পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচটি কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অসঙ্গতি খুঁজে পয়েছে তাদের নিরীক্ষক।
Published : 22 Nov 2020, 08:43 PM
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়বসাইটে রোববার এ তথ্য জানানো হয়।
কোম্পানিগুলো হল- জুট স্পিনার্স লিমিটেড, উসমানিয়া গ্লাস শিট ফ্যাক্টরি লিমিটেড, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, আরামিট লিমিটেড ও সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।
জুট স্পিনার্স লিমিটেড
পাট খাতে তালিকাভুক্ত জুট স্পিনার্স লিমিটেডের ৩০ জুন ২০২০ সময়ে শেষ হওয়া হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষা করে নিরীক্ষক বলেছে, এ কোম্পানি ‘যে কোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে’।
গত কয়েক বছরে জুট স্পিনার্স লিমিটেডের প্রায় ৬১ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। সম্পদ আছে মাত্র ২৯ কোটি টাকার। দায় জমেছে ৬১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।
ওই দায় ফেরত দেওয়ার ক্ষমতা জুট স্পিনার্স লিমিটেডের নেই বলে মনে করেছেন নিরীক্ষ।
তাছাড়া পাওনা টাকার জন্য জনতা ব্যাংক এবং বিদ্যুত্ সরবরাহকারী কোম্পানি জুট স্পিনার্স লিমিটেডের বিপক্ষে মামলা করতে পারে। সব মিলিয়ে এ কোম্পানি ঝুঁকিতে আছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে নিরীক্ষা প্রতিবেদনে।
নিরীক্ষক বলছে, জুট স্পিনার্স লিমিটেড তাদের আর্থিক প্রতিবেদনে যেসব সম্পদ দখিয়েছে, সেগুলো বাস্তবে নাও থাকতে পারে এবং থাকলেও এর দাম অনেক কম হবে।
উসমানিয়া গ্লাস শিট ফ্যাক্টরি লিমিটেড
বিবিধ খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি উসমানিয়া গ্লাস শিট ফ্যাক্টরি লিমিটেডের ৩০ জুন ২০২০ সময়ের আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষা করতে গিয়ে অসঙ্গতি খুঁজে পয়েছে তাদের নিরীক্ষক।
নিরীক্ষক বলেছে এ কারখানার বড় অংশের কার্যক্রম বন্ধ। বড় ধরনের পরিবর্তন না আনলে সেই কারখানা চালু করা যাবে না। তাছাড়া তাদের প্রযুক্তিও অনেক পুরোনো। এই প্রযুক্তি দিয়ে পণ্য উত্পাদন করে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা সম্ভব নয়।
যদিও উসমানিয়া গ্লাস শিট ফ্যাক্টরি নতুন পণ্য উত্পাদনের চেষ্টা করছে, কিন্তু কাজ যে গতিতে এগোচ্ছে তাতে নতুন পণ্যের আলোর মুখ দেখা অনেক সময়ের ব্যাপার। সে কারণে এ কোম্পানি যে কোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে মনে করছে নিরীক্ষক।
সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড
বস্ত্র খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন ২০২০ সময়ের আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষা করে নিরীক্ষক বলেছে, এ কোম্পানি তাদের সম্পদের হিসাব ঠিক মত দেখায়নি।
ডিএসইতে দেওয়া নোটিসে বলা হয়েছে, যে সম্পদ সিমটেক্স দেখিয়েছে, তা পরিমাপ করার জন্য যথেষ্ট তথ্য নিরীক্ষক পায়নি। তাছাড়া ২০১৭ সালে নেওয়া ঋণ তারা ২০২০ সালে দেখিয়েছে।
আরামিট লিমিটেড
বিবিধ খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি আরামিট লিমিটেডের ৩০ জুন ২০২০ সময়ের আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষা করে অসঙ্গতি পেয়েছে তাদের নিরীক্ষক।
নিরীক্ষক বলেছে, আরামিট লিমিটেড ১২ কোটি ৬৮ লাখ টাকার একটি বিনিয়োগ তাদের আর্থিক প্রতিবেদনে দেখিয়েছে, কিন্তু বিনিয়োগ দেখানোর ক্ষেত্রে সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করেনি।
সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড
ওষুধ খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ৩০ জুন ২০২০ সময়ের আর্থিক প্রতিবেদনে মুনাফা বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে।
নিরীক্ষক বলেছে, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের কাছে সরকার প্রায় ৯ কোটি টাকার কর পায়। ওই টাকা না দেওয়ায় তাদের ৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তারা এখন নগদে লেনদেন করছে। কয়েক বছর কর না দিয়ে কোম্পানির মুনাফা ও সম্পদ বাড়িয়ে দেখানো আছে।
মজুদ পণ্যের হিসাব রাখতে এ কোম্পানি ‘বড় ধরেনে গড়মিল’ করেছে বলেও মনে করছে নিরীক্ষক।
ডিএসইর নোটিসে বলা হয়েছে, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের আর্থিক প্রতিবেদনে যে মজুদ পণ্য দেখানো হচ্ছে, তার সত্যতা যাচাই করা যায়নি।