মোহামেডানকে অনায়াসে হারাল আবাহনী

দারুণ জয়ে পয়েন্ট টেবিলে বসুন্ধরা কিংসের উপর চাপ ধরে রাখল মারিও লেমোসের দল।

ছবি: আবাহনীর ফেইসবুক

দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইটা হলো একপেশে। সুযোগ কাজে লাগালেন আবাহনীর পিটার এনওরাহ ও দেনিয়েল কলিনদ্রেস সোলেরা। বিবর্ণ মোহামেডান একটু-আধটু সুযোগ তৈরি করল বটে, কিন্তু গোল থাকল অধরা সোনার হরিণ হয়ে।

কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে শুক্রবার ২-০ গোলে জিতেছে আবাহনী। সহজ জয়ের আনন্দ নিয়ে মাঠ ছাড়া মারিও লেমোসের দল পয়েন্ট টেবিলে চাপ ধরে রাখল বসুন্ধরা কিংসের উপর।

৬ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে কিংস, এক ম্যাচ বেশি খেলা আবাহনী ১৫ পয়েন্ট নিয়ে আছে দ্বিতীয় স্থানে।

পিটারের গোলে চালকের আসনে আবাহনী

শুরু থেকে মোহামেডানকে চাপে রাখা আবাহনী একাদশ মিনিটে এগিয়ে যায়। তবে এই গোলে মোহামেডানের রক্ষণের ঢিলেমির দায়ও কম নয়। বাঁ দিক থেকে কলিনদ্রেস যখন বল বাড়ান, তখনও বক্সে মোহামেডানের পাঁচ জন, কিন্তু কেউই পিটারের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেননি। নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড প্রথম স্পর্শে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জোরাল কোনাকুনি শটে খুঁজে নেন জাল।

আবাহনীর বক্সে বিবর্ণ মোহামেডান

বিরতির আগ পর্যন্ত তেমন পরিষ্কার কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি মোহামেডান। বক্সের আশপাশে যা একটু ছোটাছুটি করেছেন সুলেমানে দিয়াবাতে, কিন্তু আবাহনী গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেলের পরীক্ষা নেওয়া হয়নি তার। ৩২তম মিনিটে দিয়াবাতের আক্রমণে বক্সের একটু উপর থেকে স্লাইডিং ট্যাকলে আটকে দেন আলমগীর মোল্লা।

শুরু থেকে রেজাউল করিম, আলমগীর মোল্লা, ইউসুফ মোহাম্মেদ ও মেহেদী হাসান রয়েল কড়া পাহারায় আগলে রাখেন আবাহনীর রক্ষণ। তাতে বক্সের বাইরে মুখ থুবড়ে পড়তে থাকে মোহামেডানের বিক্ষিপ্ত সব প্রচেষ্টা। দ্বিতীয়ার্ধের দৃশ্যপট প্রায় একই; জাফর-দিয়াবাতেরা কোটরবন্দী।

পড়ে যাওয়ার আগে কলিনদ্রেসের গোল

৫৮তম মিনিটের থ্রো ইনের নিয়ন্ত্রণ নিতে বক্সের লড়াইটা ছিল দুই দেনিয়েলের। গায়ের সঙ্গে সেঁটে থাকা মোহামেডানের দেনিয়েল রিকার্দোর হালকা চার্জে ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যাওয়ার আগে কোনোমতে বলে পা ছোঁয়াতে সক্ষম হন দেনিয়েল কলিনদ্রেস সোলেরা। তাতেই বল ঝাঁপিয়ে পড়া গোলরক্ষক আহসান হাবিবকে ফাঁকি দিয়ে জালে জড়ায়। লিগে কলিনদ্রেসের গোল হলো ৪টি। মোহামেডানের ঘুরে দাঁড়ানোর পথটা হয়ে যায় আরও কঠিন।

সুবর্ণ সুযোগ নষ্টের হতাশা মোহামেডানের

৭২তম মিনিটে প্রথম পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয় আবাহনীকে। তবে কিছুটা ভাগ্যের ছোঁয়ায়, কিছুটা মোহামেডানের ব্যর্থতায় বেঁচেও যায় তারা। আবিদের ক্রসে দিয়াবাতের হেড সোহেল পুরোপুরি গ্লাভসে নিতে পারেননি। বল ক্লিয়ার করতে আলমগীর শট নিলেও তা চলে যায় বক্সের ভেতরে থাকা সাজ্জাদের পায়ে, মোহামেডানের এই মিডফিল্ডার ক্রসবারের উপর দিয়ে উড়িয়ে মেরে নষ্ট করেন সুবর্ণ সুযোগ।

এরপর কেবল সময় গড়িয়েছে, মলিনতা কাটিয়ে উঠতে পারেনি মোহামেডান। যোগ করা সময়ে সাজ্জাদের কর্নার লাফিয়ে এক হাতের টোকায় ফেরান সোহেল।

২০২১ সালে লিগে সবশেষ ১-১ ড্রয়ের পর এ নিয়ে আবাহনীর কাছে টানা তিন ম্যাচ হারের তেতো স্বাদ পেল মোহামেডান। এ মুহূর্তে ছয় ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে অষ্টম স্থানে।

এদিকে মুন্সিগঞ্জের শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটিকে ২-০ গোলে হারিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র। ময়মনসিংহ স্টেডিয়ামে উত্তরা এফসির বিপক্ষে ১-১ ড্র করেছে চট্টগ্রাম আবাহনী।