কিশোরগঞ্জের যৌতুকের কারণে স্ত্রীকে হত্যায় মৃত্যুদণ্ড

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে যৌতুকের কারণে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার অপরাধে স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী (পিপি) এম এ আফজল। 

দণ্ডপ্রাপ্ত দেলোয়ার হোসেন মাহতাব (৪২) করিমগঞ্জ উপজেলার কাদিরজঙ্গল ইউনিয়নের উত্তর চান্দপুর গ্রামের মৃত ইমাম উদ্দিনের ছেলে। 

তার স্ত্রীর নাম প্রজ্ঞা মোস্তফা (২৬)। তিনি জেলার ইটনা উপজেলার মৃগা ইউনিয়নের লাইমপাশা গ্রামের মো. আহসান মোস্তফার মেয়ে। 

মামলার বিবরণ থেকে পিপি আফজল জানান, হত্যাকাণ্ডের তিন মাস আগে তাদের একটি মেয়ে সন্তান জন্ম নিয়েছিল। এর কিছুদিন পরই স্ত্রী প্রজ্ঞার কাছে দেলোয়ার ব্যবসা করার জন্য দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন এবং বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ দেয়।

এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ চলে আসছিল।টাকা এনে দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে প্রজ্ঞার উপর অত্যাচার ও শারিরীক নির্যাতন শুরু করে দেলোয়ার। 

এ পরিস্থিতিতে ২০১৯ সালের ২১ মার্চ সকালে যৌতুকের টাকার জন্য প্রজ্ঞার সঙ্গে কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া হয় দেলোয়ারের। এক পর্যায়ে সে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রজ্ঞাকে ছোরা দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যা করে। 

এ সময় স্ত্রীর লাশ ফেলে রেখে তিনি পালিয়ে যান। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওইদিনই তাকে আটক করে। 

এ ঘটনায় নিহত প্রজ্ঞা মোস্তফার পিতা মো. আহসান মোস্তফা বাদী হয়ে ওইদিনই করিমগঞ্জ থানায় দেলোয়ার হোসেন মাহতাবকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা করিমগঞ্জ থানার এসআই আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই দেলোয়ার হোসেনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। 

এর পর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে বৃহস্পতিবার প্রদত্ত রায়ে আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন বিচারক। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডের সাজাও প্রদান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পিপি আফজল। 

আসামিপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মিয়া মো. ফেরদৌস।