টুইটারের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীর ‘শনাক্তকরণ তথ্য সৌদি আরব সরকারকে সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে, যা নিশ্চিতভাবেই প্ল্যাটফর্মের শর্তাবলীর লঙ্ঘন।
Published : 20 May 2023, 04:53 PM
সৌদি আরবে ভিন্নমত প্রকাশ করা এক নাগরিককে জেলে পাঠাতে সহায়তার অভিযোগে মামলা হয়েছে সামাজিক প্ল্যাটফর্ম টুইটারের বিরুদ্ধে।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে সৌদির ‘ক্রাউন প্রিন্স’ মোহাম্মদ বিন সালমানের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন সাবেক টুইটার কর্মী আহমদ আবুয়াম্মো। এর আগে সৌদি আরবের সমালোচনা করা টুইটার অ্যাকাউন্ট পরিচালনার অভিযোগ ওঠে আব্দুল রহমান আল-সাধান নামের এক নাগরিকের বিরুদ্ধে। আর পরবর্তীতে তাকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট এনগ্যাজেট।
এখন প্ল্যাটফর্মের কর্মীর সহায়তায় ওই সৌদি নাগরিকের পরিচয় প্রকাশের অভিযোগে টুইটারের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তার বোন আরিজ আল-সাধান।
‘র্যাকেটিয়ার ইনফ্লুয়েন্সড অ্যান্ড করাপ্ট অর্গানাইজেশনস (রিকো)’ নামে পরিচিত আইনের অধীনে নিজের ও নিজের ভাইয়ের পক্ষে এই অভিযোগ দায়ের করেন আরিজ।
জঙ্গিবাদে সমর্থনের অভিযোগ তুলে তার ভাই আব্দুল রহমানকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন
সাবেক টুইটার কর্মী ছিলেন ‘সৌদি স্পাই’
নিজের অভিযোগে আরিজ টুইটারের বিরুদ্ধে তার ভাইয়ের ‘শনাক্তকরণ তথ্য সৌদি আরব সরকারকে সরবরাহের অভিযোগ তোলেন, যা নিশ্চিতভাবেই প্ল্যাটফর্মের শর্তাবলী লঙ্ঘন করে।
“এটা প্রত্যেক টুইটার ব্যবহারকারীকেই ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। ফলে, সৌদি আরব আমার ভাইকে অপহরণ করেছে, নির্যাতন করেছে, কারারুদ্ধ করেছে ও একটি ভুয়া বিচারের মাধ্যমে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। তাও কেবল নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে সৌদি নিপীড়নের সমালোচনা করায়।” --যোগ করেন তিনি।
সৌদি সরকার স্পষ্টভাবেই আবদুল রহমানের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছে। আর তিনি এখনও বেঁচে আছেন কি না, সে সম্পর্কেও কোন ধারণা নেই বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে এনগ্যাজেট।
মামলার নথি অনুসারে, ২০১৫ সালে ৩০ হাজার আটশ ৯২বার টুইটার ব্যবহারকারীর গোপনীয় ডেটায় প্রবেশ করেন আবুয়াম্মো ও সামাজিক প্ল্যাটফর্মটির আরেক সাবেক কর্মী আলি আলজাবারা।
পরবর্তীতে তারা ছয় হাজার টুইটার ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্টের তথ্য শনাক্ত করে সৌদি আরবের কাছে সরবরাহ করেন। এর মধ্যে ছিল ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট সংশ্লিষ্ট নাম, জন্মতারিখ, ডিভাইস শনাক্তকারী তথ্য, ফোন নাম্বার, আইপি ঠিকানা ও আইপি হিস্ট্রি’র মতো স্পর্শকাতর তথ্য।
এনগ্যাজেট বলছে, টুইটার হয়ত এটি বলে আত্মরক্ষার প্রচেষ্টা চালাবে যে তারা সৌদির গুপ্তচরবৃত্তির কার্যক্রমে অনুমোদন দেয়নি বা এই বিষয়ে অবহিত ছিল না।
তবে, মামলা অনুসারে, ২০১৫ সালের শেষ দিকে সৌদি আরবের ব্যবহারকারীর তথ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে কোম্পানিকে সতর্ক করেছিল বিভিন্ন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা।
মামলায় আরও উল্লেখ রয়েছে, এই সতর্কতার ছয় মাস পর (সৌদি আরবের) ক্ষতিকারক ও অপরাধমূলক কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা থাকার পরও মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে দেখা করেন তৎকালীন টুইটার প্রধান জ্যাক ডরসি।