কিশোরগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় চার ‘রাজাকার’; বাতিলের দাবি

‘অভিযোগ ওঠা রাজাকারদের মুক্তিযুদ্ধের সময় রণক্ষেত্রে আটক করেছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।’

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Oct 2022, 01:30 PM
Updated : 13 Oct 2022, 01:30 PM

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মাধ্যমে প্রকাশিত তালিকা থেকে রাজাকারদের নাম বাতিলের দাবি জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধারা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা শহরের সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এই দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ভূপাল নন্দী।

ভূপাল নন্দী বলেন, মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার রশিদাবাদ গ্রামের মো. রফিক, পাড়া পরমানন্দ গ্রামের মো. মহরম আলী মোল্লা, জালুয়াপাড়া গ্রামের মো. আজিম উদ্দিন ও নীলগঞ্জ গ্রামের মৃত সুলতান আহম্মদ সেনা- এ চারজন ‘চিহ্নিত রাজাকার’।

“মুক্তিযুদ্ধের সময় রণক্ষেত্রে এই রাজাকারদের আটক করেছিল বীর মুক্তিযোদ্ধারা। যাচাই-বাছাইয়ের সময় উপযুক্ত প্রমাণসহ এদের বিষয়ে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠানো হলেও তাদেরকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়।”

তিনি বলেন, এতে করে সব মুক্তিযোদ্ধা ও বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবমাননা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জামুকাসহ বিভিন্ন কার্যালয়ে বারবার প্রমাণাদিসহ লিখিত অভিযোগ করা পরও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, অবিলম্বে রাজাকারসহ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের নাম বাতিল করা না হলে ভবিষ্যতে আরও কর্মসূচি পালন করা হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক জেলা কমান্ডার এ বি সিদ্দীক বলেন, “জামুকার প্রতি এখন আর মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো আস্থা নেই।”

এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে শৃঙ্খলা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে অবিলম্বে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচনেরও দাবি জানান তিনি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই চারজনের ব্যাপারে অনেক দিন ধরেই মুক্তিযোদ্ধারা আপত্তি করেছেন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবরও এসেছে।“

“উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে তিন-চারবার শুনানিও হয়েছে। পরবর্তী সময়ে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জামুকাকে অবহিত করা হয়েছে। এখন জামুকার সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সহকারী কমান্ডার মো. আজিম উদ্দিন, আব্দুল হাই, নূরুল হক ও জয়নাল আবেদীনসহ প্রায় ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা উপস্থিত ছিলেন।