পুঁজিবাজারে আতঙ্কের কারণ খুঁজতে তদন্ত কমিটি

বাংলাদেশের পুঁবিাজারের ‘অস্বাভাবিক’ দরপতনের কারণ খুঁজতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিএসইসি।

ফারহান ফেরদৌসআবদুর রহিম হারমাছি ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 July 2019, 04:27 PM
Updated : 21 July 2019, 04:29 PM

চার সদস্যের এই কমিটির প্রধান করা হয়েছে বিএসইসির পরিচালক রেজাউল করিমকে। তিন জন সদস্য হলেন, বিএসইসির উপ-পরিচালক অহিদুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম এবং রাকিবুর রহমান। ১৫ দিনের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

ঢাকার পুঁজিবাজারে গত ছয় মাসে প্রধান সূচক কমেছে ৯০০ পয়েন্টের বেশি।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, আতঙ্কের কারণেই দরপতন। এই আতঙ্ক দূর করতে না পারলে বাজারে পতন ঠেকানো যাবে না।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সাইফুর রহমান রোববার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে পুঁজিবাজারে অস্বাভাবিক দরপতন হচ্ছে। এই পতনের কারন অনুসন্ধানের জন্যই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বিনিয়োগকারীদের স্বার্থেই এই কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

বেশ কিছুদিন ধরেই পুঁজিবাজারে মন্দা চলছে। গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর থেকে বাজারে ইতিবাচক ধারা লক্ষ্য করা যায়।

সে সময় প্রায় প্রতি দিনই সূচক বাড়ে দুই বাজারে। লেনদেনও বেড়ে এক হাজার ৩০০ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকে।

চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত সেই চাঙ্গাভাব অব্যাহত ছিল। এরপর থেকেই বাজারে খারাপ হতে থাকে।

প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২৪ জানুয়ারি ডিএসই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৫৯৫০ পয়েন্ট।

রোববার সেই সূচক কমতে কমতে ৫০৩৪ পয়েন্টে নেমে এসেছে। লেনদেন নেমে এসেছে ৩০০ কোটি টাকার ঘরে।

বিএসইসি বেশ কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। নতুন বাজেটেও কিছু ভালো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কিন্তু বাজারে দরপতন থামছে না।

রোববারও ডিএসইএক্স প্রায় ১০০ পয়েন্ট পড়েছে। চট্টগ্রামের প্রধান সূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩০০ পয়েন্টের বেশি।

সব খাতের শেয়ারের দরই পড়ে যাচ্ছে। ছোট বিনিয়োগকারীরা ফের রাস্তায় নেমেছে। মিছিল-মানববন্ধন করছে। বৃহস্পতিবার তারা ১৫ দফা দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে।

বাজার বিশ্লেষক ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি শাকিল রিজভী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা নেই। এক ধরনের অস্থিরতা চলছে। আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সেই আতঙ্কে নতুন কেউ শেয়ার কিনছে না। যাদের আছে তারা বিক্রি করে দিচ্ছে। সেই বিক্রির চাপে পতন হচ্ছে বাজারে।

“তবে আমার মনে হচ্ছে, বাজার অনেক পড়ে গেছে। সব শেয়ারের দামই অনেক নীচে নেমে এসেছে। এখন কেনার চাপ বাড়বে। বাজার ভালো হবে।”

বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজানুর রশীদ চৌধুরী বলেন, “বাজারে টানা পতন হচ্ছে। কেউ কিছু করছে না। বৃহস্পতিবার আমরা বাজারের পতন ঠেকাতে ১৫ দফা দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। কয়দিন দেখবো; সরকারের পক্ষ যদি কোন ব্যবস্থা নেয়া না হয় তাহলে আমরা ফের রাস্তায় নামবো।”