবন বা আগুনের মতো পরিবেশ থেকে বাতাসের নমুনা সংগ্রহ করবে।
রোবটটি প্রাপ্ত বিভিন্ন নমুনা এরপর বিশ্লেষণের জন্য কোনো ব্যক্তির কাছে নিয়ে যাবে। গবেষণা দলটির দাবি, এই রোবট সিস্টেমটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি দেখালেও এর এখনও কিছু সূক্ষ্ম টিউনিং প্রয়োজন।
এ গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘অ্যানালিটিক্যাল কেমিস্ট্রি’তে।
বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে ক্ষতিকর কোনো রাসায়নিক উপাদানের উপস্থিতি টের পেতে সেখানের বায়ু পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ হলেও নমুনা সংগ্রহের জন্য সেখানে মানব উপস্থিতি বিপজ্জনক হতে পারে।
মানুষকে নিরাপদ রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয় আরবানা-চ্যাম্পেইন’-এর গবেষক বিন হু ও তার সহকর্মীরা বিপজ্জনক গ্যাস ও উদ্বায়ী জৈব যৌগ (ভিওসি) শনাক্ত করতে বিভিন্ন ‘রিমোট-কন্ট্রোলড’ ডিভাইস তৈরি করছেন। এসব ডিভাইসের মধ্যে রয়েছে ‘এরিয়াল ড্রোন’ ও ছোট ‘রিমোট অপারেটেড’ জাহাজ।
এ গবেষণা দলটিরই সর্বশেষ উদ্ভাবন এই কুকুরের মতো দেখতে রোবট, যার পিঠে রয়েছে একটি বিশেষ পরীক্ষামূলক হাত। এই হাতে তিনটি ‘নিডল ট্রাপ ডিভাইস (এনটিডিএস)’ রয়েছে, ফলে রোবটটি বিভিন্ন পরিবেশের মধ্যে দিয়ে চলাচলের সঙ্গে সঙ্গে সেখানের বাতাসের নমুনাও সংগ্রহ করতে পারে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে নোরিজ।
গবেষণা দলটি বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জিং জায়গায় এদের নিয়ে ‘ল্যাব টেস্ট’ করেছে। এসব জায়গার মধ্যে রয়েছে একটি আবর্জনা ডিসপোজাল প্ল্যান্ট, নর্দমা ব্যবস্থা, পেট্রল ফায়ারগ্রাউন্ড ও রাসায়নিক গুদাম।
বৃষ্টি ও তুষারময় পরিস্থিতিতে রোবটটিকে ন্যাভিগেট করতে কিছু অসুবিধার মুখে পড়েছিলেন গবেষকরা। তবে, এরা সফলভাবে বাতাসের নমুনা সংগ্রহ করতে পেরেছে। পাশাপাশি একটি ‘পোর্টেবল ম্যাস স্পেকট্রোমিটার (এমএস)’-এর ব্যবহার করে অনসাইট বিশ্লেষণের জন্য এদের ফিরিয়েও আনা গেছে।
আর অফ-সাইট ল্যাবে এদের নমুনা পাঠানোর প্রক্রিয়াটি বেশি দ্রুত ছিল ও বিপজ্জনক পথ থেকেও এটি প্রযুক্তিবিদদের দূরে সরিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে।
গবেষকদের দাবি, বিভিন্ন ক্ষতিকারক যৌগ শনাক্ত করার ‘স্মার্ট ও ‘নিরাপদ’ উপায় এ ‘রোবট-এমএস’ সিস্টেম। এই রোবটটি বিপজ্জনক পরিবেশে মানুষদের নিরাপদ রাখার জন্য একটি মূল্যবান হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে, যেখানে রোবটটি দক্ষতার সঙ্গে ক্ষতিকর বিভিন্ন গ্যাস পরীক্ষা করবে।