পয়েন্ট টেবিলের নিচের দিকের দলটির বিপক্ষে ৫-১ গোলে জিতেছে পেপ গুয়ার্দিওলার দল।
Published : 13 Apr 2024, 10:04 PM
দ্বিতীয় মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার পর আক্রমণের তোড়ে যেন লুটন টাউনকে ভাসিয়ে দিতে চাইল ম্যানচেস্টার সিটি। প্রথমার্ধে ভালোই প্রতিরোধ গড়ল অবনমন অঞ্চলের দলটি; কিন্তু বিরতির পর আর পারল না তারা। গোল উৎসব করে লিগ টেবিলে চূড়ায় উঠল পেপ গুয়ার্দিওলার দল।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে শনিবার ৫-১ গোলে জিতেছে সিটি।
সিটির একটি করে গোল করেন আর্লিং হলান্ড, জেরেমি দোকু, মাতেও কোভাচিচ ও ইয়োশকো ভার্দিওল, অন্য গোলটি আত্মঘাতী। লুটনের হয়ে ব্যবধান কমান রস বার্কলে।
৩২ ম্যাচে সিটির পয়েন্ট ৭৩। সমান ৭১ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে আছে আর্সেনাল, আর গোল পার্থক্যে পিছিয়ে তিনে লিভারপুল। দুটি দলই অবশ্য একটি করে ম্যাচ কম খেলেছে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রেয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ৩-৩ গোলে ড্র করা দলে ছয় পরিবর্তন এনে একাদশ সাজান গুয়ার্দিওলা। বিশ্রাম পান মিডফিল্ডার রদ্রি, জন স্টোনস, ফিল ফোডেনসহ কয়েকজন। তবে খেলায় এর কোনো প্রভাব পড়েনি, প্রথম মিনিট থেকেই সহজাত আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে সিটি।
শুরতেই সৌভাগ্যের গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। কেভিন ডে ব্রুইনের চমৎকার পাস ধরে গোলরক্ষককে একা পেয়েছিলেন হলান্ড। সরাসরি গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে হতাশ করেন তিনি। আলগা বল পেয়ে শট নেন দোকু। সেটা একজনের গায়ে লাগলে ফের পেয়ে যান হলান্ড। তার ভলি লক্ষ্যের ধারেকাছেও ছিল না; কিন্তু দাইকি হাশিওকার মুখে লেগে দূরের পোস্ট দিয়ে বল জড়ায় জালে!
একের পর এক আক্রমণে লুটনকে চেপে ধরে সিটি। তৈরি করে অসংখ্য সুযোগ। ২৭তম মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন মাথেউস নুনেস। তার চমৎকার শট ব্যর্থ হয় দূরের পোস্টে লেগে।
৪৫তম মিনিটে ব্যবধান বাড়তে দেননি লুটন গোলরক্ষক টমাস কামিনস্কি। দোকুর কাছ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সের মাথা থেকে বুলেট গতির শট নেন ডে ব্রুইনে। বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন কামিনস্কি।
প্রথমার্ধে ৭৬ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ১৮টি শট নেয় সিটি। এর ছয়টি ছিল লক্ষ্যে, যেগুলো ঠেকিয়ে দেন কামিনস্কি। এর বিপরীতে বেশিরভাগ সময় নিজেদের রক্ষণে ব্যস্ত থাকা লুটন গোলের জন্য নিতে পারেনি কোনো শট।
দ্বিতীয়ার্ধেও একইরকম আক্রমণাত্মক ফুটবলে শুরু করে সিটি। কোভাচিচের চমৎকার গোলে ৬৪তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ইংলিশ চ্যাম্পিয়নরা। শর্ট কর্নারের পর ডি-বক্সে ক্রস করেন হুলিয়ান আলভারেস। বল বাতাসে থাকা অবস্থাতেই সাইড ভলিতে জাল খুঁজে নেন কোভাচিচ। কিছুই করার ছিল না গোলরক্ষকের।
পরের মিনিটে ব্যবধান প্রায় কমিয়েই ফেলেছিল লুটন। বদলি খেলোয়াড় কৌলি উড্রর শট ব্যর্থ হয় ক্রসবারে লেগে। গোলের জন্য এটাই ম্যাচে সফরকারীদের প্রথম শট।
৭৬তম মিনিটে সফল স্পট কিকে স্কোরলাইন ৩-০ করে ফেলেন হলান্ড। বাঁ দিকে ঝাঁপ দেন গোলরক্ষক, কিন্তু নরওয়ের ফরোয়ার্ড শট নেন ডান দিকে। আসরে এটি তার ২০তম গোল। ডি-বক্সে দোকুকে ফাউল করায় পেনাল্টি পেয়েছিল সিটি।
চার মিনিট পর ডে ব্রুইনে ও হলান্ডকে তুলে নেন গুয়ার্দিওলার। এর কয়েক সেকেন্ড পর গোল হজম করে বসে সিটি। এদেরসন নিজেদের ডি-বক্সের ঠিক বাইরে বল বাড়ান নুনেসকে। তাকে বেশ চাপে ফেলে বল কেড়ে নেন বার্কলে। দারুণ গতিতে ডি-বক্সে ঢুকে বুলেট গতির শটে খুঁজে নেন জাল।
লুটনের জেগে ওঠার আশা দ্রুতই গুঁড়িয়ে দেন দোকু। বাঁদিক থেকে কাট করে ভেতরে ঢোকার পথে এড়িয়ে যান ফ্রেদ ওনিদিনমার চ্যালেঞ্জ। পরে হাশিওকার দুই পায়ের মাঝ দিয়ে বল বের করে নিয়ে বাঁকানো শটে দূরের পোস্ট দিয়ে জালে পাঠান দোকু।
যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়ান ভার্দিওল। দোকুর কাছ থেকে ডি-বক্সের মাথায় বল পেয়ে কাছের পোস্ট দিয়ে বুলেট গতির শটে জাল খুঁজে নেন তিনি। টানা দুই ম্যাচে গোল পেলেন ক্রোয়াট ডিফেন্ডার। রেয়ালের বিপক্ষে আগের ম্যাচেও জালের দেখা পেয়েছিলেন তিনি।