নাটোরে সওজের উচ্ছেদ অভিযান, সম্বলহীন মানুষের কান্না

“অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করে তাদের ব্যবসা চলতে পারে না।“ 

নাটোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Feb 2023, 03:34 PM
Updated : 13 Feb 2023, 03:34 PM

সরকারি জমি অবৈধ দখলমুক্ত করতে নাটোর শহরে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর।

সোমবার সকাল ৯টা থেকে শহরের হরিশপুর বাইপাস থেকে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয় বলে জানান সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জোবায়ের হাবিব।

তিনি বলেন, “হরিশপুর বাইপাস থেকে বনবেলঘড়িয়া বাইপাস পর্যন্ত এবং শহরের মাদ্রাসা মোড় থেকে পুলিশ সুপারের কার্যালয় পর্যন্ত যত অবৈধ স্থাপনা রয়েছে উচ্ছেদ করা হবে। মহাসড়কের জায়গা দখল করে রাস্তার দুই পাশে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে।“

“সরকারি জায়গা দখল করে নির্মিত অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে সময় নির্ধারণ করে মাইকিং ও প্রচার করেছে প্রশাসন। এরপর উচ্ছেদ শুরু করেছে প্রশাসন।“

সহকারী কমিশনার জোবায়ের হাবিব বলেন, “এর আগে শহরের অভ্যন্তরে প্রধান সড়কের চলমান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ কাজের জন্য উভয় পাশের অধিগ্রহণকৃত এবং অবৈধ দখলে থাকা শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। অবৈধ দখলদারেরা আবারও অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ ও জায়গা দখল করলে আদালতের নির্দেশে পুনরায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে।“

সরজমিনে হরিশপুর বাইপাস থেকে বনবেলঘড়িয়া বাইপাস পর্যন্ত ঘুরে মহাসড়কের দুপাশে অবৈধ দখলদারদের স্থাপনা ও মালামাল সরিয়ে নিতে দেখা যায়।

হরিশপুর বিসমিল্লাহ মটরস অতিক্রম করতেই ওই এলাকার কিছু বাসিন্দাকে হা-হুতাশ করতে দেখা যায়। এ সময় বিসমিল্লাহ মটরসের বিপরীতে চা বিক্রেতা এক নারীকে বিলাপ করতে দেখা যায়। আরেক মাঝ বয়সী মুদি দোকানি নারী কাঁদতে কাঁদতে অজ্ঞান হয়ে যান।

কানাইখালী এলাকার ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান হাবিব এ সময় অভিযোগ করে বলেন, মাইকিং করে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে বলেছিলেন কিন্তু তারা ফুটপাতের পরেও ভাঙছে।

হরিশপুর এলাকার মো. বাপ্পীর স্ত্রী মোছা. মর্জিনা বিলাপ করতে করতে বলেন, “একটা ঘর আর একটা দোকান ছিল। চা, সিংগাড়া, পুরি বিক্রি করে সংসার চলতো। চার লাখ টাকা ঋণ কিভাবে শোধ করবো আর খাবো কী?”

স্বামী-সন্তানহীন ফাতেমা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “পান, চা, সিগারেট, বিস্কুট বিক্রি করেই চলতাম। ম্যাজিস্ট্রেটের পা ধরেছি কিচ্ছু শোনেননি। বলছে ফুটপাত মুক্ত করতে কিন্ত ড্রেনের ওপারে ভাঙবে না বলছে। কিন্তু ভেঙে দিল। আমার এখন কী হবে?”

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রশাসনিক কর্মকর্তা জোবায়ের হাবিব বলেন, “কোনো বাসিন্দার যদি দিনাতিপাতের, কর্মের সমস্যা হয় উপজেলায় জানালে আমরা সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াবো। কিন্তু অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করে তাদের ব্যবসা চলতে পারে না।“ 

উচ্ছেদ অভিযানে নাটোর সদর থানার ওসি নাসিম আহমেদসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।