ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ
বেলজিয়ানদের এই জয়ে ‘ই’ গ্রুপের লড়াই পেল নতুন মাত্রা, সব দলের পয়েন্ট ৩ করে।
Published : 23 Jun 2024, 02:53 AM
আসরের শুরুতে পাওয়া হারের ধাক্কা সামলে আক্রমণের ঝড় বইয়ে দিল বেলজিয়াম। কম গেল না রোমানিয়াও, তবে মরিয়া প্রতিপক্ষের সামনে সুবিধা করতে পারল না তারা। দুই অর্ধের দুই গোলে দারুণ এক জয়ে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের নকআউট পর্বের ওঠার সম্ভাবনা জোরাল রাখল ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের তিন নম্বর দলটি।
কোলনে শনিবার রাতের ম্যাচটি ২-০ গোলে জিতেছে বেলজিয়াম। ইউরি টিয়েলেমান্স দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কেভিন ডে ব্রুইনে।
বেলজিয়ানদের এই জয়ে ‘ই’ গ্রুপের লড়াই পেল নতুন মাত্রা, সব দলের পয়েন্ট এখন ৩ করে। সব দলের সামনেই সুযোগ পরের ধাপে যাওয়ার, আবার বাদ পড়ারও।
আপাতত শীর্ষে বেলজিয়াম এবং দুইয়ে রোমানিয়া। পরের দুটি স্থানে যথাক্রমে স্লোভাকিয়া ও ইউক্রেইন।
প্রথম ম্যাচে র্যাঙ্কিংয়ে ৪২ ধাপ পিছিয়ে থাকা স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে অনেক সুযোগ তৈরি করেও হেরে যায় বেলজিয়াম। ছেদ পড়ে তাদের টানা ১৫ ম্যাচের অপরাজেয় যাত্রায়। নকআউট পর্বে ওঠার আশা বাঁচিয়ে রাখতে ঘুরে দাঁড়ানোর বিকল্প ছিল না তাদের।
সেই তাড়নায় ম্যাচের শুরুতেই প্রতিপক্ষের ওপর আঘাত হানে বেলজিয়াম। বল পায়ে ডি-বক্সে ঢুকে রোমেলু লুকাকু বাঁ দিকে এক সতীর্থের সঙ্গে বল দেওয়া নেওয়া করে কাটব্যাট করেন। আর ছুটে গিয়ে বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে দলকে উচ্ছ্বাসে ভাসান টিয়েলেমান্স। ঘড়ির কাটায় তখন সময় ৭৩ সেকেন্ড!
বড় টুর্নামেন্টের (বিশ্বকাপ, ইউরো) কোনো ম্যাচে বেলজিয়ামের এটাই দ্রুততম গোল।
ইউক্রেইনকে ৩-০ গোলে হারিয়ে আসর শুরু করা রোমানিয়া পাল্টা জবাব দিতে পারত তিন মিনিট পরই। সতীর্থ মারিনের ক্রসে জোরাল হেড করেন রাদু দ্রুগাশেন, দারুণ নৈপুণ্যে এক হাত দিয়ে বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে পাঠান কোয়েন কাসেন্তলস।
অষ্টাদশ মিনিটে ডে ব্রুইনের পাস পেয়ে কোনাকুনি জোরাল শট নেন দোদি লুকাবাকিও, ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ব্যবধান বাড়তে দেননি রোমানিয়া গোলরক্ষক।
গতিময় ফুটবলে দারুণ সব আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে লড়াই এগোতে থাকে। প্রথমার্ধে প্রায় ৭০ শতাংশ সময় পজেশন রাখা বেলজিয়াম গোলের জন্য শটও বেশি নেয়। বক্সে দুটি হাফ চান্স পান ডে ব্রুইনে ও লুকাকু; কিন্তু কেউই পারেননি শেষটা ভালো করতে।
বিরতির পরও একইভাবে চলতে থাকে লড়াই। রোমানিয়া প্রতি-আক্রমণে উঠলেও বারবার উড়িয়ে মেরে হতাশ করতে থাকে তারা। ৫২তম মিনিটে বরং আরেকটি দারুণ সুযোগ পায় বেলজিয়াম, কিন্তু ডে ব্রুইনের কোনাকুনি শট দূরের পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
কয়েকটি সহজ সুযোগ নষ্টের পর ৬৪তম মিনিটে প্রতি-আক্রমণে সতীর্থের থ্রু পাস পেয়ে বক্সের বাইরে থেকে শটে জালে বল পাঠান লুকাকু। কিন্তু, কিঞ্চিৎ ব্যবধানে তিনি অফসাইডে থাকায় ভিএআরে গোল মেলেনি।
ফের খেলা শুরুর দুই মিনিটের মধ্যে বক্সে একাধিক খেলোয়াড়ের বাধা এড়িয়ে শট নেন লুকাকু, তবে সোজাসুজি হওয়ায় সেটা রুখে দিতে সমস্যা হয়নি গোলরক্ষকের। সেখান থেকে পাল্টা আক্রমণে উঠে সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করে রোমানিয়াও। সামনে একমাত্র বাধা ছিলেন গোলরক্ষক, কিন্তু তার বরাবর শট নেন ডেনিস মান।
নির্ধারিত সময়ের ১০ মিনিট বাকি থাকতে দুর্দান্ত এক গোলে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন ডে ব্রুইনে। বেলজিয়ান গোলরক্ষক কাস্তেলস নিজের বক্স থেকে শট নেন, বল হাওয়ায় ভেসে মাঝমাঠে সবার ওপর দিয়ে গিয়ে সামনে পড়ে, পেছনে ছুটে যান ডে ব্রুইনে, তাকে টেনে ধরার চেষ্টা করেও পারেননি এক ডিফেন্ডার। বক্সে ঢুকে ডান পায়ের শটে গোলটি করেন বেলজিয়াম অধিনায়ক।
বাকি সময়ে ব্যবধান বাড়ানোর এবং স্কোরলাইনে নাম তোলার পরিষ্কার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি লুকাকু। দুরূহ কোণ থেকে তার শট ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক।
আগামী বুধবার একই সময়ে মাঠে নামবে এই গ্রুপের চার দল। রোমানিয়া মুখোমুখি হবে স্লোভাকিয়ার আর বেলজিয়াম খেলবে ইউক্রেইনের বিপক্ষে।