ক্লাবে যা কিছু অব্যবস্থাপনা চলছে, সেসব ঠিকঠাক করতে না পারলে এই শঙ্কার কথা বলেছেন জিম র্যাটক্লিফ।
Published : 11 Mar 2025, 07:13 PM
জিম র্যাটক্লিফ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মালিকানায় যোগ দেওয়ার সময় উচ্ছ্বসিত ছিল ক্লাবটির সমর্থকগোষ্টী। যদিও হাওয়া ঘুরতে খুব বেশি সময় লাগেনি। ব্যয়ভার কমাতে কর্তৃপক্ষের নানামুখী সিদ্ধান্তে ভক্তদের মনে অসন্তোষ বাড়ছে। সেই সঙ্গে দলের ছন্নছাড়া পারফরম্যান্সের হতাশা তো আছেই। খরচ কমাতে সামনে হয়তো আরও বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এতকিছুর কারণ, এখনই যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে চলতি বছর শেষের আগেই ক্লাবের অর্থ ফুরিয়ে যাবে বলে সতর্ক করেছেন র্যাটক্লিফ।
গত বছর ১৩০ কোটি পাউন্ড দিয়ে ইউনা্ইটেডের মালিকানার ২৮.৯৪ শতাংশ কিনে নেন র্যাটক্লিফ। ফলে ক্লাবটির ফুটবল অপারেশন্সের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে আসে এই ব্রিটিশ ধনকুবের প্রতিষ্ঠান ইনিয়সের অধীনে।
কিছুদিন পর্যবেক্ষণের পর দ্রুতই তারা পরিবর্তনের ছরি ঘোরাতে শুরু করে। ইংল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব হলেও বহুদিনের সাফল্য খরায় ভুগে তাদের আর্থিক অবস্থাও যে নাজুক হয়ে পড়েছে, তার প্রথম আভাসও মেলে গত বছর নতুন মালিকদের সিদ্ধান্তে। খরচ কমানোর উদ্দেশ্যে ক্লাবের কিংবদন্তি কোচ অ্যালেক্স ফার্গুসনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। চলতি মৌসুম শেষে ইউনাইটেডের শুভেচ্ছাদূতের পদ ছাড়বেন ফার্গুসন, দলটির ইতিহাসে অধিকাংশ সাফল্য যার কোচিংয়ে এসেছে।
এছাড়া মৌসুমের মাঝামাঝি সময় এসে ম্যাচ টিকেটের মূল্য বাড়ায় ইউনাইটেড, যা অনূর্ধ্ব-১৬ ও বয়স্কদের ওপর প্রভাব ফেলে। কর্তৃপক্ষের এমন আরও অনেক সিদ্ধান্ত প্রবল সমালোচনার জন্ম দেয়। খরচ কমাতে এমনকি তারা স্টাফদের বিনামূল্যে দুপুরের খাবারও বন্ধ করে দেয়।
একেতো দলের পারফরম্যান্স যাচ্ছেতাই, তারওপর ক্লাব কর্তৃপক্ষের এসব ‘ব্যয় সংকোচন’ সিদ্ধান্তে র্যাটক্লিফ ও তার প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে সমর্থকদের ক্ষোভের কারণ হয়ে উঠেছে। তিনি নিজেও পরিস্থিতি অনুধাবন করতে পারছেন; কিন্তু ক্লাবের উজ্বল ভবিষ্যতের জন্য এগুলো প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
“আমাকে বলতেই হচ্ছে, আজকাল আমি সংবাদপত্র পড়া খুব একটা উপভোগ করি না। আমি জানি, মানুষ (ক্লাবের নতুন নানা সিদ্ধান্ত) এসব পছন্দ করছে না, পরিবর্তনগুলো মানুষের জন্য অস্বস্তিকর এবং আমরা কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছি যাতে সবাই অসন্তুষ্ট হচ্ছে। তবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের অবস্থান দৃঢ় করতে এগুলোর প্রয়োজন আছে। মানুষ যদি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে আবার ট্রফি জিততে দেখতে চায়, তাহলে আমাদের এই সবকিছু করতে হবে।”
“এই মুহূর্তে আমি খুব অজনপ্রিয়, আমি বুঝতে পারছি- তবে এজন্য আমি প্রস্তুত এবং কিছুদিন এমন অজনপ্রিয় থাকতে আমি প্রস্তুত। কারণ আমি বিশ্বাস করি যে, আমরা যা কিছু করছি ঠিক করছি।”
কক্ষচ্যুত ক্লাবকে সঠিক পথে ফেরাতে সামনেও আরও কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত থাকবে, একরকম পরিষ্কারই করে দিলেন র্যাটক্লিফ। এরপরই খোলামেলাভাবে বলেন, যদি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে ক্লাবের কোষাগার শূন্য হয়ে যাবে।
“ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড লাইনচ্যুত হয়ে পড়েছে- আমাদের পুনরায় এটা পথে ফেরাতে হবে এবং আমাদের বিশ্বাস, আমরা যা কিছু করছি তাতে এই ক্লাব সঠিক পথে ফিরবে। লিভারপুল ও রেয়াল মাদ্রিদ আজ যেখানে, আগামীতে আমরা সেই অবস্থানে থাকব্।”
“আমি যদি ৩০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করি এবং তারপরও গ্রীষ্মে আমরা যদি কোনো নতুন খেলোয়াড় না কিনি, তবুও এই বছরের শেষ দিকে-২০২৫ সাল শেষের আগেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের অর্থ ফুরিয়ে যাবে।”
‘ইউনাইটেডের কয়েকজন যথেষ্ট ভালো নয়, কয়েকজনকে অতিরিক্ত অর্থ দেওয়া হয়’