দুর্গম পাহাড়ে জ্বর-রক্তবমিতে ৫ মৃত্যু, যাচ্ছে চিকিৎসাদল

রাঙামাটির সিভিল সার্জন বলছেন, এটা কোনো অজ্ঞাত রোগ নয়; খাদ্যাভ্যাসের কারণে এই সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

রাঙামাটি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 March 2024, 04:10 PM
Updated : 20 March 2024, 04:10 PM

রাঙামাটির দুর্গম বরকল উপজেলায় তীব্র জ্বর, রক্তবমি ও পেট ব্যাথায় তিন মাসে পাঁচজনের মৃত্যুর পর সেখানে চিকিৎসকদল পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

রাঙামাটির সিভিল সার্জন নিহাররঞ্জন নন্দী জানান, উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়নের শুইছড়ি গ্রামের চান্দবিঘাট এলাকায় বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত পাঁচজন মারা গেছে বলে তারা খবর পেয়েছেন। বুধবার একটি মেডিকেল টিম দুর্গম ওই গ্রামে রওনা দিয়েছে।

তবে এটা কোনো অজ্ঞাত রোগ নয় জানিয়ে নিহাররঞ্জন বলেন, “খাদ্যাভ্যাসের কারণে এই সমস্যা হতে পারে। দুর্গম অঞ্চল হওয়ায়, সরকারি হাসপাতালে এসে চিকিৎসার বিষয়ে তেমন আগ্রহ না থাকার কারণে, বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে তাদের মৃত্যু হতে পারে।

“এলাকাটি যেহেতু খুবই দুর্গম, তাই মেডিকেল টিমের পৌঁছাতে বেশ সময়ের প্রয়োজন। ওখানে আক্রান্তদের কেস স্টাডির পর আমরা বিস্তারিত জানতে পারব।”

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মং ক্যছিং সাগর বলছেন, জানুয়ারি মাস থেকে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ১৫ জন। এদের মধ্যে প্রথম মৃত্যু হয় জানুয়ারির ১০ তারিখে। চান্দিনাঘাট গ্রামের লবিন্দর চাকমা এবং স্নেহবালা চাকমার ছেলে পত্তরঞ্জন চাকমা (২৫) মারা যান।

এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি বিমলেশ্বর চাকমা (৫৫), ২৬ ফেব্রুয়ারি ডালিম কুমার চাকমা (৩৫), ১৫ মার্চ চিত্তি মোহন চাকমা (৬০) এবং সবশেষ চলতি মাসের ১৭ তারিখ সোনি চাকমা নামের ৮ বছর বয়সী এক শিশু মারা যায়।

এলাকাটি অতিদুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় সেখানে কোনো মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই এবং আশপাশে কোনো চিকিৎসা সহায়তা কেন্দ্র নেই। স্থানীয় কবিরাজির মাধ্যমে আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

মেডিকেল টিম পাঠানো দেরি কেন? জানতে চাইলে মং ক্যছিং বলেন, “গত জানুয়ারি থেকে পাঁচজনের মৃত্যুর বিষয়টি আমি আজই জেনেছি। পরে সিভিল সার্জনকে জানিয়েছি। আমরা আলোচনা করে একটি মেডিকেল টিম গঠন করেছি, যেটি বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে পৌঁছবে।”

তিনি বলেন, “এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গ হিসেবে আমরা জ্বর, বমি, পেট ব্যথা, শরীর ব্যথার কথা জানতে পেরেছি। আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে যারা অসুস্থ আছেন তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করতে বলেছি।”

বরকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফোরকান এলাহি অনুপম বলছেন, তিনিও সকালেই ঘটনাটি জেনেছেন।