এই পরিস্থিতিকে বর্ষার ‘স্বাভাবিক বন্যা’ বলে অভিহিত করেছে পাউবো।
Published : 03 Jul 2023, 06:17 PM
সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাত কিছুটা কমলেও দুই নদীর পানি তিনটি পয়েন্টে বিপৎসীমার উপরে আছে।
রোববার সকালে শহরের কাজির পয়েন্টসহ কিছু এলাকার রাস্তাঘাট প্লাবিত হলেও বিকালে পানি নেমে গেছে। তবে নিম্নাঞ্চল ও হাওরাঞ্চলের নিচু রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে।
এতে সড়কের উপর নির্ভরশীল মানুষদের দুর্ভোগ হলেও বর্ষায় নৌকায় যাতায়াতকারীদের চলাচল সহজ হয়েছে।
এই পরিস্থিতিকে বর্ষার ‘স্বাভাবিক বন্যা’ বলে অভিহিত করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা।
পাউবো সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী-১ মামুন হাওলাদার সাংবাদিকদের সোমবার বলেন, “রোববারের তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। সোমবার সুরমা নদীর পানি ছাতকে বিপৎসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার এবং সুনামগঞ্জ পয়েন্টে ১৬ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে।
এ ছাড়া দিরাইয়ে পুরাতন সুরমা নদীর পানিও বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।
পাউবোর প্রকৌশলী আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ১৭০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বুলেটিনে জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলার চলমান ‘বন্যা পরিস্থিতির’ অবনতি হতে পারে।
“আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসায় পরবর্তী সময়ে চলমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।”
এদিকে নদ-নদীর পানি হাওরে প্রবেশ করায় সেখানকার নিচু ভিটা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
শাল্লা উপজেলার বাহাড়া ইউনয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু বলেন, “আমাদের হাওর পানিতে ভরাট হয়ে গেছে। এখন নৌ যাতায়াত সহজ হয়েছে। তবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে নৌ চলাচলে ঝুঁকিও আছে।
তিনি বলেন, “আমাদের হাওরের নিচু এলাকার গরিব মানুষ যারা নিচু ভিটায় বসবাস করেন তাদের কিছু কিছু ঘর প্লাবিত হওয়ার মুখে আছে।”
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, “পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে আমাদের সীমান্ত এলাকার কিছু রাস্তাঘাটে পানি উঠেছিল। তবে নেমে গেছে। কিছু নিচু রাস্তাঘাটে এখনও পানি আছে। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের সব ধরনের প্রস্ততি আছে।“
সুনামগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “সুনামগঞ্জে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়নি। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি সহায়তা পাঠানো হয়েছে।”
এদিকে রোববার সুনামগঞ্জ শহরের কাজির পয়েন্ট, নতুনপাড়া, বাজার এলাকাসহ কয়েকটি এলাকায় পানি ওঠার পর বিকেলেই নেমে গেছে। তবে বিভিন্ন উপজেলার সঙ্গে গ্রামের সংযোগ সড়ক প্লাবিত হয়েছে।