শেষ আধ ঘণ্টা একজন কম নিয়ে খেলে স্ত্রাসবুরকে ২-১ গোলে হারিয়েছে ক্রিস্তফ গালতিয়ের দল।
Published : 29 Dec 2022, 03:07 AM
স্ত্রাসবুরের বিপক্ষে দুই মিনিটে দুই হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লেন নেইমার। গোল করার পর নিজেদের জালেও বল পাঠিয়ে বিপদ ডেকে আনেন মার্কিনিয়োস। সফল স্পট কিকে শেষ মুহূর্তে ব্যবধান গড়ে দিলেন কিলিয়ান এমবাপে। বিশ্বকাপের পর প্রথম মাঠে নেমে হোঁচট খাওয়ার শঙ্কা এড়িয়ে নাটকীয় জয় পেল পিএসজি।
ঘরের মাঠে লিগ ওয়ানের ম্যাচে ২-১ গোলে জিতেছে ক্রিস্তফ গালতিয়ের দল। প্রথমার্ধে দলকে এগিয়ে নেন অধিনায়ক মার্কিনিয়োস। দ্বিতীয়ার্ধে তার আত্মঘাতী গোলেই সমতা ফেরে ম্যাচে। যোগ করা সময়ে এমবাপের গোলে তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে পিএসজি।
পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দলের সঙ্গে ১৯ নম্বর দলের খেলা। অবস্থানের এই পার্থক্যের ছাপ ছিল বল দখলে, তবে গোলের জন্য শট নেওয়ায় দুই দল ছিল প্রায় সমানে সমান। ৭১ শতাংশ সময় বল দখলে রাখা পিএসজি গোলের জন্য নেয় ১০ শট, যার ছয়টি ছিল লক্ষ্যে। স্ত্রাসবুরের ১২ শটের তিনটি ছিল লক্ষ্যে।
রক্ষণ দৃঢ় করে প্রতি-আক্রমণ নির্ভর ফুটবল খেলছিল স্ত্রাসবুর। জমাট রক্ষণের সামনে কারিকুরি দেখাচ্ছিলেন নেইমার। গতি দিয়ে ব্যবধান গড়ে দেওয়ার চেষ্টায় ছিলেন এমবাপে। তবে লিওনেল মেসির অভাব স্পষ্টতই অনুভব করে পিএসজি।
চতুর্দশ মিনিটে এগিয়ে যায় শিরোপাধারীরা। নেইমারের দারুণ ফ্রি কিকে চমৎকার হেডে জাল খুঁজে নেন ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার মার্কিনিয়োস। এমবাপেকে ফাউল করায় বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রি কিক পেয়েছিল ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা।
২৫তম মিনিটে সের্হিও রামোসের লম্বা করে বাড়ানো বলে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ পান এমবাপে। স্ত্রাসবুরের এক ডিফেন্ডার পা পিছলে পড়ে যাওয়ায় খুব একটা চ্যালেঞ্জের মুখে ছিলেন না তিনি। তবে ডি-বক্সে ঢুকে গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে হতাশ করেন কাতার বিশ্বকাপের গোল্ডেন বুট জয়ী।
খেলার ধারার বিপরীতে ৩০তম মিনিটে সমতা ফেরানোর দারুণ সুযোগ পায় স্ত্রাসবুর। আদ্রিয়াঁ তমাসোঁর ক্রসে কেভিন গামেহোর শট দারুণ দক্ষতায় ব্যর্থ করে দেন জানলুইজি দোন্নারুম্মা। ফিরতি বলে সুযোগ এসেছিল লুডোভিকের সামনে। তবে ঠিকমতো শট নিতে পারেননি তিনি, ঝাঁপিয়ে সেই চেষ্টাও ব্যর্থ করে দেন পিএসজি গোলরক্ষক।
৫১তম মিনিটে চেষ্টাও করতে পারেননি তিনি। তমাসোঁর ক্রস মার্কিনিয়োসের পায়ে লেগে দিক পাল্টে জড়ায় জালে। কিছুই করার ছিল না দোন্নারুম্মার।
তিন মিনিট পর ফের এগিয়ে যেতে পারত পিএসজি। নেইমারের ডিফেন্স চেরা পাসে বিপজ্জনক জায়গায় বল পেয়েছিলেন এমবাপে। এগিয়ে এসে তার শট ঠেকিয়ে দেন স্ত্রাসবুর গোলরক্ষক।
৬২তম মিনিটে বড় ধাক্কাটা খায় পিএসজি; লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন নেইমার। আগের মিনিটে তমাসোঁর মুখে মেরে হলুদ কার্ড দেখেছিলেন তিনি। পরের মিনিটে ডি-বক্সে ডাইভের দায়ে দেখেন আরেকটি!
১০ জনের দল নিয়েও চেষ্টা চালিয়ে যায় পিএসজি। একে একে মাঠে আসেন কার্লোস সলের, পাবলো সারাবিয়া, আশরাফ হাকিমি। কিন্তু জালের দেখা মিলছিল না। যোগ করা সময়ের ষষ্ঠ মিনিটে শঙ্কা দূর করেন এমবাপে।
ফরাসি ডিফেন্ডার নিয়ামসি এমবাপেকেই ফাউল করায় পেনাল্টি পায় পিএসজি। অবশ্য আলগা বল পেয়ে জালে পাঠিয়েছিলেন মার্কিনিয়োস। আগেই পেনাল্টির বাঁশি বাজানো রেফারি অটল থাকেন আগের সিদ্ধান্তে।
চাপের মধ্যে ঠাণ্ডা মাথায় বাঁ দিক দিয়ে জাল খুঁজে নেন কদিন আগে বিশ্বকাপ ফাইনালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে হ্যাটট্রিকের কীর্তি গড়া এমবাপে। লিগ ওয়ানের গোলদাতার তালিকায় ১৩ গোল নিয়ে শীর্ষস্থান আরও দৃঢ় করলেন তিনি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা নেইমারের সঙ্গে ব্যবধান নিয়ে গেলেন দুইয়ে।
১৬ ম্যাচে ১৪ জয় ও দুই ড্রয়ে ৪৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে পিএসজি। ১১ পয়েন্ট নিয়ে ১৯ নম্বরে স্ত্রাসবুর।
১৫ ম্যাচে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে থাকা লঁসের সামনে ব্যবধান কমানোর চ্যালেঞ্জ।