দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ কোম্পানির সবগুলোই স্বল্প মূলধনি। এর মধ্যে পাঁচটি কোম্পানি লোকসানি। চারটি কোম্পানি লভ্যাংশ দিচ্ছে না কয়েক বছর ধরে।
Published : 12 Sep 2024, 06:18 PM
ছয় কর্মদিবস পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ, ডিএসইর লেনদেন ৭০০ কোটি টাকা ছাড়াল। স্বল্প মূলধনি লোকসানি কোম্পানির দাপটের দিন সূচকও বাড়ল কিছুটা।
টানা ছয় কর্মদিবস পতনের পর সবশেষ তিন দিনে টানা সূচক বাড়তে দেখলেও বিনিয়োগকারীরা খুশি হতে পারেনি। কারণ, যতগুলো কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে, কমেছে তার চেয়ে বেশি।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার হাতবদল হওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৮১টির, কমেছে ১৫৮টির, আগের দিনের দরে হাতবদল হয়েছে ৫৮টি কোম্পানি।
বেশিরভাগ কোম্পানির দর কমলেও বড় মূলধনি ও বহুজাতিক কোম্পানির ওপর ভর করে দিন শেষে সূচকে যোগ হয়েছে ১২ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট। এদিন প্রধান সূচক এগিয়েছে ওঠা-নামার মধ্য দিয়ে।
এ নিয়ে তিন দিনে সূচক বাড়ল ৯৬ পয়েন্ট। আগের ছয় দিনে সূচক পড়েছিল ১৯৯ পয়েন্ট।
দিন শেষে ৭৩৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যা আগের দিনের তুলনায় ১০৮ কোটি টাকা বেশি। বুধবার হাতবদল হয়েছিল ৬২৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা।
ডিএসইর লেনদেন তথ্য অনুযায়ী, একক খাত হিসেবে মোট লেনদেনে সবচেয়ে বেশি ২১ দশমিক ৪৫ শতাংশ অবদান রাখে ওষুধ ও রসায়ন খাত। ব্যাংক খাত দ্বিতীয় অবস্থানে থেকে অবদান রেখেছে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে থাকা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের অবদান ছিল ১০ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
ডিএসইর প্রধান সূচকের সঙ্গে শরীয়াহ সূচক ডিএসইএস আগের দিনের চেয়ে ৪ পয়েন্ট বেড়েছে। তবে সেরা ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস৩০ সূচক কমেছে ৭ পয়েন্ট।
দাপট লোকসানি ও স্বল্প মূলধনি কোম্পানির
এদিন বাজারে স্বল্প মূলধনি লোকসানি কোম্পানির দাপট দেখা গেছে। দর বৃদ্ধির শীর্ষে থাকা বেশিরভাগ কোম্পানিই এই ধরনের।
বৃদ্ধিতে শীর্ষ ১০টি কোম্পানির সবগুলোই স্বল্প মূলধনি। এর মধ্যে ৫টি লোকসানি কোম্পানি। এগুলোর মধ্যে অনেকগুলো বছরের পর বছর ধরে লভ্যাংশ দিতে পারছে না।
সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ দর বেড়েছে লোকসানি ও বন্ধ কোম্পানি আর এন স্পিনিং মিলসের। সার্কিট ব্রেকার ছুঁয়ে ১০ শতাংশ বেড়েছে শেয়ারদর।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা নর্দান জুটের দর বেড়েছে ৯.৯৯ শতাংশ। এর চেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া সম্ভব ছিল না কোম্পানিটির। এটিও লোকসানি এবং বন্ধ কোম্পানি। দীর্ঘদিন ধরে আয় ব্যয়ের হিসাবও দিচ্ছে না পরিচালনা পর্ষদ।
তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থানে থাকা পেপার প্রসেসিং, রহিমা ফুড. সোনালী পেপার ও মনোস্পুল পেপার স্বল্প মূলধনি কোম্পানি। এগুলোর দরও সার্কিট ব্রেকার ছুঁয়ে বেড়েছে। এগুলোর লভ্যাংশের ইতিহাস ভালো নয়। কিন্তু শেয়ারদর প্রায়ই উঠানামা করে।
সপ্তম থেকে নবম স্থানে থাকা তিনটি কোম্পানিই লোকসানি। এর মধ্যে এপেক্স ট্যানারির দর সার্কিট ব্রেকারের কাছাকাছি ৯.৭১ শতাংশ বেড়েছে।
জুট স্পিনার্স ও ন্যাশনাল টি কোম্পানির শেয়ারদর দুইশ টাকার বেশি হওয়ায় এগুলোর দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ৮.৭৫ শতাংশ, এর কাছাকাছিই বেড়েছে দর।
দশম স্থানে থাকা ওরিয়ন ইনফিউশনও স্বল্প মূলধনি কোম্পানি। দুই বছর আগে শেয়ারদর ৭০ টাকা থেকে বেড়ে এক হাজার টাকা ছুঁয়ে ফেলেছিল। এখন প্রায়ই উঠানামার মধ্যে থাকে। ৮.৭২ শতাংশ বেড়ে এখন শেয়ারদর স্থির হয়েছে ৩৭৯ টাকা ৯০ পয়সায়।
আগের দিনের মতই দরপতনের শীর্ষে ছিল কনফিডেন্স সিমেন্ট। আগের দিনের চেয়ে ৬.৮২ শতাংশ কমেছে শেয়ারের দর।
শেয়ারপ্রতি ৮ টাকার বেশি মুনাফা করে এক টাকা লভ্যাংশ ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় দুই দিন ধরে কোম্পানিটি দর হারাচ্ছে।
সিএপিএম আইবিবিএল মিউচুয়াল ফান্ড, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, উত্তরা ফাইন্যান্স, ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, তাল্লু স্পিনিং মিলস, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, রিজেন্ট টেক্সটাইলস, ইনটেক অনলাইন ও ফিনিক্স ফাইন্যান্স ছিল এই তালিকায়। এসব কোম্পানির শেয়ারদর ৩.৮৪ শতাংশ থেকে ৬.৬৬ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।