নারী ফুটবল
তবে এখনই ফিরছেন না তারা, ছুটি থেকে ফিরে চুক্তি সেরে পিটার জেমস বাটলারের কোচিংয়েই ওই ১৮ ফুটবলার অনুশীলন করবে বলে জানিয়েছেন বাফুফের নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান।
Published : 16 Feb 2025, 03:58 PM
১৬ দিনের টানাপোড়েনের পর এলো স্বস্তির খবর। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ গণমাধ্যমকে জানালেন, চলমান সমস্যার অবসান হয়েছে। যার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ, সেই কোচ পিটার জেমস বাটলারের অধীনেই সাবিনা-মাসুরারা অনুশীলন করবেন; তবে ছুটি কাটিয়ে ফিরে।
অস্বস্তিকর পরিস্থিতি ও অচলাবস্থা নিরসনে রোববার বাফুফে ভবনে মেয়েদের সাথে আবার আলোচনায় বসেন কিরণ। সেখানেই সাবিনা-মারিয়া-মনিকাসহ সবাই চুক্তিতে ও অনুশীলনে যোগ দেওয়ার ‘নিশ্চয়তা’ দিয়েছে বলে দাবি কিরণের।
“সভাপতি ও আমার পক্ষ থেকে মেয়েদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছিলাম। ধারাবাহিকভাবে চেষ্টা করেছি আমরা। আজকেও তাদের সাথে বসেছিলাম আমি। আজকে বসার পরে আমি যেটা বলতে পারি, মেয়েরা ফিরবে, ট্রেনিংয়ে ফিরবে; কিন্তু এখন ফিরবে না। কেননা, আমাদের ক্যাম্প বন্ধ হয়ে যাবে ২৪ ফেব্রুয়ারি, যেহেতু আমরা আরব আমিরাতে যাব দুইটা ম্যাচ খেলার জন্য।”
“দল চলে যাবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। ফলে ক্যাম্প বন্ধ হবে। ক্যাম্প বন্ধ মানে পুরোটাই বন্ধ। সিনিয়র মেয়েরাও একটা ব্রেক চাচ্ছে, এই সুযোগে তারা একটা ব্রেক পাবে, এরপর ফিরে তারা অনুশীলন শুরু করবে। ওরা যখন অনুশীলন শুরু করবে, তার আগে আমরা যেটা করব, আমরা ও বাফুফের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ, সভাপতি মেয়েদের, কোচ-সবার সাথে বসে তাদের মধ্যে যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, সেটা মিটিয়ে দেওয়া হবে।”
গত ৩০ জানুয়ারি তিন পৃষ্ঠার বিবৃতিতে কোচের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর সব অভিযোগ আনেন ‘বিদ্রোহী’ ১৮ জন। তাদের অভিযোগের মধ্যে ছিল ‘গালিগালাজ করা’, ‘বডি শেমিং’, ‘মানসিক নির্যাতন’। পিটার থাকলে ‘পদত্যাগের’ হুমকিও দেন তারা। পুরো বিষয়টি ‘ভুল বোঝাবুঝি’ বলে মনে করেন কিরণ।
“তারা বুঝতে পেরেছে যে, ভুল বোঝাবুঝি ছিল। তো সেখান থেকে তারা বেরিয়ে আসছে। তারা একসাথে অনুশীলন করবে, ক্যাম্পে থাকবে, যদি তাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি এবং অসন্তোষ থাকে, তাহলে তো কাজগুলো ঠিক ভালোভাবে হবে না। এজন্য দুই পক্ষের সাথে একসাথে বসে সেগুলো সমাধান করা হবে। মেয়েরা আমাকে বলেছে ফিরে এসে তারা অনুশীলন করবে, চুক্তি স্বাক্ষর করবে। এটা আমাদের জন্য ইতিবাচক।”
“আমি ১৮ জনের সাথে বসেছি। এটা ১৮ জনেরই মুখের কথা। একজনের কথা না। তাদের এটাও বলেছি, আমি প্রেস কনফারেন্স করব, তখন ফেরার বিষয়টি অধিনায়ক এবং বাকি সবাই বলেছে। এখানে কোনো শর্ত নাই, মেয়েরা (কোচ থাকলে ফিরব না) এমন কোনো শর্ত দেয়নি।”
তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পিটারও পাল্টা তীর ছুড়েছিলেন। এই ইংলিশ কোচও তদন্ত কমিটিকে বলে দেন, ‘নির্দিষ্ট কয়েকজন’ থাকলে কোচিং করাবেন না তিনি। ‘হয় ওরা, নয় আমি’-এমন কথাও বলেন তিনি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কিরণ কিছু বলতে রাজি হননি।
“আমি কোচের সাথে কোন কথা বলিনি, এ কারণে এটা নিয়ে বলতে পারব না। ছুটি শেষ করে ওরা যখন ক্যাম্পে ফিরে আসবে, তখন আমরা বসব। দুই পক্ষের সাথে আবার বসব, যার যা ভুল-ভ্রান্তি আছে, কথা বলে মিউচুয়াল করে ওরা চুক্তি করবে, ট্রেনিংয়ে যাবে।”
পিটারের অধীনে অনুশীলন বয়কট করেছিলেন মনিকা চাকমা, মাসুরা পারভীন, শামসুন্নাহার সিনিয়র, ঋতুপর্না চাকমা, মারিয়া মান্দা, রুপনা চাকমা, শামসুন্নাহার জুনিয়র, সানজিদা আক্তার, শিউলি আজিম, তহুরা খাতুন, নিলুফার ইয়াসমীন নীলা, সাগরিকা, কৃষ্ণা রানী সরকার, স্বর্না, নাসরিন, সাথী, মাতসুশিমা সুমাইয়া ও সাবিনা খাতুন।
এই ১৮ জনের আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি ও ২ মার্চে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুই প্রীতি ম্যাচে খেলার সম্ভাবনা ছিল না। অনুমিতভাবেই পিটারের বিবেচনায় নেই তারা। ২৪ ফেব্রুয়ারি নতুন দল নিয়ে আরব-আমিরাত মিশনে যাবেন কোচ। মিশন শেষ করে দল দেশে এবং সাবিনা-ঋতুপর্ণারা ছুটি কাটিয়ে ক্যাম্পে ফেরার পর কী হয়, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।