চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
গত মৌসুমে শেষ দিনে লিগ শিরোপা হারিয়ে সমর্থকদের সামনে কেঁদেছিলেন কোচ এদিন তেরজিচ, এবার দলকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে তুলে খুশির জোয়ারে ভাসছেন তিনি।
Published : 08 May 2024, 01:32 PM
এদিন তেরজিচের ওই ছবিটা অনেকেরই হৃদয়ে গেঁথে আছে। গত মৌসুমে শেষ দিনে গোল পার্থক্যে পিছিয়ে থেকে বুন্ডেসলিগার শিরোপা জিততে ব্যর্থ হওয়ার পর সমর্থকদের সামনে কেঁদেছিলেন বরুশিয়া ডর্টমুন্ড কোচ। সেই তিনিই এবার প্রতিপক্ষের মাঠে নিজেদের কিছু সংখ্যক দর্শকের সামনে দাঁড়ালেন মাথা উঁচু করে। তার মুখে তখন চওড়া হাসি, চোখে গর্বের ঝিলিক।
বুন্ডেসলিগায় গতবারের পুনরাবৃত্তি করতে পারেনি ডর্টমুন্ড। শিরোপা লড়াই থেকে অনেক আগেই ছিটকে পড়ার পর পয়েন্ট তালিকায় এখন তারা আছে পঞ্চম স্থানে। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১১ বছরের খরা ঘুচিয়ে তারা পৌঁছে গেছে ফাইনালে।
সেমি-ফাইনালের প্রথম লেগে নিজেদের মাঠে ১-০ গোলে জয়ের পর মঙ্গলবার পিএসজির মাঠেও একই ব্যবধানে জিতে ফাইনালে উঠে যায় তেরজিচের দল।
প্যারিসে ম্যাচ শেষে তেরজিচ ছুটে যান গ্যালারির সেই অংশে, যেখানে ছিলেন ডর্টমুন্ডের সমর্থকেরা। তাদের সঙ্গে মিলে কোচ উদযাপন করেন ফাইনালে ওঠার সাফল্য।
পরে তিনি বললেন, গত মৌসুমের শেষ দিনের সেই যন্ত্রণার ক্ষতস্থানে কিছুটা প্রলেপ পড়বে এবার। ফাইনাল জিততেও কোচ প্রবল আত্মবিশ্বাসী।
“গত মৌসুমে ঘরের মাঠে শেষ দিনে আমরা চ্যাম্পিয়নশিপ হারিয়েছিলাম। আমি খুশি যে, এখন সমর্থকদের কিছু একটা ফিরিয়ে দিতে পেরেছি।”
“(সমর্থকদের কাছে ছুটে যাওয়াটা) খুবই আবেগময় মুহূর্ত ছিল, খুব চমৎকার সময়। গত মৌসুমের শেষ দিনেও এমন কিছুর প্রত্যাশা ছিল আমাদের। আজকে আমরা কিছুটা ফিরিয়ে দিতে পেরেছি, তাদেরকে স্বপ্ন দেখার সুযোগ করে দিয়েছি এবং এখন ট্রফি ঘরে নিয়ে যেতে সম্ভাব্য সবকিছুই আমরা করব।”
বুন্ডেসলিগায় ছন্দে না থাকায় এবার একটা সময় পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও ডর্টমুন্ডকে সেভাবে গোনায় ধরেননি অনেকে। তবে তেরজিচ মনে করিয়ে দিলেন ইউরোপ সেরার লড়াইয়ে ডর্টমুন্ডের আগের সফল মৌসুমগুলোর চিত্র।
“এরকম কোনো নিয়ম নেই… (যে লিগে খারাপ করলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ভালো করা যাবে না)। সবশেষ যখন ২০১৩ সালে ডর্টমুন্ড চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে খেলে, তখন লিগে তারা পেছনে ছিল ২৫ পয়েন্টে। ১৯৯৭ সালে যখন তারা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, সেবারও লিগে তারা ভালো অবস্থায় ছিল না (৮ পয়েন্ট পেছনে থেকে তৃতীয়)।”
“এই মৌসুমে আমাদের উত্থান-পতন ছিল অনেক। তবে মৌসুম এখনও শেষ হয়নি!।”
তেরজিচ জানালেন, শেষ ষোলোর লড়াই শুরুর আগেই ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ফাইনালে খেলার ছবি আঁকতে শুরু করেছিলেন তারা।
“আইন্দহোভেনের বিপক্ষে ম্যাচের প্রথম রাউন্ডের আগে প্রথমবারের মতো আমরা আলোচনা করেছিলাম যে, লন্ডনের পথটা আমাদের জন্য কতটা কাছে…। ওই সময় অনেকেই সংশয়ে ছিল। তবে প্রতিটি ম্যাচের সঙ্গে আমরা আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছি এবং শেষ পর্যন্ত উপলব্ধি করতে পেরেছি যে, আমরা এমন দল হয়ে উঠতে পারি, যারা সবাইকে চমকে দিতে পারে।”
“এখন আমরা ফাইনালে, দল নিয়ে আমি খুবই খুশি।”
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ওই দুবারই ফাইনাল খেলতে পেরেছে ডর্টমুন্ড। ১৯৯৭ সালে ইউভেন্তুসকে ফাইনালে হারিয়ে তারা চ্যাম্পিয়ন হয়। ২০১৩ সালে ফাইনালে তারা হেরে যায় জার্মান প্রতিদ্বন্দ্বী বায়ার্ন মিউনিখের কাছে। এবার ফাইনালে তারা পাবে সেই বায়ার্ন কিংবা রেয়াল মাদ্রিদকে।