কংক্রিট ব্লক তৈরির কারখানায় সফল কুড়িগ্রামের মামুন

কংক্রিট ব্লক কারখানায় উৎসাহিত করতে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে বলে জানান জেলা প্রাশসন।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2023, 05:35 PM
Updated : 18 May 2023, 05:35 PM

ইটের পরিবর্তে অল্প খরচে পরিবেশ বান্ধব ইউনিক ব্লক তৈরির কারখানা দিয়ে সফল হয়েছেন কুড়িগ্রামের এক শিক্ষিত যুবক।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর এলাকার মো. সাইফুর রহমানের ছেলে মো. মিদুল হাসান মামুন (৩৮) বেসরকারি চাকরি বাদ দিয়ে নিজেই নিজের কর্মসংস্থান করতে ২০২১ সালে এ কারখানার উদ্যোগ নেন।

কংক্রিট ব্লক পরিবেশ বান্ধব হওয়ায়  তার আগ্রহ আরও বাড়ে। পরে ইউটিউব দেখে অটো ব্লক তৈরির ধারণা নিয়ে চীন থেকে মেশিন ও যন্ত্রাংশ এনে কারখানা দেন এই যুবক।

দুই  বছরের মধ্যে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন তিনি। সাধারণ ইটের তুলনায় সাশ্রয়ী, টেকসই ও পরিবেশ বান্ধব হওয়ায় এ ব্যবসায় বিনিয়োগে সফল হচ্ছেন মিদুল হাসান মামুন।

প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ৩ লাখ টাকা আয় করছেন বলে জানান তিনি। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ২০২১ সালে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়নের পূর্ব ধরলা ব্রিজ সংলগ্ন ‘সরকার কংক্রিট ব্লক’ নামের কারখানাটি তৈরি হয়। কারখানার ভেতরে উন্মুক্ত জায়গায় সারিবদ্ধভাবে সাজানো জার্মান প্রযুক্তিতে তৈরি ব্লক। তার এখানে সাত ধরনের ব্লক তৈরি হয়। কংক্রিটের এই ব্লক নির্মাণে ব্যবহার করা হয় ২.৫ এফএম স্লিট বালু, ১.৫ এফএম লোকাল বালু, ওপিসি সিমেন্ট, হাই গ্রেড এড মিক্সার ও নুড়ি পাথর।

এ ছাড়া গুণগত মান ঠিক রাখতে উৎপাদনের আগে-পরে ল্যাব টেস্টের মাধ্যমে এর পিএসআই নির্ণয় করা হয়।  

এখানে দিনে প্রায় ৭ থেকে ১০ হাজার ব্লক তৈরি করা সম্ভব বলে জানান সরকার কংক্রিট ব্লকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিদুল হাসান মামুন।

দিনে দিনে বাড়ি, ইমরাত ও রাস্তা তৈরিকে ব্লকে চাহিদা বেড়ে চলছে। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বা অর্থিক সহযোগিতা পেলে অটো ব্লকের বাণিজ্যিক সমৃদ্ধি সম্ভব বলে জানান ওই উদ্যোক্তা।

মামুন বলেন, দিন যত যাচ্ছে, এটির চাহিদা তত বাড়ছে। সরকারি-বেসরকারি উন্নয়ন কাজ ছাড়াও শহরে-গ্রামে বাড়ি তৈরির কাজেও দিন দিন এর ব্যবহার বাড়ছে। কংক্রিটের ব্লক দিয়ে বাড়ি স্থাপনা নির্মাণ করলে সাধারণ ইটের চেয়ে ২৫% খরচ কম পড়ে। এ ছাড়া ভবনের লোড বিয়ারিং ক্যাপাসিটিও কমবে। পাশাপাশি মানের দিক থেকেও সাধারণ ইটের তুলনায় টেকসই-মজবুত হবে। পরিবেশের কোনো রকম ক্ষতিসাধন না করেই এটি উৎপাদন করা যায়।

তিনি আরও বলেন, কুড়িগ্রামে এটি প্রথম ব্লক তৈরি কারখানা। দিনে দিনে উদ্যোক্তা তৈরি হবে। সরকার যদি কংক্রিট কারখানা ব্লকে বিভিন্ন সুবিধা দেয় তাহলে বিনিয়োগকারী আরও উৎসাহিত হবেন।

কুড়িগ্রাম জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. রেজাউল করিম বলেন, “কংক্রিট ব্লক এটি পরিবেশ বান্ধব ব্লক। আমরা ইতোমধ্যে জেলায় আরও কয়েকটি কংক্রিট ব্লক কারখানা নির্মাণের আবেদন পেয়েছি। জেলায় কংক্রিট ব্লক কারখানা গড়তে বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করছি।” 

২০২৫ সালের মধ্যে প্রচলিত ইট ভাটাগুলো বন্ধ হচ্ছে জানিয়ে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, “সেক্ষেত্রে কংক্রিট ব্লক পরিবেশ বান্ধব হওয়ায় ভালো ভূমিকা রাখবে। জেলা প্রাশসনের পক্ষ থেকে কংক্রিট ব্লক কারখানার মালিকদের উৎসাহিত করতে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।”