ঘরের মাঠে এই নিয়ে লিগে সবশেষ ১৪ ম্যাচের সবকটিই জিতল অ্যাস্টন ভিলা।
Published : 07 Dec 2023, 03:18 AM
চেনা পরিবেশে সত্যিই যেন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে অ্যাস্টন ভিলা। তাদের দাপুটে ফুটবলের সামনে পুরোটা সময় কোণঠাসা হয়ে রইল ম্যানচেস্টার সিটি। নিজেদের ছায়া হয়ে থাকা পেপ গুয়ার্দিওলার দলকে হারিয়ে লিগ টেবিলে একধাপ উপরে উঠল অ্যাস্টন।
ভিলা পার্কে বুধবার রাতে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচটি ১-০ গোলে জিতেছে অ্যাস্টন। দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের ব্যবধান গড়ে দেওয়া গোলটি করেন লেওন বেইলি।
স্কোরলাইন দেখে অবশ্য বোঝার উপায় নেই ম্যাচ কতটা আধিপত্য করেছে অ্যাস্টন। সিটিকে তো চেনাই যায়নি। ম্যাচজুড়ে আক্রমণের ঢেউ তুলেছে স্বাগতিকরা, আর সিটি কেবল তার সামনে টিকে থাকার চেষ্টাই করে গেছে।
ঘরের মাঠে এই নিয়ে সবশেষ ১৪ ম্যাচের সবকটিই জিতল অ্যাস্টন ভিলা।
১৫ ম্যাচে ১০ জয় ও ২ ড্রয়ে ৩২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে অ্যাস্টন।
টানা তিন ড্রয়ে সিটির অবস্থা এমনিতেই কিছুটা নাজুক হয়ে পড়েছে। সেখানে যোগ হলো এই পরাজয়। ৯ জয় ও ৩ ড্রয়ে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে আছে তারা।
অ্যাস্টন নিজেদের আঙিনায় কতটা ভয়ঙ্কর, তার ইঙ্গিত মেলে ম্যাচের শুরুতেই। তৃতীয় মিনিটেই সিটির রক্ষণে ভীতি ছড়ায় তারা। পরের চার মিনিটে তৈরি করে দারুণ দুটি সুযোগও।
এদেরসনকে যদিও পরাস্ত করতে পারেনি দলটি। ডি-বক্সে ঢুকে লেওন বেইলির কাছের পোস্টে নেওয়া শট ফেরানোর পর পাও তরেসের শটও দারুণ নৈপুণ্যে ঠেকিয়ে দেন ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক।
একাদশ মিনিটে প্রথম উল্লেখযোগ্য আক্রমণ শাণাতে পারে সিটি। মুহূর্তের ব্যবধানে দুবার দলকে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ পান হলান্ড; কিন্তু তিনিও পারেননি শেষ বাধা পেরোতে।
প্রথমবার তার শট ঝাঁপিয়ে ফেরালেও পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি এমিলিয়ানো মার্তিনেস। সতীর্থের পা ঘুরে গোলমুখে ফের বল পেয়ে হেড করেন হলান্ড, ঠিক সময়ে পজিশন নিয়ে গোললাইন থেকে ফেরান আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক।
২৩তম মিনিটে আবারও এদেরসনের দৃঢ়তায় রক্ষা পায় সিটি। ডি-বক্সের অনেকটা বাইরে থেকে জন ম্যাকগিনের জোরাল শট রুখে দেন তিনি। ৩১তম মিনিটে আবারও অ্যাস্টনের আক্রমণ, এবার বেইলির শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। বেঁচে যায় সিটি।
প্রথম ৪৫ মিনিটে একের পর আক্রমণে প্রতিপক্ষকে ব্যতিব্যস্ত রেখে অ্যাস্টন গোলের উদ্দেশ্যে ১৩টি শট নেয়, যার চারটি ছিল লক্ষ্যে। বিপরীতে সিটির প্রচেষ্টা হলান্ডের ওই দুটিই।
আক্রমণের ঝড় তুলে চেলসিকে হারাল ইউনাইটেড
বিরতির পর বেশি সময় পজেশন রেখে আক্রমণের চেষ্টা করতে থাকে সিটি। তাদের আক্রমণগুলো যদিও তেমন ধারাল হচ্ছিল না। উল্টো ৬৪তম মিনিটে বিপদে পড়তে পারত তারা; কিন্তু ডি-বক্সে দারুণ পজিশনে থেকেও লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন ম্যাকগিন।
চাপ ধরে রেখেই ৭৪তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোল পেয়ে যায় অ্যাস্টন।
মাঝমাঠে সতীর্থের পাস নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পথেই সিটির ইয়োশকো ভার্দিওলকে ফাঁকি দিয়ে দ্রুত এগিয়ে যান জাম্যাইকার উইঙ্গার বেইলি। বক্সের বাইরে আরেক দফায় ভার্দিওলকে কাটিয়ে শট নেন তিনি, রুখতে পা বাড়িয়ে দেন রুবেন দিয়াস, আর এখানেই বড় ক্ষতিটা হয়। দিয়াসের পায়ে লেগে দিক পাল্টে বল জড়ায় জালে।
৮৬তম মিনিটে ভাগ্যের জোরে দ্বিতীয় গোল হজম করা থেকে বেঁচে যায় সিটি। ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার দগলাস লুইসের বাঁকানো জোরাল শট এদেরসনকে ফাঁকি দিলেও পোস্ট এড়াতে পারেনি। আশা বেঁচে থাকে সিটির।
অবশ্য ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য যা দরকার ছিল, তার কিছু বাকি সময়েও করতে পারেনি সিটি। শিরোপাধারীদের এমন সাদামাটা পারফরম্যান্স সত্যিই অবাক করার মতো, হলান্ডের ওই দুটি প্রচেষ্টা বাদে পুরো ম্যাচে আর একবারও গোলের উদ্দেশ্যে শট নিতে পারেনি তারা!
সেখানে গোলের জন্য অ্যাস্টন মোট ২২টি শট নেয়, যার সাতটি ছিল লক্ষ্যে।
দিনের আরেক ম্যাচে শেফিল্ড ইউনাইটেডের মাঠে ২-০ গোলে জয়ী লিভারপুল ১৫ ম্যাচে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে আছে দ্বিতীয় স্থানে।
সমান ম্যাচে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে চূড়ায় আর্সেনাল।
এদিন জয়ের স্বাদ পেয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডও। চেলসিকে ২-১ গোলে হারিয়েছে এরিক টেন হাগের দল।
টটেনহ্যাম হটস্পারের সমান ২৭ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে ষষ্ঠ স্থানে আছে ইউনাইটেড। টটেনহ্যাম অবশ্য এক ম্যাচ কম খেলেছে।