কেরানীগঞ্জে প্রতিবন্ধীকে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যা: প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

“সুজন ওই নারীকে হত্যার আগে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন।”

কেরাণীগঞ্জ-দোহার-নবাবগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Dec 2022, 05:55 PM
Updated : 3 Dec 2022, 05:55 PM

ঢাকার কেরানীগঞ্জে এক বাক প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শনিবার বিকালে ঢাকা জেলা কার্যালয়ে এ বিষয়ে সাংবাদ সম্মেলন হয়।

সেখানে পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান জানান, শুক্রবার ভোরে মামলার প্রধান আসামিকে তার শ্বশুরবাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার সুজন মিয়া (২৫) শরীয়তপুর জেলার গোসাইর হাট থানাধীন কোদালপুর গ্রামের দাদন মিয়ার ছেলে।

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, গত সোমবার নিজ বাড়ির সামনে থেকে এক ব্যক্তি ফুসলিয়ে বাক প্রতিবন্ধী লতা সরকারকে কদমতলী শুভাঢ্যা এলাকায় সাবান ফ্যাক্টরির পাশে নিয়ে যায়।

সেখানে ধর্ষণ করে তার শরীর আগুন দিয়ে ঝলসে দেওয়া হয়। রাতে খবর পেয়ে থানা পুলিশ মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে নিয়ে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে লতার মৃত্যু হয়।

মারা যাওয়ার আগে দগ্ধ লতা পুলিশের কাছে আকার-ইঙ্গিতে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন বলে দাবি নিহতের স্বজনদের।

গ্রেপ্তার সুজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, লতা সরকার এবং সুজন মিয়া কেরানীগঞ্জ মডেল থানার কলাতিয়া ইউনিয়নে একই গ্রামে বসবাস করতেন। লতা একটি বালুর গদিতে কাজ করতেন। সুজন ইশারা-ইঙ্গিতে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন; রাজি হন ওই নারী। ঘটনার দিন বিকালে সুজন বালুর গদিতেই লতার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন। 

পুলিশ সুপার আরও বলেন, এরপর লতা সুজনকে বিয়ের জন্য জোর-জবরদস্তি করতে থাকেন। সুজন তখন লতাকে কাপড়-চোপড় নিয়ে রাতে বাড়ির পাশে গাব গাছ তলায় অপেক্ষা করতে বলেন।

লতা চলে গেলে সুজন তাকে (লতা) দূরে কোনো নির্জন জায়গায় নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

“সুজন লতাকে হত্যার আগেও শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন।”

তিনি (সুজন) লতাকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার কথা বলে কেরানীগঞ্জের আটি বাজার এলাকাসহ বেশ কিছু স্থানে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে শেষে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা শুভাঢ্যা সাবান ফেক্টরি এলাকায় আনেন।

সেখানে লতার গলা টিপে ধরে পাশেই পড়ে থাকা জমাট সিমেন্টের বস্তার ওপর মাথা রেখে ইটের আঘাতে মাথা থেতলে দেন। পরে ব্যাগে থাকা কাপড় দিয়ে লতার শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে একটি শুকনো খাদে ফেলে পালিয়ে যান সুজন।

পুলিশ জাতীয় সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে সোমবার রাতে ঘটনাস্থল থেকে লতাকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে নিয়ে ভর্তি করে।

মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় লতার মৃত্যু হয়।

হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, ওই নারীর শরীরের প্রায় ৬৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।

এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে একটি হত্যা মামলা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ তদন্ত) আমিনুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) মোবাশিশরা হাবিবা খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ হিল কাফি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেরানীগঞ্জ (সার্কেল) শাহাবুদ্দিন কবির এবং দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা ওসি মোহাম্মাদ শাহ্ জামান ছিলেন। 

আরও পড়ুন:

Also Read: কেরানীগঞ্জে প্রতিবন্ধীকে ধর্ষণ ও পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা

Also Read: ঢাকার কেরানীগঞ্জে বাক প্রতিবন্ধীকে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ