ইন্দোনেশিয়ায় ফুটবল মাঠে ট্রাজেডির কারণ কাঁদুনে গ্যাস

ফুটবল মাঠে কাঁদুনে গ্যাস ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে পুলিশ সদস্যরা জানত না বলে তদন্তে উঠে এসেছে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Oct 2022, 01:31 PM
Updated : 14 Oct 2022, 01:31 PM

কাঁদুনে গ্যাসের কারণেই মূলত ইন্দোনেশিয়ায় ফুটবল স্টেডিয়ামে বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় গঠিত তদন্তকারী দলের অনুসন্ধানে এ তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী মাহফুদ এমডি। 

গত ১ অক্টোবর ইন্দোনেশিয়ায় লিগা ওয়ানে আরেমা এফসি ও পারসেবায়া সুরায়া ক্লাবের ম্যাচ শেষের দাঙ্গায় ও পদদলিত হয়ে ১৩০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। পূর্ব জাভার মালাং অঞ্চলের মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করছিল সরকারি কর্মকর্তা, ফুটবল ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং দল। 

নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী মাহফুদ শুক্রবার বলেন, ব্যবহৃত কাঁদুনে গ্যাসের বিষাক্ততার বিষয়ে আলাদা একটি দল এখনও তদন্ত করছে। সেটির ফলাফল যাই হোক না কেন, কাঁদুনে গ্যাসের কারণেই যে এত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, সেই সিদ্ধান্তে তা প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেন তিনি। 

স্টেডিয়ামের তেতরে পুলিশ কেন কাঁদুনে গ্যাস ছুঁড়েছিল, তা নিয়ে একের এক এক প্রশ্ন আর সমালোচনার মুখে আছে ইন্দোনেশিয়ান কর্তৃপক্ষ ও ইন্দোনেশিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (পিএসএসআই)। 

বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থা ফিফার নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী, মাঠে নিরাপত্তাকর্মীরা কখনোই আগ্নেয়াস্ত্র কিংবা ‘দর্শক নিয়ন্ত্রণে গ্যাস’ ব্যবহার করতে পারেন না। 

ইন্দোনেশিয়ার কানজুরুজান স্টেডিয়ামে আরেমার বিপক্ষে ওই ম্যাচটি ৩-২ গোলে জেতে পারসেবায়া। দুই দশকের বেশি সময় পর পারসেবায়ার কাছে হারায় আরেমার সমর্থকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে মাঠে ঢুকে পড়েন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে। 

তাতেই ছোটাছুটি, হুড়োহুড়ি বেঁধে যায়। স্টেডিয়ামের বেশ কয়েকটি গেট বন্ধ থাকায় বাইরে বের হতে পারেননি অনেকে। দাঙ্গায়, শ্বাসরুদ্ধ আর পদদলিত হয়ে মৃত্যৃর ঘটনা ঘটে। 

ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং দলের তদন্তে উঠে এসেছে যে, ফুটবল মাঠে কাঁদুনে গ্যাস ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে জানত-ই না দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা। ‘নির্বিচারে’ কাঁদুনে গ্যাস ছোড়া হয়েছিল বলে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। 

এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েক ডজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে পুলিশ ও সামরিক বাহিনী। 

তদন্তকারী দল মনে করছে, পিএসএসআই নিয়ম উপেক্ষা করে দায়িত্ব অবহেলা করেছে এবং এর চেয়ারম্যান ও নির্বাহী কমিটিকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। 

নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী জানান, তদন্তকারী দলের সুপারিশের বিস্তারিত তথ্যের ১২৪ পৃষ্ঠার তালিকা রাষ্ট্রপতির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।