লা লিগা
আগের ম্যাচে দুর্দান্ত গোলে সমালোচনার জবাব দিতে পারলেও, ফের ভীষণ হতাশ করলেন কিলিয়ান এমবাপে।
Published : 05 Dec 2024, 04:00 AM
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গোল হজমের পর বিবর্ণতা ঝেড়ে ফেলার আভাস দিল রেয়াল মাদ্রিদ। অল্প সময়ে দারুণ দুটি সুযোগ পেয়েও গেল তারা; কিন্তু ফের ব্যর্থতার জালে আটকা পড়লেন কিলিয়ান এমবাপে, মিস করলেন পেনাল্টি শটও। খানিক পর তারা গোলটি শোধ করলেও, উজ্জীবিত পারফরম্যান্সে তাদেরকে হারিয়েই দিল আথলেতিক বিলবাও।
সান মামেসে বুধবার রাতে লা লিগার ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতেছে স্বাগতিকরা।
তিনটি গোলই হয় দ্বিতীয়ার্ধে। আলেক্স বেরেনগার গোলে রেয়াল পিছিয়ে পড়ার পর সমতা টানেন জুড বেলিংহ্যাম। শেষ দিকে তাদের আশা গুঁড়িয়ে দেন গোর্কা গুরুজেটা।
২০১৫ সালের মার্চের পর এই প্রথম লিগে রেয়ালের বিপক্ষে জয়ের স্বাদ পেল বিলবাও।
লিগে গত ২৬ অক্টোবর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার বিপক্ষে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পর টানা তিন রাউন্ডে জিতেছিল রেয়াল। এই তিন ম্যাচে জালও অক্ষত রাখে তারা। সেই ছন্দ এবার আর ধরে রাখতে পারল না কার্লো আনচেলত্তির দল।
এই হারের ফলে বার্সেলোনার সঙ্গে ব্যবধান কমানোর সুযোগ হারাল রেয়াল। ১৫ ম্যাচে ১০ জয় ও তিন ড্রয়ে ৩৩ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে রেয়াল। এক ম্যাচ বেশি খেলে তাদের চেয়ে ৪ পয়েন্ট বেশি নিয়ে শীর্ষে বার্সেলোনা।
লিগে টানা তৃতীয় জয়ের পর বার্সেলোনার সমান ১৬ ম্যাচে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে বিলবাও। তাদের চেয়ে ৩ পয়েন্ট বেশি নিয়ে তৃতীয় স্থানে ১৫ ম্যাচ খেলা আতলেতিকো মাদ্রিদ।
ম্যাচের চতুর্দশ মিনিটেই প্রতিপক্ষের বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে জালে পাঠান এমবাপে। সঙ্গে সঙ্গে অফসাইডের পতাকা তোলেন লাইন্সম্যান। এমবাপের শটের আগমুহূর্তে বক্সেই প্রতিপক্ষের চ্যালেঞ্জে রদ্রিগো পড়ে গিয়েছিলেন, সেজন্য পেনাল্টির আবেদন করে রেয়াল। তবে, মনিটরে দেখে সাড়া দেননি রেফারি।
বল দখলে রেয়াল আধিপত্য করলেও, আক্রমণে তারা উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারছিল না। প্রথমার্ধে প্রতিপক্ষের রক্ষণে কয়েক দফায় একটু ভীতি ছড়ালেও, একটি শটও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি তারা।
গোলের জন্য শট নেওয়ার হিসেবে সামান্য এগিয়ে ছিল বিলবাও। ৩১তম মিনিটে পরিষ্কার একটি সুযোগও পায় তারা; তবে বক্সে ইনাকি উইলিয়ামসের ব্যাকপাস ফাঁকায় পেয়ে উড়িয়ে মেরে হতাশ করেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড বেরেনগার।
বিরতির পরও একইভাবে এগোতে থাকে খেলা। ৫৪তম মিনিটে কিছুটা সৌভাগ্যের ছোঁয়ায় গোলও পেয়ে যায় বিলবাও।
বাঁ দিক থেকে আরেকটি দারুণ ক্রস বাড়ান নিকো উইলিয়ামস, সবাইকে ফাঁকি দিয়ে বল লক্ষ্যেই ছিল। শেষমুহূর্তে ঝাঁপিয়ে কোনোমতে আটকান থিবো কোর্তোয়া; কিন্তু বিপদমুক্ত করতে পারেননি তিনি। ছুটে আসা বেরেনগারের গায়ে লাগার পর বল কোর্তোয়ার শরীরে বাধা পায়, এরপর ছোট্ট টোকায় বাকি কাজ সারেন বেরেনগার।
প্রথমার্ধে তিনটি লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেওয়া রেয়াল ৫৯তম মিনিটে চতুর্থটি এবং লক্ষ্যে প্রথম শট রাখতে পারে। যদিও রদ্রিগোর পাস বক্সে ফাঁকায় পেয়ে গোলরক্ষক বরাবর দুর্বল শট নেন এমবাপে।
আট মিনিট পর গোল শোধের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও হতাশ করেন এমবাপে। বক্সে আন্টোনিও রুডিগার ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টি পায় রেয়াল; ফরাসি ফরোয়ার্ডের দুর্বল শট ঝাঁপিয়ে রুখে দেন গোলরক্ষক ইউলেন আহিরেসাবালা।
রেয়ালের জার্সিতে নিজেকে খুঁজে ফেরা এবং সাম্প্রতিক সময়ের ম্যাচগুলোয় অসংখ্য সুযোগ নষ্ট করা এমবাপে গত সপ্তাহে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লিভারপুলের বিপক্ষেও একটি পেনাল্টি মিস করেছিলেন। সেই ম্যাচে ২-০ গোলে হেরেছিল মাদ্রিদের দলটি।
তবে হতাশায় ভেঙে পড়েনি রেয়াল। করতে থাকে একের পর এক আক্রমণ। অবশেষে ৭৮তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোল পায় দলটি। এমবাপের দূর থেকে নেওয়া শট গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে ফেরানোর পর ফিরতি বল ফাঁকায় পেয়ে শটে জালে পাঠান বেলিংহ্যাম।
তাদের সেই স্বস্তি অবশ্য দুই মিনিটও স্থায়ী হয়নি। বক্সের বাইরে ফেদে ভালভের্দের ভুলে বল পেয়ে ভেতরে ঢুকে জোরাল শটে কোর্তোয়াকে পরাস্ত করেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড গুরুজেটা।
এমন অবস্থা থেকে পূর্বে অনেকবার ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লিখেছে রেয়াল; কিন্তু এদিন তেমন কিছু করার ন্যূনতম সম্ভাবনাও তৈরি করতে পারেনি তারা। আসরে দ্বিতীয় পরাজয়ের হতাশা নিয়ে ফেরে শিরোপাধারীরা।