বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনোমি অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম লক্ষ্য ২০২৭ সালে মহাকাশে একজন বাংলাদেশি নভোচারী পাঠানো।
Published : 10 Jul 2024, 06:22 PM
চলছে বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ১৯তম এপেক্স অ্যাস্ট্রো-অলিম্পিয়াড-এর প্রাথমিক বাছাইপর্ব। বিভিন্ন বিভাগ ও জেলায় জেলায় ঘুরে জাতীয় প্রতিযোগীদের বাছাই করছেন এপেক্স অ্যাস্ট্রো-অলিম্পিয়াড-এর গোটা দল।
কিন্তু কীভাবে সম্ভব হচ্ছে এমন বিস্তৃত এ আয়োজন?
বুধবার ছিল রাজশাহী বিভাগের বাছাইপর্ব। সেখানেই আয়োজকদের একজন, ও বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমি অ্যাসোসিয়েশন-এর জয়েন্ট সেক্রেটারি রবিন ফকির বললেন, “আয়োজনটা একটা উৎসবের মতো। গোটা বাংলাদেশ ঘোরার যে অভিজ্ঞতা, নতুন মানুষের সঙ্গে দেখা হওয়া এটা দারুণ।”
রাজশাহীর বাছাই পর্বটি সপ্তম, এর আগে বাংলাদেশের ছয়টি জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে হয়েছে এ আয়োজন। বাকি রয়েছে খুলনা, বরিশাল ও ঢাকার মতো বিভাগীয় শহরের বাছাইপর্ব।
“বিভিন্ন শহরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মহাকাশ ও জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে যে উৎসাহ, সেটি নিজের চোখে দেখাটা মজার অভিজ্ঞতা।”-- আরও বলেন রবিন।
“এবারই প্রথম আন্তর্জাতিক অ্যাস্ট্রো-অলিম্পিয়াড বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেখানে আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অংশ নেবেন বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের এ আন্তর্জাতিক মিলন মেলা দেখার অপেক্ষায় রয়েছি।”
তার মতে, ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহী উপস্থিতি ও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহনই প্রমাণ করেছে যে আয়োজন ঠিক কতটা সফল।
“বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমি অ্যাসোসিয়েশন শেষবার এত দীর্ঘ ও বিস্তৃত পরিসরে আয়োজন করেছিল ‘মাউন্টেন ডিউ টিম এক্সট্রিম’ নামে। ওই আয়োজনের পরিকল্পনা ছিল হিমালয় জয়ের। সেটা সফলভাবে সম্পন্ন করি। ওই অভিজ্ঞতা থেকেই এবারের যাত্রা।” -- বলেছেন এবারের অ্যাস্ট্রো-অলিম্পিয়াড আয়োজক দলের আরেক সদস্য মো. ফরিদ উদ্দীন।
“এর আগে ১৮টি অনুষ্ঠান করেছি, কিন্তু স্পন্সর কম থাকায় আমরা সেগুলো ছোট পরিসরে আয়োজন করেছিলাম। এবার আমরা চেয়েছি দেশজুড়ে অ্যাস্ট্রোনমি বিষয়টা ছড়িয়ে দিতে, আমাদের গোটা টিম আয়োজনটা উৎসাহের সঙ্গেই আয়োজন করছে।”
বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনোমি অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম লক্ষ্য ২০২৭ সালে মহাকাশে একজন বাংলাদেশি নভোচারী পাঠানো। এমন আয়োজনের মধ্যে থেকেই সেই নভোচারীকে খুঁজে পাওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত বাছাইপর্বে অংশ নেন বিভাগের বিভিন্ন জেলার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।
পতাকা উত্তলন ও জাতীয় সংগীত গাওয়ার মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয় বেলা ৪টায়, এর পরপরই বাছাই পরীক্ষা শুরু হয়।
আয়োজনটির ভিডিও ডকুমেন্ট্রি তৈরির দায়িত্বে ছিলেন ফিল্ম নোয়া প্রডিউসার রেহমান সোবহান সনেট। তিনি বললেন, বাংলাদেশের বৃষ্টির মৌসুম, বর্তমান অবস্থা ছাপিয়েও প্রচুর শিক্ষার্থী ও শিশুরা অংশ নিয়েছে “যা ছিল দেখার মতো”।
ভিডিওগ্রাফি'র চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে তিনি বলেন, “কেবল একজনকে সঙ্গে নিয়ে এত বড় কাজ করাটা চ্যালেঞ্জিং হলেও শুরু করার পর মনে হয়েছে পারবো।”
“চ্যালেঞ্জিং হলেও অভিজ্ঞতাটা মজার ছিল। প্রতিটি জেলার আয়োজকদের মধ্যেও যে উচ্ছ্বাস ও আন্তরিকতা সেটিও ভালো লেগেছে।”
বিভিন্ন বিভাগ ও জেলার প্রাথমিক বাছাইপর্বে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে আগামী ৩ অগাস্ট ঢাকায় জাতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।
জাতীয় পর্বে সিনিয়র গ্রুপের ১৫ জন এবং জুনিয়র গ্রুপের ১৫ জনসহ ৩০ জনকে নিয়ে ২১ অগাস্ট থেকে ২৮ অগাস্ট পর্যন্ত আবাসিক ক্যাম্প ও চূড়ান্ত বাছাই পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।
আবাসিক ক্যাম্প থেকে নির্বাচিত পাঁচজন শিক্ষার্থী, আসন্ন ২৮তম আন্তর্জাতিক অ্যাস্ট্রো-অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।