অবন্তিকার আত্মহত্যা: জামিন মেলেনি জবির সহকারী প্রক্টরের

“তিনি জামিনে বের হলে মামলার তদন্ত কার্যক্রম প্রভাবিত করার চেষ্টাসহ সাক্ষীদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারেন।”

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 March 2024, 11:53 AM
Updated : 28 March 2024, 11:53 AM

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন কুমিল্লার একটি আদালত।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টায় কুমিল্লার জেলা ও দায়রা জজ (ভারপ্রাপ্ত) নাছরিন জাহানের আদালতে দ্বীন ইসলামের জামিন আবেদন করা হয়। পরে শুনানি শেষে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে বলে জানান বাদীপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ নুরুর রহমান।

আইনজীবী জানান, ২০ মার্চ কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ১ নম্বর আমলি আদালতে দ্বীন ইসলাম জামিন আবেদন করেন। আদালত ওই জামিন আবেদনটিও নামঞ্জুর করেছিলেন।

অবন্তিকার আত্মহত্যা একটি স্পর্শকাতর মামলা উল্লেখ করে আইনজীবী বলেন, “মামলার তদন্ত এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। দ্বীন ইসলাম এ মামলার অন্যতম আসামি। তিনি জামিনে বের হলে মামলার তদন্ত কার্যক্রম প্রভাবিত করার চেষ্টাসহ মামলার সাক্ষীদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারেন।

“তাই আমরা আদালতকে এ বিষয়টি বুঝাতে সক্ষম হয়েছি যে, ন্যায়বিচারের স্বার্থে তাকে যেন জামিন দেওয়া না হয়। আদালত তা বিবেচনায় নিয়ে জামিন নামঞ্জুর করেছেন।”

এই মামলার প্রধান আসামি অবন্তিকার সহপাঠী জবির ১৩তম ব্যাচের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রায়হান সিদ্দিকী আম্মান কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।

২৪ মার্চ আম্মানের পক্ষে তার আইনজীবী জামিন আবেদন করলে কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ১ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক মো. আবু বকর সিদ্দিক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। 

কুমিল্লা সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষক প্রয়াত অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের মেয়ে অবন্তিকা শুক্রবার রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও ‘পিসি পার্ক স্মরণিকা’ নামের ১০ তলা ভবনের দ্বিতীয় তলার বাসায় গলায় রশি বেঁধে ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেন।

মৃত্যুর ১০ মিনিট আগে নিজের ফেইসবুকে এক পোস্টে তিনি এ ঘটনার জন্য সহপাঠী আম্মানকে দায়ী করেছেন। একইসঙ্গে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকেও এ ঘটনার জন্য দায়ী করেন।

ফেইসবুক পোস্টে অবন্তিকা লেখেন, “আমি যদি কখনও সুইসাইড করে মারা যাই তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী, আর তার সহকারী হিসেবে তার সাথে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম।”

অবন্তিকার মৃত্যুর খবর ক্যাম্পাসে আসার পর তার সহপাঠীসহ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।পরদিন সকালে আম্মানকে বহিষ্কার ও দ্বীন ইসলামকে সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পাশাপাশি ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে সাময়িক বরখাস্ত হন দ্বীন।

অবন্তিকার মা তাহমিনা বেগম শবনম ১৬ মার্চ রাতে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩তম ব্যাচের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আম্মান সিদ্দিকীকে আসামি করে মামলা করেন।

ডিএমপি পুলিশ এ মামলায় ওই দুইজনকে ১৬ মার্চ রাতে আটকের পর ১৭ মার্চ কুমিল্লা জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পরদিন এ মামলায় সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের একদিন ও সহপাঠী আম্মানের দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।

আরও পড়ুন:

Also Read: অবন্তিকার মৃত্যু: সহপাঠী আম্মানের জামিন নামঞ্জুর

Also Read: অবন্তিকার মৃত্যু: সহপাঠী, শিক্ষককে গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

Also Read: চিরনিদ্রায় বাবাকে পাশে পেলেন অবন্তিকা

Also Read: কার কাছে বিচার দেব, অবন্তিকার মায়ের বিলাপ

Also Read: অবন্তিকার পরিবার মামলা করলে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ: জবি

Also Read: শিক্ষক-সহপাঠীকে ‘দায়ী করে’ জগন্নাথ ছাত্রীর আত্মহত্যা