পদ্মা অয়েল কোম্পানির ডিজিএম বলেন, “ইঞ্জিন কক্ষের পাশের চেম্বারে জমে থাকা গ্যাস বের করে না দেওয়ায় বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।”
Published : 01 Jul 2023, 07:38 PM
ছয় মাসের মধ্যে জ্বালানি তেল নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে এমভি সাগর নন্দিনী-২ ট্যাংকারটি।
গত ২৫ ডিসেম্বর ট্যাংকারটি ১১ লাখ লিটার জ্বালানি তেল নিয়ে মেঘনা নদীতে ডুবে গিয়েছিলো। এবার ঝালকাঠী সুগন্ধা নদীতে বিস্ফোরণের পর তাতে আগুন ধরে যায়। যাতে দগ্ধ হয়েছেন পাঁচজন এবং নিখোঁজ রয়েছেন আরও চারজন।
মেঘনা নদীতে তেল নিয়ে সাগর নন্দিনী-২ ডুবে যাওয়ার ঘটনা তদন্তের জন্য পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড যে কমিটি করেছিল তার প্রধান ছিলেন উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) আসিফ মালিক।
তিনি এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ২৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জ্বালানি তেল নিয়ে চাঁদপুরে পদ্মা অয়েল কোম্পানির ডিপোর উদ্দেশে রওনা হয়েছিল এমভি সাগর নন্দিনী-২। পরদিন ভোরে ঘন কুয়াশার কারণে মেঘনা নদীর ভোলার তুলাতুলি কাঠিরমাথা এলাকায় বালুবাহী একটি বাল্কহেডের সঙ্গে ট্যাংকারটির সংঘর্ষ হয়। এতে তলা ফেটে ট্যাংকারটি ডুবে যায়।
ঝালকাঠিতে বিস্ফোরণের পর তেলবাহী জাহাজে আগুন, দগ্ধ ৫, নিখোঁজ ৪
ওই সময় ট্যাংকারে থাকা ১৩ জন কর্মী সাঁতরে তীরে উঠেন। ডুবে যাওয়ার সাতদিন পর দেশীয় প্রযুক্তিতে দুইটি বার্জের মাধ্যমে সাগর নন্দিনী-২ ভাসানো হয়। বিআইডব্লিউটিএর নেতৃত্বে কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশ, প্রাইভেট স্যালভেজ ও মোংলা বন্দরের জাহাজ ‘অগ্নি প্রহরী’ উদ্ধার কাজে সহায়তা করে।
এই দুর্ঘটনার ব্যাপারে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনে ঠিক কী কারণ উল্লেখ করেছিল তা জানাতে পারেননি আসিফ মালিক।
এর মধ্যেই ট্যাংকারটি ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর পাড়ে পদ্মা অয়েল কোম্পানির জন্য জ্বালানি তেল নিয়ে আসে। সেটি নোঙ্গর করা ছিল রাজাপুর গ্রামের কাছে।
শনিবার দুপুরে হঠাৎ করেই ট্যাংকারটিতে বিস্ফোরণের পর আগুন ধরে যায়। ট্যাংকারটিতে ৫ লাখ ৯০ হাজার লিটার ডিজেল এবং ৩ লাখ লিটার পেট্রোল রয়েছে। বিস্ফোরণের পর ট্যাংকারে পানি প্রবেশ করে।
এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে পদ্মা অয়েল কোম্পানির ডিজিএম আসিফ মালিক বলেন, “ঈদের দিন সকালে ট্যাংকারটি নোঙ্গর করে। জুন ক্লোজিং শেষ করে তেল খালাসের জন্য ইঞ্জিন চালু দেওয়া হয়। এ সময় বিস্ফোরণ ঘটেছে। এতে ট্যাংকারের মাস্টার ব্রিজ উড়ে গেছে।
দুর্ঘটনার কারণে সম্পর্কে জানতে চাইলে আসিফ মালিক বলেন, “ইঞ্জিন কক্ষের পাশের চেম্বারে জমে থাকা গ্যাস বের করে না দেওয়ায় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এখন থেকে আমাদের বিকল্প চিন্তা করতে হবে।”
এর আগে গত ১২ মে বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে মেঘনা পেট্টোলিয়ামের ডিজেল ও পেট্টোলবাহী এমভি ইবাদী-১ ট্যাংকারটিতে ইঞ্জিন কক্ষে বিস্ফোরণ ঘটেছিলো।
দুর্ঘটনার কারণে জ্বালানি তেলের কোনো ক্ষতি হয়েছে কি-না জানতে চাইলে আসিফ মালিক বলেন,
“উদ্ধারের পর বলতে পারবো কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আপাতত উদ্ধার করা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা ও পরিকল্পনা চলছে।”
আরও পড়ুন:
ভোলায় তেল নিয়ে ডোবা জাহাজ উদ্ধার, চলছে তেল অপসারণ
জ্বালানি তেল নিয়ে মেঘনায় ডোবা জাহাজ উদ্ধারে বিলম্ব
ভোলায় ১১ লাখ লিটার জ্বালানি তেল নিয়ে ডুবল জাহাজ, ছড়াচ্ছে মেঘনায়