আর্সেনালকে সামনে পেলেই হ্যারি কেইনের জ্বলে ওঠার পরিসংখ্যান মিকেল আর্তেতার দুঃশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
Published : 09 Apr 2024, 12:34 AM
এবারের প্রেক্ষাপট একেবারেই ভিন্ন। আর্সেনাল ছুটছে দুর্বার গতিতে। বায়ার্ন মিউনিখ ধুঁকছে! দুই দল এবার মুখোমুখি হচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মঞ্চে। আর্সেনাল কোচ মিকেল আর্তেতার অবশ্য স্বস্তি-অস্বস্তি দুটোই আছে। দলের তুঙ্গস্পর্শী ফর্ম তাকে আত্মবিশ্বাস যোগাচ্ছে, আবার বায়ার্নের আক্রমণভাগে হ্যারি কেইনের উপস্থিতি নিয়েও তার খচখচানি কম নয়।
কোয়ার্টার-ফাইনালের প্রথম লেগে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় মুখোমুখি হবে দুই দল। ঘরের মাঠ এমিরেটস স্টেডিয়ামে আর্সেনাল নামবে ‘ফেভারিট’ হিসেবেই।
পরিসংখ্যান অবশ্য বলছে ভিন্ন কথা। ২০১৭ সালে শেষ ষোলোয় মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। দুই লেগেই আর্সেনাল উড়ে যায় স্রেফ খড়কুঁটোর মতো। ঘরে-বাইরে দুই ম্যাচে তারা অসহায় আত্মসমর্পণ করে হেরেছিল ৫-১ গোলে! এবার আর্তেতার লক্ষ্য মধুর প্রতিশোধ নিয়ে দারুণ পথচলা ধরে রাখার।
এ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আঙিনায় ফিরেছে আর্সেনাল। ২০০৯-১০ মৌসুমের পর প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার-ফাইনালের মঞ্চে উঠে এসেছে তারা। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা দলটি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের মুকুট ফিরে পাওয়ার জোরাল দাবিও জানাচ্ছে এবার। সব মিলিয়ে দারুণ সুসময়ের মধ্যে আছে আর্তেতার দল।
বায়ার্ন ছুটছে উল্টোরথে। অলৌকিক কিছু না ঘটলে চলতি মৌসুমে বুন্ডেসলিগায় মুকুট হারাচ্ছে দলটি। কিন্তু এই হতাশার ভীড়েও জার্মান দলটির আক্রমণভাগে আলো ছড়াচ্ছেন কেইন। আর্সেনালকে সামনে পেলে গোল করা যার অভ্যাসই বলা যায়।
বায়ার্নে যোগ দেওয়ার আগে প্রিমিয়ার লিগের দল টটেনহ্যাম হটস্পারে ছিলেন কেইন। ওই সময় ১৯টি নর্থ লন্ডন ডার্বিতে গানারদের জালে ১৪ বার গোল উৎসব করেন এই ইংলিশ ফরোয়ার্ড। ‘চেনা শত্রু’ কেইনকে নিয়ে তাই আলাদা করে ভাবতেই হচ্ছে আর্তেতাকে।
“যখন আপনি তার গত ১০ বছরের সংখ্যাকে (গোলসংখ্যা) দেখবেন, সেটা অবিশ্বাস্য। সে ভিন্ন ভিন্ন অনেক উপায়েই গোল করতে পারে।”
“ওই সুযোগগুলো তৈরি করে দেওয়ার মতো সুযোগ এবং খেলোয়াড় সে পাশে পেয়েছে… কিন্তু এবারের ম্যাচটি কেবল তার (কেইন) বিপক্ষে নয়, বায়ার্ন দলে থাকা বাকি আরও দশ জনের বিপক্ষে। ব্যক্তিগত নৈপুণ্যনির্ভর এই খেলোয়াড়দের এবং বিশেষ করে কেইনকে আমরা ভালোভাবে জানি। তার কী সামর্থ্য আছে, সেটাও জানি। নির্দিষ্ট বিষয়গুলো সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করতে চাওয়াটাই আমাদের জন্য সবচেয়ে ভালো হবে।”
২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জয় থেকে আর্সেনাল সম্ভাব্য সাত ম্যাচ দূরে দাঁড়িয়ে। কিন্তু বুন্ডেসলিগায় বায়ার্ন পারছে না নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটাও খেলতে। শীর্ষে থাকা বেয়ার লেভারকুজেনের চেয়ে লিগ টেবিলে এ মুহূর্তে ১৬ পয়েন্ট পিছিয়ে আছে তারা।
মাঠের খেলার মতোই অস্থিরতা চলছে বায়ার্নের ডাগআউটে। চলতি মৌসুম শেষেই বাভারিয়ানদের দায়িত্ব ছাড়বেন টমাস টুখেল। তবে চেলসি কোচ হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা টুখেলকে নিয়ে মুগ্ধতার অন্ত নেই আর্তেতার। পথে ফিরতে মরিয়া বায়ার্নকেও সমীহ করছেন আর্সেনাল কোচ।
“বায়ার্ন একটি শীর্ষদল। আমি টুখেলের ভীষণ গুণমুগ্ধ… যেভাবে তিনি সব ছক সাজান, যেভাবে বায়ার্ন খেলে, যেভাবে তারা বাকবদলগুলো করে… টুখেলের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি আমি।”
“ফুটবল আবহ এমনই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং ধারাবাহিকতায় থাকা খুবই কঠিন… এটি যে কারো বেলায়ই হতে পারে।”
এই ম্যাচে আর্সেনালের গ্যালারিতে কেবল থাকবেন স্বাগতিক সমর্থকরা। লাৎসিওর বিপক্ষে আগের রাউন্ডের ম্যাচে মাঠে আতশবাজি ছোঁড়ার ঘটনায় পাওয়া শাস্তির কারণে এ ম্যাচে বায়ার্নের কোনো সমর্থক থাকতে পারবেন না গ্যালারিতে। পুরো গ্যালারি আর্সেনালময় হয়ে উঠবে বলে আর্তেতাও আশাবাদী হতে পারছেন আরও বেশি।
“ঘরভর্তি আর্সেনাল সমর্থক! অনেক আবেগ ও উচ্ছ্বাসের ব্যাপার। ১৫ বছরে আমরা এই সুযোগ পাইনি এবং এটাই বলছে আমাদের জন্য এই রাতটা কতটা স্পেশাল।”