প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলার হাতছানিতে রোমাঞ্চিত পর্তুগালের এই ডিফেন্ডার।
Published : 15 Nov 2022, 07:50 PM
আর দশজনের মতো ফুটবলার হয়ে ওঠার পথটা মসৃণ ছিল না দানিলো পেরেইরার জন্য। তার বেড়ে ওঠার ভিত গড়ে দিয়েছিল মেম মার্তিনসের অলিগলির ফুটবল, যেখানে তিনি দেখা পেয়েছিলেন তার মতোই আরও শিশুদের। যাদের সবার চোখে স্বপ্ন ছিল একই- একদিন বিশ্বকাপে খেলা।
নিজের প্রথম বিশ্বকাপের আগে শৈশবের সতীর্থদের তাই খুব মনে পড়ছে পেরেইরার। পর্তুগালের ৩১ বছর বয়সী ডিফেন্ডার বললেন, বিশ্ব সেরার মঞ্চে তিনি কেবল নিজেকেই নন, প্রতিনিধিত্ব করবেন শুরুর দিনের সঙ্গীদেরও।
পেরেইরার জন্ম আফ্রিকার দেশ গিনি-বিসাউতে। ছোটবেলায় মায়ের সান্নিধ্য খুব একটা পাননি তিনি। তার বয়স যখন দুই বছর, তার মা নার্সিং পড়তে চলে যান পর্তুগালে। এর তিন বছর পর তার পুরো পরিবার পাড়ি জমায় ইউরোপের দেশটিতে। শুরু হয় পেরেইরার পেশাদার ফুটবলার হওয়ার কঠিন পথচলা।
লিসবনের উপকণ্ঠ সিন্ত্রার মেম মার্তিনসের রাস্তায় ফুটবলের সঙ্গে তার সূচনালগ্নের দিনগুলোতে পরিচয় হয় স্বপ্নকাতুর সব শিশুদের সঙ্গে। পেরেইরার মতো তাদেরও ইচ্ছা ছিল জাতীয় দলে খেলার।
বেড়ে ওঠার সময়ে পর্তুগালের শীর্ষ তিন ক্লাব বেনফিকা, পোর্তো বা স্পোর্তিংয়ে যোগ না দিয়ে পেরেইরা খেলেন ইতালি, গ্রিস ও নেদারল্যান্ডসের ক্লাবগুলোতে। এরপর ২০১৫ সালে ডাক পান পর্তুগাল দলে।
২০১৮ রাশিয়া আসর হতে পারত পেরেইরার প্রথম বিশ্বকাপ। তবে চোটের কারণে ছিটকে যান। আসছে কাতার বিশ্বকাপে পর্তুগালের চূড়ান্ত দলে আছেন তিনি।
ফিফাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পেরেইরা তুলে ধরলেন প্রথমবার বিশ্বকাপে খেলার রোমাঞ্চ। বললেন, বৈশ্বিক আসরে নিজের পাশাপাশি আরও অনেকের স্বপ্নপূরণের অনুভূতিও কাজ করছে তার মাঝে।
“আমি অনেক বাচ্চাদের সঙ্গে রাস্তায় বড় হয়েছি, সেখানে অনেকেই ছিল যারা আমার মতো একই স্বপ্ন লালন করত। আমি বিশ্বাস করি, শুধু আমার এবং আমার পরিবারের জন্যই আমি ফুটবল খেলি না, মেম মার্তিনসের, সিন্ত্রার অনেক লোকেদের জন্যও খেলি, যারা আমার সঙ্গে রাস্তায় খেলেছে। তারা আজ আমাকে এমন একজন হিসেবে দেখে, যে তাদের প্রতিনিধিত্ব করছে।”
“বিশ্বকাপে যখন আমার প্রথম ম্যাচ খেলব, তখন এটাই ভাবব যে, আমি শুধু একাই খেলছি না, আমার জায়গায় থাকতে চায় এমন হাজার হাজার লোকও আমার সঙ্গে আছে। এটাই আমাকে অনুপ্রাণিত করে।”
বিশ্বকাপে ‘এইচ’ গ্রুপে আছে ২০১৬ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল। গ্রুপের অন্য তিন দল ঘানা, উরুগুয়ে ও দক্ষিণ কোরিয়া।
গ্রুপের বাধা পার করতে পারলে শেষ ষোলোয় পর্তুগালের সামনে পড়তে পারে ‘জি’ গ্রুপে থাকা সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল।
পিএসজিতে পেরেইরার দুই সতীর্থ নেইমার ও মার্কিনিয়োস আছেন ব্রাজিল দলে। পেরেইরা বলেন, সম্ভাব্য এই লড়াই নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হলেও ফাইনালের আগে নেইমারদের মোকাবেলা করতে চান না তিনি।
আগামী ২৪ নভেম্বর ঘানার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে পর্তুগালের বিশ্বকাপ অভিযান।