পরিবারের অভিযোগ, দুর্বত্তরা রাশেদা বেগমের শরীরে থাকা প্রায় দুই ভরি স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিয়েছে।
Published : 27 Jul 2023, 07:40 PM
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় এক বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বাড়িতে একা থাকা এই নারীকে নামাজ পড়া অবস্থায় হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা পরিবারের সদস্যদের।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ওই নারীকে শ্বাসরোধ ও মাথায় ছুরিকাঘাত করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন নাঙ্গলকোট থানার ওসি মো. ফারুক হোসেন।
নিহত ৬০ বছরের রাশেদা বেগম উপজেলার জোড্ডা পশ্চিম ইউনিয়নের গোয়ারুয়া মানিকমুড়া গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের স্ত্রী।
রাশেদা বেগম বাড়িতে একা থাকতেন। তার এক ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। ছেলে বিল্লাল হোসেন পোল্যান্ড প্রবাসী। আর মেয়েরা থাকেন শ্বশুর বাড়িতে।
পরিবারের অভিযোগ, দুর্বত্তরা রাশেদা বেগমের শরীরে থাকা প্রায় দুই ভরি স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিয়েছে।
রাশেদা বেগমের ছোট মেয়ে জান্নাতুল ফেরদাউস জানান বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মায়ের সঙ্গে তার সর্বশেষ কথা হয়। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মায়ের মোবাইলে আবার ফোন দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
জান্নাতুল ফেরদাউস বলেন, “পরে পাশের ঘরের মামাতো বোন জ্যোৎস্না বেগমকে আমাদের ঘরে গিয়ে মায়ের খবর নিতে বলি। তিনি আমাদের ঘরে গিয়ে সব দরজা খোলা এবং সব রুমের লাইট বন্ধ দেখতে পান।
“পরে তিনি ঘরের লাইট জ্বালিয়ে মাকে নামাজের জায়নামাজের উপর উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় আমার মায়ের চুল এলোমেলো, গলায় ওড়না পেঁচানো এবং জিহ্বা বের অবস্থায় দেখতে পান।”
জান্নাতুল আরও বলেন, “খবর পেয়ে আমি শ্বশুর বাড়ি গোয়ারুয়া গ্রাম থেকে বাড়ি এসে আমার মাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পাই। পরে মাকে লাকসাম প্রাইভেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।”
“রাত ৮টায় মায়ের মরদেহ নিয়ে বাড়ি এসে পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে মাকে হত্যা করার কথা জানাই। পরে রাত প্রায় সাড়ে ১১টার দিকে নাঙ্গলকোট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মায়ের লাশ থানায় নিয়ে যায়। ”
জান্নাতুল ফেরদাউস আরও বলেন, “আমার মাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমার মায়ের হত্যাকারীদের সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। বর্তমানে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমরা প্রশাসনের নিকট আমাদের নিরাপত্তা দাবি করছি।”
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন মজুমদার বলেন, “স্থানীয় লোকজন আমাকে ঘটনাটি জানায়। বুধবার বাদ মাগরিব নামাজরত অবস্থায় মহিলাকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ও মাথায় আঘাত করে কে-কারা হত্যা করেছে। ওই মহিলা ঘরে একা ছিলেন।
“নাঙ্গলকোট থানা পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে। আমি প্রশাসনের নিকট ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত করে অন্যায়কারীদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।”
ওসি ফারুক হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
“পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কেউ মামলা করেনি। তবে আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি।”