আরো তিন কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস উঠল, রইল বাকি ৯

বাকি থাকা ৯ কোম্পানির মধ্যে বিএটিবিসি, জিপি ও রবির ফ্লোর প্রাইস আগামী রেকর্ড ডেট পর্যন্ত বহাল থাকবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Feb 2024, 02:44 PM
Updated : 6 Feb 2024, 02:44 PM

শেয়ারবাজারে তৃতীয় ধাপে আরও তিন কোম্পানির শেয়ারের বেঁধে দেওয়া সর্বনিম্ন দর বা ‘ফ্লোর প্রাইস’ তুলে নেওয়া হয়েছে।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন মঙ্গলবার জানিয়েছে, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, ওরিয়ন ফার্মা ও রেনাটা বুধবার থেকে স্বাভাবিক লেনদেনে ফিরবে। তবে প্রতিটি শেয়ারের দামের ক্ষেত্রে আগের নিয়মে সার্কিট ব্রেকার বা মূল্যসীমা কার্যকর হবে।

তিন কোম্পানির শেয়ারে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করায় এখন নয়টি কোম্পানির শেয়ার দরে সর্বনিম্ন সীমা বহাল থাকল।

এই নয় কোম্পানি হল– বেক্সিমকো, বিএসআরএম, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, মেঘনা পেট্টোলিয়াম ও বিদ্যুৎ খাতের দুই কোম্পানি খুলনা পাওয়ার কোম্পানি (কেপিসিএল) ও শাহজী বাজার পাওয়ার (এসপিসিএল), তামাক কোম্পানি বিএটিবিসি (ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড), টেলিকম খাতের গ্রামীণ ফোন ও রবি।

বিএসইসি জানিয়েছে, এই নয় কোম্পানির মধ্যে বহুজাতিক কোম্পানি বিএটিবিসি, জিপি ও রবির ফ্লোর প্রাইস আগামী রেকর্ড ডেট পর্যন্ত বহাল থাকবে। রেকর্ড ডেটের পর এই তিন কোম্পানির শেয়ারও সাধারণ নিয়মে লেনদেন হবে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির রেকর্ড ডেট মানে হল, ওই তারিখ পর্যন্ত যার কাছে শেয়ার থাকবে তিনিই হিসাব বছর শেষে লভ্যাংশ পাবেন।

কোনো কোম্পানির শেয়ার থেকে লভ্যাংশ পেতে হলে কোম্পানি ঘোষিত রেকর্ড ডেট পর্যন্ত শেয়ার ধরে রাখতে হয়। রেকর্ড ডেট ঘোষণার দিনে ওই শেয়ারের লেনদেন হয় না পুঁজিবাজারে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুযায়ী, হিসাব বছর শেষ হওয়ায় এ তিন কোম্পানির রেকর্ড ডেট হতে পারে আগামী মার্চের প্রথম সপ্তাহে।

করোনাভাইরাস মহামারীর সময় শেয়ারদর ক্রমশ কমতে থাকায় ২০২০ সালের ১৯ মার্চ বাংলাদেশে পুঁজিবাজারে প্রথমবারের মত ফ্লোরপ্রাইস বেঁধে দেওয়া হয়।

ওই বছরের জুন থেকে প্রথমে বীমা খাত ও পরে আরো কিছু খাতের শেয়ারদর বাড়তে থাকলে ধাপে ধাপে ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে ফ্লোর প্রাইস তুলে নিয়েছিল কমিশন।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষে ইউক্রেইনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর আতঙ্কে আবার পুঁজিবাজারে দরপতন শুরু হলে দ্বিতীয়বারের মত ফ্লোর প্রাইস দেওয়া হয় ২৮ জুলাই।

ফ্লোর প্রাইস ঠিক করে দিলে লেনদেনে ওই শেয়ারের দর বেঁধে দেওয়া দামের নিচে নামতে পারে না।

বিনিয়োগকারীদের একাংশের দাবির মুখে একই বছরের ডিসেম্বরে ১৬৯ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে শেয়ারের দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ১ শতাংশ বেঁধে দেওয়া হয়। এরপর এমন কোম্পানিও দেখা যায়, তার দর টানা ৪০ কর্মদিবস এক শতাংশের কাছাকাছি কমেছে। পরে ২০২৩ সালের মার্চে আবার এসব কোম্পানিতে সর্বনিম্ন দর বেঁধে দেওয়া হয়।

এরপর থেকে সূচক মোটামুটি একটি বৃত্তে ঘুরপাক খেলেও শেয়ারের লেনদেন একেবারেই কমে আসে। প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা অর্ডার বসিয়ে শেয়ার বিক্রি করতে পারছিলেন না। লেনদেনও কমে আসে অনেকটাই।

ওই অবস্থায় ফ্লোর তুলে স্টক ব্রোকার অ্যাসোসিয়েশনসহ বড় বিনিয়োগকারীরা ফ্লোর তুলে দেওয়ার অনুরোধ জানায় বিএসইসিকে। তবে নির্বাচনের আগ পর্যন্ত কোনো ‘ঝুঁকি’ নিতে চায়নি বিএসইসি।

শেষ পর্যন্ত গত ১৮ জানুয়ারি ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। প্রথম দফায় ৩৫৭টি কোম্পানির শেয়ারদরের সর্বনিম্ন সীমা তুলে নেওয়া হয়। বাকি ৩৫টি কোম্পানির মধ্যে দ্বিতীয় ধাপে ২৩টির সীমা তুলে নেওয়া হয় ২২ জানুয়ারি। তারপর থেকে ১২টি কোম্পানি সর্বনিম্ন দরে লেনদেন করে আসছিল।

দ্বিতীয় দফায় ২৩ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার পর দুই সপ্তাহে পুঁজিবাজারে রেকর্ড পরিমাণ লেনদেন হয় একাধিক দিন। সোম ও মঙ্গলবার দুই দিনই ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৬৫০ কোটি টাকার উপরে।