আগের মৌসুমে অনেকটা সময় পর্যন্ত বেঁচে ছিল লিভারপুলের ‘কোয়াড্রপল’ জয়ের স্বপ্ন। শেষ পর্যন্ত তেমন কিছু না হলেও ঘুরে তুলেছিল দুটি শিরোপা। সেই দলটি এবার শুধু খালি হাতেই মৌসুম শেষ করছে না, খেলতে পারবে না চ্যাম্পিয়ন্স লিগের পরের আসরেও। ব্যর্থতা মেনে নিয়ে এখন সামনে তাকিয়ে লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ। তার দৃঢ় বিশ্বাস, আগামী মৌসুমে ঘুরে দাঁড়াবে দল।
লিভারপুলের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার যে ক্ষীণ সম্ভাবনা ছিল, তা শেষ হয়ে যায় বৃহস্পতিবার প্রিমিয়ার লিগে চেলসির বিপক্ষে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ৪-১ গোলে জয়ে। এই জয়ে লিগের শীর্ষ চারে থাকা নিশ্চিত হয়ে যায় ইউনাইটেডের। পাঁচ নম্বরে থেকে আগামী মৌসুমে ইউরোপা লিগে খেলতে হবে লিভারপুলকে।
গত মৌসুমে লিভারপুল জিতেছিল এফএ কাপ ও লিগ কাপের শিরোপা। প্রিমিয়ার লিগে তারা দ্বিতীয় হয়েছিল শেষ দিনের নাটকীয়তায় ম্যানচেস্টার সিটির চেয়ে ১ পয়েন্টে পিছিয়ে থেকে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরেছিল তারা ১-০ গোলে।
২০১৬-১৭ মৌসুমে ক্লপের পূর্ণ মেয়াদের দায়িত্ব থেকে এই প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলতে পারবে না লিভারপুল। গত মৌসুমে যে মানদণ্ড তারা তৈরি করেছিল, এবার তার ধারেকাছেও ছিল না। মৌসুমের শেষ দিকে এসে ছন্দ খুঁজে পেলেও তা যথেষ্ট হলো না সেরা চারে থাকার জন্য। স্বাভাবিকভাবে তাই অসন্তুষ্ট ক্লপ। তবে হতাশাজনক মৌসুমের মাঝেও ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক কিছু খুঁজে পাচ্ছেন তিনি।
"সত্যিকার অর্থেই আমাদের ভালো মৌসুম ছিল না এবার। আমরা মোটেও খুশি নই, আমরা ভুল করেছি এবং যথেষ্ট ধারাবাহিক ছিলাম না। বিশ্বকাপের পর অনুশীলন ক্যাম্পের পর সবকিছু ভালো ছিল না। তবে পরে আমরা যে পয়েন্ট সংগ্রহ করেছি তা বেশ ভালো। পুরো মৌসুমে এমনটা করতে পারলে আমরা ভিন্ন অবস্থানে থাকতাম।”
"সুতরাং অবশ্যই আশাবাদী হওয়ার কারণ আছে... ঘরের মাঠে সবশেষ ম্যাচে আমাদের সমর্থকরা যে পরিবেশ তৈরি করেছিল, বিদায়ী খেলোয়াড়দের ক্লাব যেভাবে বিদায় জানিয়েছিল...এই সব দিকগুলি একটি দুর্দান্ত ভবিষ্যতের ভিত্তি।”
লিভারপুল ফরোয়ার্ড মোহামেদ সালাহ বলেছেন, দল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা করে নিতে না পারায় ‘পুরোপুরি বিধ্বস্ত’ তিনি। সাউথ্যাম্পটনের বিপক্ষে মৌসুমে নিজেদের শেষ ম্যাচের আগে শুক্রবার ক্লপ অবশ্য বললেন, দল হিসেবে এখনও ঐক্যবদ্ধ আছেন তারা।
“ড্রেসিং রুমের পরিবেশ খারাপ নয়, আমরা পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শিখেছি। কোচ এবং খেলোয়াড়দের মধ্যে আমরা এক মুহূর্তের জন্য বিভক্ত হইনি, যা খুব সহায়ক, আমরা একে অপরের দিকে আঙুল তুলিনি, এসব ভালো দিক।”
"চ্যাম্পিয়ন্স লিগের যোগ্যতা অর্জন করতে না পারলে সম্ভাব্য সেরা জায়গাটি হলো পঞ্চম হওয়া, আমরা তাই করেছি। ১০ ম্যাচ আগে যদি এমন কিছুর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করতেন, তাহলে আমি ‘না’ বলতাম।”
রবের্তো ফিরমিনো ও জেমস মিলনারের মতো গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় মৌসুম শেষে লিভারপুল ছাড়বেন। ফলে দলের শক্তি বাড়ানোর প্রয়োজন হবে। যেহেতু তারা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলতে পারবে না, তাই এই বিষয়টি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে ট্রান্সফার উইন্ডোতে। ক্লপ যদিও তেমন কিছু মনে করেন না।