টানা ১২ ইনিংসে ফিফটি নেই মুশফিকুর রহিমের, কিন্তু সামনে তিনি আগের চেয়ে ভালো খেলবেন বলে মনে করেন মুমিনুল হক।
Published : 22 Apr 2025, 08:11 PM
ব্লেসিং মুজারাবানির অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বলে খোঁচা দিয়ে বসলেন মুশফিকুর রহিম। প্রথম স্লিপে সহজ ক্যাচ পেয়ে গেলেন ক্রেইগ আরভাইন। মাথা নিচু করে ধীর পায়ে হাঁটা শুরু করলেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। ক্রিজ থেকে ডাগ আউটের পথটুকু তার জন্য তখন যেন হাজার মাইলের দূরত্ব!
একই চিত্র দেখা যায় ম্যাচের প্রথম ইনিংসেও। ওয়েলিংটন মাসাকাদজার সাদামাটা এক শর্ট বলে ক্যাচ দেওয়ার পর যেন আর ড্রেসিং রুমে ফিরতে চাইছিলেন না মুশফিক। মিল শুধু এখানেই শেষ নয়। দুই ইনিংসেই তিনি আউট হন ৪ রান করে। ব্যর্থতার এই ধারা অবশ্য লম্বা সময় ধরেই চলমান। তবে তার ওপর পূর্ণ আস্থা রাখছেন আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক।
গত বছর রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে চাপের মুখে ১৯১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছিলেন মুশফিকুর রহিম। এরপর থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রান করতেই যেন ভুলে গেছেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে টানা ১২ ইনিংসে ৪০ ছুঁতে পারেননি তিনি।
সবশেষ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিসহ টানা সাত ইনিংসে দুই অঙ্কই ছুঁতে পারেননি মুশফিক। পাকিস্তান ও দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত আইসিসি টুর্নামেন্টে ব্যর্থতার পর দেশে ফিরে ওয়ানডে থেকে অবসরই নিয়ে ফেলেন সাবেক এই অধিনায়ক।
এবার ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের মতো দলের বিপক্ষে রান না পাওয়ায় প্রশ্ন উঠছে দলে তার জায়গা নিয়েই।
মুমিনুলের মনে অবশ্য সেই প্রশ্ন নেই। সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে ফর্ম নিয়ে প্রশ্নে জাতীয় দলের হয়ে মুশফিকের যাবতীয় অবদানের কথা মনে করিয়ে দিলেন তিনি।
“তাকে (মুশফিক) নিয়ে আমি কোনোভাবে চিন্তিত নই। দীর্ঘদিন তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন, জানেন কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে, কীভাবে রান করতে হবে। সবার যে জিনিসটা ভুলে যাওয়া উচিত না, তিনি বাংলাদেশ দলের জন্য কী করেছেন। তার রান কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কতটুকু কী করতে পারেন। আর তিনি যখনই খেলেন, ম্যারাথন ইনিংস খেলেন। এত তাড়াতাড়ি কোনো কিছু ভুলে যাওয়া উচিত না।”
টি-টোয়েন্টি থেকে ২০২২ সালে অবসর নিয়েছেন মুশফিক। চলতি বছর ওয়ানডেকেও বিদায় বলে দেওয়ায় এখন শুধু টেস্টেই জাতীয় দলে দেখা যায় তাকে। এই সংস্করণে বড় এক কীর্তির সামনে দাঁড়িয়ে ৩৮ ছুঁইছুঁই ব্যাটসম্যান।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিলেট টেস্টটি মুশফিকের ক্যারিয়ারের ৯৫তম। আগেই বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলার রেকর্ড গড়া ব্যাটসম্যানের সামনে দেশের ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলার হাতছানি। কিন্তু বয়স ও সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় দলে মুশফিকের জায়গা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
তবে মুমিনুলের ভাবনা এখানে উল্টো। মুশফিকের অনেক আগে থেকেই শুধু এক সংস্করণে খেলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই হয়তো মুমিনুলের বিশ্বাস, এখন থেকে আরও ভালো খেলবেন মুশফিক।
“আমার মনে হয় তিনি এখন আরও ভালোভাবে টেস্ট ক্রিকেট খেলতে পারবেন। যেহেতু দুটি সংস্করণ থেকে অবসর নিয়েছেন। এখন একটা সংস্করণে মনোযোগ দেবেন। এজন্য মনে হয় আগের চেয়ে আরও ভালো খেলতে পারবেন। একটা সংস্করণ যখন খেলবেন, একটা ধারায় থাকবেন। তখন পারফর্ম করাটা সহজ হয়ে যায়।”