শিশুরা যেন হয় মানবিক-সহানুভূতিশীল: প্রধানমন্ত্রী

“আজকের শিশুরাই হবে আগামীর স্মার্ট জনগোষ্ঠী।”

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 March 2023, 11:27 AM
Updated : 17 March 2023, 11:27 AM

শিশুরা যেন মানবিক ও অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল অনুভব নিয়ে গড়ে উঠে সেজন্য নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

সরকারপ্রধান বলেছেন, “শিশুদের কথা বিবেচনায় নিয়েই বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। কোনো শিশুই শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হবে না। আগামীর ভবিষ্যৎ শিশুদের সুস্থ, স্বাভাবিক জীবন দিতে কাজ করছে আওয়ামী লীগ সরকার। আজকের শিশুরাই হবে আগামীর স্মার্ট জনগোষ্ঠী।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, “শিশুদের শরীরচর্চা, খেলাধুলায় নজর দিতে হবে। অভিভাবক ও শিক্ষকদের কথা মেনে চলতে হবে। হতে হবে মানবিক গুণসম্পন্ন ও সহানুভূতিশীল। আত্মবিশ্বাস নিয়ে গড়ে উঠবে শিশুরা। মানুষের জন্য কাজ করবে—সেভাবেই গড়ে উঠতে হবে।“

শুক্রবার দুপুরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আয়োজিত শিশু সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

জাতীয় শিশু দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, শিশুদের চোখ সমৃদ্ধির স্বপ্নে রঙিন’।

স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যে শিশুদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,  “স্মার্ট বাংলাদেশে কোনো শিশুই শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হবে না, কোনো মানুষই ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না। দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত হবে না, প্রতিটি মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করে বাংলাদেশকে আমরা গড়ে তুলবো।”

“ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। আগামীতে ২০৪১ সালে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ আমরা গড়তে চাই এবং আজকের শিশুরাই হবে সেই আগামী দিনের স্মার্ট জনগোষ্ঠী। যারা এই বাংলাদেশকে গড়ে তুলবে।”

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সবাই মৌলিক অধিকার পাবে। আজ আমাদের মাঝে বঙ্গবন্ধু নেই, কিন্তু তার আদর্শ আছে। তা নিয়েই আমরা এগিয়ে যাব।

শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের ছেলে-মেয়েরা খেলাধূলায় অংশগ্রহণ করলে শরীর ভাল থাকবে, মন-মানসিকতা ভাল থাকবে এবং সবাই একটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে গড়ে উঠবে। সেটাই আমি চাই।

“‘অন্ধকে অন্ধ বলিও না, আর পঙ্গুকে পঙ্গু বলিও না’- এটাতো ছোটবেলার শিক্ষা; কাজেই তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে। আমরা তাদেরকে ভাতা দেই এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা বৃত্তিও দিয়ে থাকি। কাজেই সকলেই একই সমাজের, সকলেই একই সংসারের।

তিনি বলেন, “জাতির পিতা শিশুদের ভালবাসতেন এবং শিশুদের জন্য তার অত্যন্ত দরদ ছিল এবং শিশুদের সঙ্গে খেলা করতেও তিনি ভালবাসতেন। এজন্য তার জন্মদিনকে আমরা ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছি কারণ, শিশুরা আমাদের আগামী দিনের ভবিষ্যৎ এবং তারা যেন যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।”

শিশু প্রতিনিধি স্নেহা ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দুই শিশু রুবাবা তোহা জামান ও এ এল শরফুদ্দিন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল। শিশুদের পক্ষে বক্তব্য দেন ছোট্ট স্বপ্নিল বিশ্বাস।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘বঙ্গবন্ধু ও শিশু অধিকার’ শীর্ষক একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

এর আগে, সকাল সাড়ে ১০টায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধি সৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী মোনাজাতে অংশ নেন।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পর রাষ্ট্রপতির পরিবারের সদস্যরা শ্রদ্ধা জানান। পরে কেন্দ্রীয় ও গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে জাতির পিতার সমাধি সৌধে শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।