লা লিগা
জিরোনার বিপক্ষে তাদের মাঠেই গোল উৎসব করল হান্সি ফ্লিকের দল।
Published : 15 Sep 2024, 10:21 PM
হান্সি ফ্লিকের ছোঁয়ায় বদলে যাওয়া বার্সেলোনার প্রতিশোধের আগুনে পুড়ল জিরোনা। নিজেদের মাঠে দাঁড়াতেই পারল না গত আসরে দুইবার মুখোমুখি লড়াইয়েই জয় পাওয়া দলটি। উজ্জীবিত ফুটবলে তাদের উড়িয়ে লা লিগায় জয়যাত্রা ধরে রাখল বার্সেলোনা।
জিরোনার মাঠে রোববার বিকালে ৪-১ গোলে জিতেছে ফ্লিকের দল। জোড়া গোল করে বার্সেলোনার জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছেন লামিনে ইয়ামাল। একটি করে গোল করেছেন পেদ্রি ও দানি ওলমো।
গত মৌসুমে লিগে দুটি ম্যাচেই বার্সেলোনার বিপক্ষে জিতেছিল জিরোনা। এবার ঘরের মাঠে জিতে হ্যাটট্রিক জয়ের স্বপ্ন দেখছিলেন দলটির কোচ। তবে নতুন প্রাণের সঞ্চারে সুন্দর ফুটবল উপহার দেওয়া বার্সেলোনার বিপক্ষে লড়াইও করতে পারল না তার দল।
ফেররান তরেসের মারাত্মক ফাউলে শেষ দিকে ১০ জনের দলের পরিণত হয় বার্সেলোনা। ইয়াসের আসপ্রিয়াকে ফাউল করে ৮৬তম মিনিটে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নামা স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড।
ষষ্ঠ মিনিটে গোলের জন্য প্রথম শট নেয় বার্সেলোনা। ইয়ামালের শট দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে নেন জিরোনা গোলরক্ষক পাওলো গাস্সানিগা।
১০ মিনিট পর কর্নার থেকে রবের্ত লেভানদোভস্কির হেড ফিরিয়ে দেন গাস্সানিগা। পরের মিনিটে পাল্টা আক্রমণে মিগেল গুতিয়ারেসের শট সহজেই ফেরান মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন।
জিরোনাকে প্রবল চাপে রাখা বার্সেলোনা ৩০তম মিনিটে এগিয়ে যায় দাভিদ লোপেসের মারাত্মক ভুল আর ইয়ামালের নৈপুণ্যে। গোল কিকে ডি-বক্সে বল পান লোপেস। তাকে মন্থরভাবে এগোতে দেখে দ্রুত ছুটে আসেন ইয়ামাল। লম্বা শটে বিপদমুক্ত না করে তরুণ ফরোয়ার্ডকে কাটাতে গিয়ে তালগোল পাকান অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার। বল কেড়ে নেওয়ার পর ঠাণ্ডা মাথায় জাল খুঁজে নেন ইয়ামাল।
ছয় মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এই তরুণ। রাফিনিয়ার ফ্রি কিকে বল ডি-বক্সে লেভানদোভস্কির পায়ে লেগে পেয়ে যান ইয়ামাল। ছুটে গিয়ে বুলেট গতির শটে গোলটি করেন তিনি। জটলার মধ্যে বল দেখার তেমন কোনো সুযোগই পাননি জিরোনা গোলরক্ষক।
আসরে ইয়ামালের গোল হলো তিনটি, সঙ্গে আছে চারটি অ্যাসিস্ট।
এই গোলেও দায় আছে স্বাগতিকদের। বাল্দেকে অহেতুক ব্রায়ান হিল ফাউল করায় ওই ফ্রি কিক পেয়েছিল বার্সেলোনা।
৪৪তম মিনিটে এই ভুল প্রায় পুষিয়েই দিচ্ছিলেন হিল। গুতিয়েরেসের ক্রসে তার বাঁ পায়ের শট ফিরিয়ে দেন বার্সেলোনা গোলরক্ষক।
পরের মিনিটে কর্নার থেকে হিলের হেডে বল সামনে থাকা ইনিগো মার্তিনেসের হাতে লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। পরে ভিএআরে দেখে সিদ্ধান্ত বদলান তিনি।
দুই গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যাওয়া বার্সেলোনা দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্যবধান বাড়ায়। ৪৭তম মিনিটে কুন্দের চমৎকার থ্রু বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দুরূহ কোণ থেকে বুলেট গতির শটে জাল খুঁজে নেন ওলমো।
৫৬তম মিনিটে লেভানদোভস্কির শট ফিরিয়ে দেন জিরোনা গোলরক্ষক। ফিরতি বলে এই অভিজ্ঞ স্ট্রাইকারের শট ঠেকান লোপেস। দুই মিনিট পর ইয়ামালের শট দারুণ রিফ্লেক্সে ব্যর্থ করে দেন গাস্সানিগা।
৬৪তম মিনিটে স্কোরলাইন ৪-০ করে ফেলেন পেদ্রি। মার্ক কাসাদোর দুর্দান্ত রক্ষণ চেরা পাস ডি-বক্সে পেয়ে গোলরক্ষককে এড়িয়ে জাল খুঁজে নেন তরুণ মিডফিল্ডার।
অনেকটা খেলার ধারার বিপরীতে ৮০তম মিনিটে ব্যবধান কমায় জিরোনা। ক্রিস্তিয়ান পোর্তুর দুর্দান্ত ক্রসে পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে ঠিকানা খুঁজে নেন স্তুয়ানি।
৮৬তম মিনিটে লাল কার্ড দেখে তরেস মাঠ ছাড়লে ১০ জনের দলে পরিণত হয় বার্সেলোনা। এক জন বেশি থাকার সুবিধা কাজে লাগাতে পারেনি জিরোনা। প্রতি আক্রমণে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিল বার্সেলোনা, তবে কাজে লাগাতে পারেনি তারাও।
টানা পাঁচ জয়ে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে লা লিগায় চূড়ায় আছে বার্সেলোনা। ১১ করে পয়েন্ট নিয়ে পরের দুটি স্থানে রেয়াল মাদ্রিদ ও ভিয়ারেয়াল।