তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না: মির্জা ফখরুল

মির্জা ফখরুল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ‘৩০ সিটও’ পাবে না, সে কারণেই তাদের ‘ভয়’।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Sept 2022, 03:00 PM
Updated : 30 Sept 2022, 03:00 PM

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আবারও বললেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন তারা হতে দেবেন না।

শুক্রবার বিকালে গাজীপুরের কাপাসিয়া মাঠে এক স্মরণ সভায় তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ‘৩০ সিটও’ পাবে না, সে কারণেই তাদের ‘ভয়’।

“আওয়ামী লীগের নেতা-নেত্রী ও মন্ত্রীদের যারা এ কথা বার বার বলছেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না’… এটা (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) জনগণের দাবি, জনগণের কাছে মাথা নত করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান চালু করেন; এটা আপনাদেরই করতে হবে।

“আমরা বলতে চাই, তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার না হলে এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না, নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।”

ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব চিৎকার করে বলতেছেন, ‘দিবাস্বপ্ন’ দেখছি আমরা। আপনারা আরেকবার বলছেন, বিশ্ব নেতারা বললেও এখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না।

“কেনো রে ভাই? তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে এত ভয় কেন? তার মানে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আপনারা জীবনেও ক্ষমতায় আসতে পারবেন না, ৩০টা সিটও পাবে না। পাবে?... এটাই হচ্ছে ভয়ের কারণ।”

সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “তোমরা যদি ভালো চাও, জনগণের চোখের ভাষায় বোঝ, দেয়ালের লিখন পড়, তাহলে বুঝবে, এদেশের মানুষ এটা বলতে চায় যে, ‘দয়া করে বিদায় হও। আমাদের রেহাই দাও।’ আমি সোজা কথায় ইংরেজিতে বলি, সেইভ একজিট নিয়ে নাও, নিরাপদে প্রস্থান করো।

“তার জন্য কী করতে হবে? তোমরা পদত্যাগ করো, পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করো এবং সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। এরপরে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশন হবে সেই কমিশন সংসদ নির্বাচন ও সরকার গঠন করতে সাহায্য করবে।”

‘শিয়ালের কাছে মুরগি দেওয়ার গল্প’

মির্জা ফখরুল বলেন, “কাল থেকে দুর্গাপূজা শুরু হচ্ছে। এই পূজায় ওরা এখন অন্যরকম কথা বলতে শুরু করেছে। তাদের বিভিন্ন লোকেরা বলছে যে, এখানে নাকি নাশকতা হতে পারে, এখানে নাকি বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। আরে, সমস্যা তো তোমরা। গত এক বছরে ৯০টি ঘটনা ঘটেছে- আপনার মন্দির ভেঙেছে, হিন্দু সম্পত্তি দখল করেছে, বাড়ি দখল করেছে, সবগুলোর নেতৃত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগ। 

“আজকে তাদেরই নাকি দায়িত্ব শান্তি রক্ষার জন্য। এখন এই গল্প মনে পড়ে যায় যে, শিয়ালের কাছে যদি মুরগি দেন, তাহলে মুরগির অবস্থা কী হবে? আজকে শুধু আমরা নই, এদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় চিৎকার করে বলেছে, আওয়ামী লীগের অধীনে তারা নিরাপদ নয়।”

জ্বালানি তেল ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচিতে পুলিশ ও ক্ষমতাসীনদের ‘হামলা’ এবং দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব।

বিএনপির প্রয়াত নেতা আ স ম হান্নান শাহর ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কাপাসিয়ার ঘাগটিয়া চালা ওয়েলফেয়ার ক্লাব মাঠে এ স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। স্মরণ সভায় যোগ দেওয়ার আগে হান্নান শাহর কবর জিয়ারত করেন বিএনপি মহাসচিব।

হান্নান শাহ স্মৃতি সংসদের আহ্বায়ক ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে, কাপাসিয়ার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আজিজুর রহমান পেয়ারার সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় দলের যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা কামরুজ্জামান রতন, রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, হুমায়ুন কবির খান, জেলা নেতাদের মধ্যে বেনজির আহমেদ টিটু, মজিবুর রহমান, কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল ও প্রয়াত হান্নান শাহর ছেলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান বক্তব্য দেন।