উন্মোচন ঘনিয়ে আসছে অ্যাপলের ‘মিক্সড-রিয়ালিটি’ হেডসেটের

অ্যাপলের একশ শীর্ষস্থানীয় নির্বাহীকে পণ্যটি দেখানো হয়েছে। তবে, এটি নিয়ে কোম্পানির ভেতরেই মতপার্থক্য দেখা গেছে। অনেকে বলছেন, হেডসেটটি এখনও সম্পূর্ণ প্রস্তুত নয়।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 March 2023, 10:34 AM
Updated : 28 March 2023, 10:34 AM

নতুন ‘মিক্সড-রিয়ালিটি’ হেডসেট উন্মোচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল। তবে আসন্ন ডিভাইসটি এরইমধ্যে বিতর্কিত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

আগামী জুনে নতুন এই হেডসেট জনসম্মুখে প্রকাশ পাবে বলে উঠে এসেছে বেশ কিছু সংখ্যক প্রতিবেদনে। অ্যাপলের প্রত্যাশা, আইফোন ও ম্যাকের পর নিজেদের সংগ্রহে নতুন পণ্য শ্রেণি যোগ করার পাশাপাশি এটি নতুন এক শীর্ষ প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে।

তবে, এই প্রকল্প নিয়ে কোম্পানির ভেতরেই মতপার্থক্য দেখা গেছে। মার্কিন সংবাদপত্র ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’সহ একাধিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, অ্যাপলের বেশ কয়েকজন কর্মী যুক্তি দেখান, হেডসেটটি এখনও সম্পূর্ণ প্রস্তুত নয়। আর এখন ডিভাইসের বিদ্যমান সংস্করণ উন্মোচন করে বাজারে আনলে সেটা একটু বেশিই ঝুঁকিপূর্ণ হবে।

আসন্ন হেডসেটটি এরইমধ্যে বেশ কিছু সংখ্যক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এর দাম শুরু তিন হাজার ডলার থেকে। পাশাপাশি, এর কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যবহারও নেই। আর কেবল একটি ব্যাটারির ওপর নির্ভরতার পাশাপাশি উন্মোচনের সময় এতে সম্ভবত সীমিত ফিচার থাকবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।

কোম্পানির অভ্যন্তরীণ কয়েকজন যুক্তি দেখান, ডিভাইসের নকশা সংশ্লিষ্ট কয়েকটি চ্যালেঞ্জ সমাধানের আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করলে তা অ্যাপলের জন্য ভালো হবে। ডিভাইসের উল্লেখিত সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে এর ‘ভারী নকশা’ ও এক্সটার্নাল ব্যাটারি, যেখানে নিয়মিত চার্জ দিতে হয়।

এদিকে, ২০২৩ সালেই ডিভাইসটি উন্মোচনের লক্ষ্যস্থির করেছে অ্যাপল। ফলে, গত সপ্তাহে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে অ্যাপলের একশ শীর্ষস্থানীয় নির্বাহীর কাছে নতুন পণ্যটি দেখানো হয়। কোম্পানির ‘অন-ক্যাম্পাস’ থিয়েটারে নতুন এই ডিভাইস দেখানোর কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে মার্কিন বাণিজ্য প্রকাশনা ব্লুমবার্গ।

সর্বশেষ আয়োজনে হেডসেটের তুলনামূলক পরিশোধিত রূপ দেখেছেন নির্বাহীরা। এর আগের বিভিন্ন নমুনায় পণ্যটির তুলনামূলক অস্পষ্ট সংস্করণ প্রদর্শিত হলেও নতুন এই নমুনাকে তুলনামূলক ‘গোছানো, ঝকঝকে ও চমকপ্রদ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন ব্লুমবার্গের নির্ভরযোগ্য অ্যাপল বিশ্লেষক মার্ক গারম্যান। এর আগেও বেশ কিছু সংখ্যক অ্যাপল ডিভাইস উন্মোচনের আগে সেগুলো সম্পর্কে সঠিক তথ্য ফাঁস করেছেন তিনি।

কোম্পানির নির্বাহীরা নতুন এই হেডসেটের সঙ্গে তুলনা করেছেন অ্যাপল ওয়াচের সঙ্গে। কারণ তুলনামূলক সীমিত পণ্য নিয়ে এই ঘড়ির উন্মোচনের গতিও ধীর ছিল। পরবর্তীতে এর হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার উন্নত করার পর বিস্তৃত পরিসরে গ্রাহক ও সফটওয়্যার নির্মাতাদের গ্রহনযোগ্যতা পায় এটি।

একইভাবে অ্যাপলের নতুন হেডসেটের বিক্রি শুরু হতে পারে সীমিত পরিসরে। ইন্ডিপেন্ডেন্ট বলছে, আসন্ন মাসগুলোয় ‘মিক্সড-রিয়ালিটি’ হেডসেটের বাজারে অ্যাপলের নেতৃত্ব দেওয়া কোম্পানি হয়ে ওঠার সম্ভাবনা থাকলেও তা কেবল সম্ভব হবে বাজারে কোনো সত্যিকারের উল্লেখযোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী নেই বলে।

ডিভাইসটি উন্মোচনের প্রথম বছরে অ্যাপল ১০ লাখ হেডসেট বিক্রির আশা করছে বলে উঠে এসেছে বেশ কিছু সংখ্যক প্রতিবেদনে। এর দাম তিন হাজার ডলার হিসাব করলে, হেডসেট বিক্রি থেকে কোম্পানির সামগ্রিক আয় হবে তিনশ কোটি ডলার, যা কোম্পানির অন্যান্য বিদ্যমান পণ্যের সঙ্গে তুলনা করলে সামান্যই বলা চলে। আর ডিভাইস তৈরির খরচ হিসাব করলে এটি থেকে কোম্পানির লাভও খুবই সামান্য হবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ইন্ডিপেন্ডেন্ট।

তবে পরবর্তীতে হেডসেটের তুলনামূলক সাশ্রয়ী ও ক্ষমতাধর সংস্করণ চালুর বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে অ্যাপল।