যে কারণে হলান্ডকে ৬ গোলের সুযোগ দেননি গুয়ার্দিওলা

তরুণ ফরোয়ার্ডের গোল ক্ষুধা ধরে রাখতেই তাকে তুলে নিয়েছিলেন ম্যানচেস্টার সিটি কোচ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 March 2023, 10:53 AM
Updated : 15 March 2023, 10:53 AM

আর্লিং হলান্ডের পায়ে গোল আসছিল বাঁধভাঙা ঢেউয়ের মতো। মাঝে পড়েছিল একটু ভাটার টান। লাইপজিগের ম্যাচে তা দূর হয়ে ফিরল যেন জোয়ার। পাঁচ গোল করে, রেকর্ডের পাতায় আঁকিবুকি সেরে ম্যানচেস্টার সিটির জয়ের নায়ক এই ফরোয়ার্ডই। পেতে পারতেন আরও, কিন্তু তাকে দ্বিতীয়ার্ধে তুলে নেন পেপ গুয়ার্দিওলা। প্রিয় শিষ্যকে ৬ গোল করার সুযোগ না দেওয়ার কারণ নিজেই জানালেন সিটি কোচ।

ইতিহাদ স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর ফিরতি লেগে ৭-০ গোলে জিতে সিটি। দুই লেগ মিলিয়ে ৮-১ গোলের অগ্রগামিতায় শেষ আটে পা রাখে সিটি। প্রথম লেগ ১-১ ড্র হয়েছিল।

লাইপজিগের জালে সিটির গোল বন্যার শুরু হলান্ডের হাত ধরেই। ২২তম মিনিটে পেনাল্টি স্পট কিকে লক্ষ্যভেদ করেন এই ফরোয়ার্ড। ২৪তম মিনিট এবং প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের গোলে পূরণ করেন হ্যাটট্রিক। ৫৩ ও ৫৭তম মিনিটের গোলে পাঁচের চক্র পূরণের পাশাপাশি রেকর্ডে অনেক পাতায় তোলেন নিজের নাম।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ২৫ ম্যাচে হলান্ডের গোল এখন ৩৩টি। প্রতিযোগিতাটিতে তার চেয়ে কম ম্যাচে ৩০ গোলের মাইলফলক ছুঁতে পারেননি আর কেউ। তিনি ভেঙেছেন সাবেক ডাচ ফরোয়ার্ড রুড ফন নিস্টলরয়ের (৩৪ ম্যাচে ৩০ গোলের) রেকর্ড।

প্রতিযোগিতাটির ইতিহাসে দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে প্রথমার্ধে একাধিক হ্যাটট্রিক করলেন হলান্ড। প্রথম জন সাবেক ইতালিয়ান ফুটবলার মার্কো সিমোনে, ১৯৯৬ সালে এসি মিলানের হয়ে ও ২০০০ সালে মোনাকোর জার্সিতে। হলান্ডের প্রথমটি ছিল তার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ অভিষেক ম্যাচে, ২০১৯ সালে সালসবুর্কের হয়ে।

হলান্ডের কীর্তি আছে আরও। তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এক ম্যাচে ৫ গোল করলেন তিনি। ২০১২ সালে বার্সেলোনার হয়ে বায়ার লেভারকুজেনের বিপক্ষে লিওনেল মেসি ও ২০১৪ সালে শাখতার দোনেৎস্কের হয়ে বাতে বরিসভের বিপক্ষে লুইস আদ্রিয়ানো এই নজির গড়েছিলেন।

আরও প্রাপ্তির সুযোগ ছিল হলান্ডের সামনে। কিন্তু গুয়ার্দিওলা তাকে তুলে নেন ৬৩তম মিনিটে। বাকিটা সময় খেলতে পারলে হয়ত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ছয় গোলের মাইলফলকে পা পড়ত তার। কিন্তু সিটি কোচ ভেবেছেন অন্যভাবে।

“যদি সে এই মাইলফলক স্পর্শ করত, মাত্র ২২ বছর বয়সে এই রেকর্ড গড়ত, তাহলে সেটা তার জীবনকে পানসে করে তুলত। এখন তার সামনে সিটির হয়ে এবং অন্য সবখানেই এটি গড়ার লক্ষ্য থাকবে। এ কারণেই তাকে তুলে নিয়েছিলাম।”

“আমি জানি না, লেভারকুজেনের বিপক্ষে মেসি যখন এটা (পাঁচ গোল) করেছিল, তখন কী হয়েছিল… কিন্তু মঙ্গলবার আমি হলান্ডের বদলি নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। স্বাভাবিকভাবে যেটা হয়, ম্যাচ যখন শেষ (ফল প্রায় নিশ্চিত) হয়ে যায়, আমি চাই…যত বেশি সম্ভব অন্যদের খেলার সুযোগ দিতে।”

মাত্র ৫৭ মিনিটেই মেসির পাঁচ গোলের মাইলফলক ছুঁয়েছেন হলান্ড। গুয়ার্দিওলার মনে হচ্ছে এটা ভিন্ন কিছু।

“হলান্ড মেসির রেকর্ড স্পর্শ করেছে, কিন্তু সে এটা করেছে ৬০ মিনিটে (৫৭ মিনিটে)। এটা অন্যরকম কিছু। কে জানে, সে ৯০ মিনিট খেললে কী হতো?”

ছয় ফুট চার ইঞ্চি গড়নের হলান্ডও চেয়েছিলেন পুরোটা সময় খেলতে। চাওয়া পূরণ না হলেও কোচের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানান তিনি।

“আমি গুয়ার্দিওলাকে বলেছি, ডাবল হ্যাটট্রিক করতে পারলে ভালো লাগত আমরা, কিন্তু (তিনি আমাকে তুলে নিলে), আমি কীই বা করতে পারি?”