প্রথম আসরে যৌথভাবে ৩৮তম, দ্বিতীয়বার যৌথভাবে ৩৫তম। এবার দ্বিতীয়। চেনা কোর্সে এশিয়ান ট্যুরের শিরোপা অধরা থেকে গেলো সিদ্দিকুর রহমানের। অতৃপ্তিটুকু থাকলেও বসুন্ধরা বাংলাদেশে ওপেনের তৃতীয় আসরে নিজের পারফরম্যান্সে খুশি দেশ সেরা এই গলফার।
Published : 04 Feb 2017, 04:37 PM
কুর্মিটোলা গলফ কোর্সে শনিবার শেষ রাউন্ডে সিদ্দিকুরের শুরুটা ছিল আশা জাগানো। কিন্তু ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলা থাইল্যান্ডের জাজ জানেওয়াত্তানানোন্দের সঙ্গে পেরে ওঠেননি। পারের চেয়ে পাঁচ শট কম খেলে চতুর্থ রাউন্ড শেষ করেন। সব মিলিয়ে পারের চেয়ে ১৩ শট কম খেলে দ্বিতীয় হওয়া সিদ্দিকুর জানান, এবারের অর্জন থেকে ২০১৭ সালটা দারুণ কাটানোর অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন তিনি।
“প্রথমত আমি অনেক খুশি। প্রথম দিনটা যদিও ভালো ছিল না কিন্তু পরে আমি ভালোভাবে ফিরে এসেছি। নিজেদের কোর্সে দ্বিতীয় পজিশন, সব মিলিয়ে আমি খুশি। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় হওয়াটাও আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।”
“আজ অনেক আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। দ্বিতীয় ও চতুর্থ হোলে বার্ডি করেছি। পঞ্চম হোলে সহজ বার্ডি মিস করেছি। এরপর সাত নম্বর ও নয় নম্বর হোলে মিস করলাম। আজ যদি আমার পাটিংগুলো সেভাবে হত, তাহলে আমার সুযোগ ছিল। তবে তা নিয়ে কোনো আফসোস নেই। জাজ খুব ভালো খেলেছে। ও আসলে শিরোপার যোগ্য। ওকে আমি অভিনন্দন জানাই।”
“সত্য বলতে, শুরুর নয় হোল পর্যন্ত আশা ছিল আমি জিতব। ১০-১১ হোল পর্যন্তও আশা ছিল। কিন্তু এরপর মনে হলো আমার আর হবে না। কেননা, ও (জাজ) অনেক ভালো খেলোয়াড়।
নতুন বছরে এটা আমার দ্বিতীয় টুর্নামেন্ট। দ্বিতীয় হলাম। বছরের বাকি টুর্নামেন্টগুলোয় এটা আমাকে আসলেই অনুপ্রাণিত করবে।”
সিদ্দিকুরের খেলা দেখতে কুর্মিটোলায় গলফপ্রেমীদের অনেকেই এসেছিলেন। সমর্থকদের উপস্থিতিতে কোনো চাপ অনুভব না করার কথাও জানান ২০১৩ সালে সর্বশেষ এশিয়ান ট্যুরের শিরোপা জেতা এই গলফার।
“আমি আসলে আজকে কোনো চাপ অনুভব করিনি। বরং অনুপ্রাণিত ছিলাম। অনেক দর্শক এসেছিলেন; তাদেরকে সত্যিই ধন্যবাদ জানাই। তারা আসাতেই হয়ত আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি; ভালো খেলেছি।”
প্রথম রাউন্ডে চতুর্থ হোলে বোগি করেন সিদ্দিকুর। ওই হোলেই পারের চেয়ে তিন শট বেশি খেলেন তিনি। টুর্নামেন্ট শেষে জানালেন, বল গাছের ডালে লাগার ওই ঘটনা নিয়ে কোনো আফসোস নেই তার।
“এটা আসলে খেলার অংশ। ওই দিন আসলে বল গাছে লেগে বাজে জায়গায় চলে গেছে। এ নিয়ে আমার কোনো দুঃখ নেই। কেননা, এই টুর্নামেন্টেই অনেক উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে খেলেছি। অনেক বাজে শট খেলেও বার্ডি পেয়েছি, যেমন হোল নাম্বার সাতে পেলাম। তো সব মিলিয়ে এটা আমার জন্য দারুণ একটা সপ্তাহ।”
কৌশল নিয়ে কোচের সঙ্গে কাজ করেছিলেন সিদ্দিকুর। সেটা এবার বেশ কাজে দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
“যে বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করেছিলাম, সেগুলো ফল দিয়েছে। আমিও মাঝে মাঝে মুগ্ধ হয়েছি আমার ডিসটেন্স, অ্যাকুরেসি, স্টাইকিং নিয়ে। শুধু আমি নই; আমার সঙ্গে অনান্য যারা পেশাদার গলফার আছে, তারাও বিষয়টা উপলব্ধি করতে পেরেছে।”
শেষ রাউন্ডে প্রাণপণ চেষ্টার কথা বলেছিলেন বাংলাদেশের দুলাল হোসেন, জামাল হোসেন মোল্লা। পারের চেয়ে পাঁচ শট কম খেলে দুলাল যৌথভাবে পঞ্চদশ ও পারের সমান শট খেলে জামাল ২৬তম হয়েছেন। নিজেদের পারফরম্যান্সে হতাশ দুজনেই।
গতবার সপ্তম হওয়া দুলাল জানালেন ১৩ নম্বর হোলের শট পানিতে পড়ার পর পথ হারান তিনি, “শুরুটা মোটামুটি করেছিলাম। একটি বোগি করার পর দুটি বার্ডিও মেরেছিলাম। কিন্তু ১৩ নম্বর হোলে গিয়ে শট পড়ল পানিতে। ভাবতেও পারিনি ওটা পানিতে গিয়ে পড়বে। এরপর ইগল করলেও ঘুরে দাঁড়াতে পারলাম না। এবারের টুর্নামেন্ট নিয়ে খুব হতাশ আমি।”
সেরা পাঁচে থাকার লক্ষ্য পূরণ না হওয়ার কারণটা খুঁজে পেয়েছেন দুলাল। পাটিংয়ের সমস্যা আর ভাগ্যকে পাশে না পাওয়াটার কথাও জানালেন এই গলফার।
“আজকে শটগুলো ভালো হয়েছে কিন্তু পাটিং খুব খারাপ হয়েছে। এত ভালো শট হবে, হোলের খুব কাছাকাছি যাবে আমি ভাবতেও পারিনি। কিন্তু অনেক পাট মিস করেছি। ১৩ নম্বর নাম্বার হোলে তিনটা শট বেশি খেলেছি। এ কারণেই পিছিয়ে গেছি।”
“আসলে আমি যে পর্যায়ের খেলোয়াড়, খারাপ হলেও আমার এবার সেরা পাঁচে থাকা দরকার ছিল। আশাও করেছিলাম। কিন্তু পাটিং না হওয়ায় তা হয়নি। দুর্ভাগ্য। কেননা, গলফে ভাগ্যও দরকার হয়।”