‘কঠিন বছরেও’ ব্যাংক এশিয়ার ১৫% নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা

পুঁজিবাজারে লেনদেন হওয়া ৩৪টি ব্যাংকের মধ্যে ২০২২ সালের জন্য এই প্রথম লভ্যাংশের ঘোষণা এল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2023, 03:03 PM
Updated : 18 March 2023, 03:03 PM

ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা আর দেশে দেশে ব্যাপক মূল্যস্ফীতিতে চাপের বছরেও আগের বছরের চেয়ে আয় বাড়ানোর ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক এশিয়া।

গত ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরের হিসাব পর্যালোচনা করে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৫ শতাংশ নগদ অর্থাৎ শেয়ারপ্রতি দেড় টাকা লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে বেসরকারি ব্যাংকটি।

শনিবার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয় বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন ব্যাংকটির ইনভেস্টরস রিলেশনস বিভাগের কর্মকর্তা মনজুর মোর্শেদ ভুঁইয়া।

পুঁজিবাজারে লেনদেন হওয়া ৩৪টি ব্যাংকের মধ্যে ২০২২ সালের জন্য এই প্রথম লভ্যাংশের ঘোষণা এল। এর আগে কয়েকটি বিমা কোম্পানি এবং বহুজাতিক কোম্পানি লভ্যাংশ ঘোষণা করে।

নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে ব্যাংক এশিয়া শেয়ারপ্রতি আয় করেছে ২ টাকা ৬২ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ২ টাকা ৩৪ পয়সা।

অর্থাৎ ইপিএস বেড়েছে ২৮ পয়সা বা ১১ দশমিক ৯৬ শতাংশ।

ব্যাংকটি এবার কর পরবর্তী মুনাফা করেছে ৩০৫ কোটি টাকার বেশি। আগের বছর যা ছিল ২৭২ কোটি ৮২ লাখ টাকা।

এ নিয়ে পরপর চার বছর আয় বাড়ল ব্যাংকটির। ২০১৯ সালে শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৬৮ পয়সা, পরের বছর ১ টাকা ৭৪ পয়সা আয় করেছিল ব্যাংকটি।

তবে গত সেপ্টেম্বরে তৃতীয় প্রান্তিক শেষে যে আয় দেখিয়েছিল ব্যাংকটি চতুর্থ প্রান্তিক শেষে তা কমে গেছে। তৃতীয় প্রান্তিক শেষে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ২ টাকা ৬৪ পয়সা। শেষ তিন মাসে ঋণের বিপরীতে সঞ্চিতি নিশ্চিত করতে গিয়ে সেখান থেকে শেয়ারপ্রতি ২ পয়সা আয় কমেছে।

২০০৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকটি গত কয়েক বছর ধরে নগদ লভ্যাংশে জোর দিচ্ছে। ২০১৮ সালে ৫ শতাংশ বোনাসের সঙ্গে সমপরিমাণ নগদ, পরের দুই বছর ১০ শতাংশ করে নগদ এবং ২০২১ সালের জন্য ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ বিতরণ করেছে ব্যাংকটি।

আয়ের পাশাপাশি কোম্পানির শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য বা এনএভিও বেড়েছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষে তা ছিল ২৩ টাকা ৩৩ পয়সা। গত ডিসেম্বরে যা দাঁড়িয়েছে ২৪ টাকা ৪১ পয়সা।

যারা ব্যাংক এশিয়ার শেয়ারে লভ্যাংশ নিতে চান, তাদেরকে আগামী ৬ এপ্রিল পর্যন্ত শেয়ার ধরে রাখতে হবে। অর্থাৎ লভ্যাংশ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট হবে সেদিন। এ লভ্যাংশ অনুমোদন করতে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ডাকা হয়েছে আগামী ৩০ এপ্রিল।

গত তিন বছর ধরে ব্যাংকে আমানতের সুদহার ছিল সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ। কিন্তু গত বছর ব্যাংক এশিয়ার বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড ইল্ড ছিল ৬.৮৮ শতাংশ। অর্থাৎ শেয়ারদরের তুলনায় নগদ লভ্যাংশ ছিল এ হারে।

কোনো কোনো ব্যাংকের ক্ষেত্রে গত পাঁচ বছর ডিভিডেন্ড ইল্ডের গড় দেখা গেছে ৮ বা ৯ বা ১০ শতাংশ কিংবা এর চেয়ে বেশি।

ব্যাংক এশিয়ার শেয়ারদর এখন বেঁধে দেওয়া সর্বনিম্ন মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস ২০ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হচ্ছে। গত ছয় মাসে শুধু দুই দিন এ থেকে বেশি দরে হাতবদল হয়েছে শেয়ার।

এর মধ্যে গত ১৯ অক্টোবর ফ্লোর থেকে ২০ পয়সা এবং ৭ মার্চ ৪০ পয়সা বাড়লেও পরের দিনই তা ফ্লোরে ফিরে আসে।