লিমন হত্যাচেষ্টা মামলা: ফের চূড়ান্ত প্রতিবেদন, নারাজি

মামলার বাদী লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম সোমবার ঝালকাঠির আদালতে নারাজি দাখিল করেন।

ঝালকাঠি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Dec 2022, 01:22 PM
Updated : 5 Dec 2022, 01:22 PM

ঝালকাঠির রাজাপুরের সেই লিমন হত্যাচেষ্টা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার আবরও দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দিয়েছেন বাদী। 

বাদীর আইনজীবী আককাস সিকদার জানান, এই মামলার বাদী লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম সোমবার ঝালকাঠির জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে এ নারাজি দাখিল করেন।

বিচারক এ এইচ এম ইমরুনুর রহমান নারাজির আবেদন শুনানির জন্য আগামী ৩ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন। 

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই চলতি বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর আদালতে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় বলে আককাস সিকদার জানান। 

তিনি বলেন, দীর্ঘ তদন্ত শেষে পিবিআই প্রধান কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন – লিমন গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা সত্য, তবে কারা তাকে গুলি করেছে তার কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ভবিষ্যতে সাক্ষ্য ও প্রমাণ পাওয়া গেলে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করা হবে। 

এর আগে রাজাপুর থানা পুলিশ ২০১২ সালের ১৪ অগাস্ট আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল।

লিমনের মা হেনোয়ারা বেগমের দাবি, তার ছেলে লিমনকে র‌্যাব গুলি করে পঙ্গু করেছে। তিনি এ ঘটনার বিচার চান। 

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১১ সালের ২৩ মার্চ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে বরিশাল র‌্যাব-৮ এর সদস্যরা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর সময় তৎকালীন কলেজছাত্র লিমন হোসেন গুলিবিদ্ধ হন। 

পরে লিমনের বাম পা হাঁটু থেকে কেটে ফেলা হয় পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালে। 

এ ঘটনায় লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে ২০১১ সালের ১০ এপ্রিল ওই সময়ে বরিশাল র‌্যাব-৮ এর উপ-সহকারী পরিচালক-ডিএডি লুৎফর রহমান,  কর্পোরাল মাজহারুল ইসলাম, কনস্টেবল মো. আব্দুল আজিজ, নায়েক মুক্তাদির হোসেন, সৈনিক প্রহ্লাদ চন্দ এবং কার্তিক কুমার বিশ্বাসসহ অজ্ঞাতনামা আরও ছয় র‌্যাব সদস্যর নামে ঝালকাঠির আদালতে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজাপুর থানার এসআই আব্দুল হালিম তালুকদার ২০১২ সালের ১৪ অগাস্ট আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে র‌্যাব সদস্যদের অব্যাহতির সুপারিশ করেন।   

লিমনের মা হোনোয়রা বেগম ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ৩০ অগাস্ট ঝালকাঠির জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে নারাজি দাখিল করেন। 

আদালত ২০১৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বাদীর নারাজি আবেদন খারিজ করে দেন। নারাজি খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ২০১৩ সালের ১৮ মার্চ রিভিশন দায়ের করেন হেনোয়রা বেগম। 

২০১৮ সালের পহেলা এপ্রিল অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এস কে এম তোফায়েল হাসান রিভিশন মঞ্জুর করেন। এই আদেশের পর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. সেলিম রেজা মামলাটি  তদন্তের জন্য ২০১৮ সালের ২২ এপ্রিল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইকে নির্দেশ দেন। 

২০১১ সালে কলেজছাত্র মো. লিমন হোসেন পা হারান। ২০১৩ সালে এইচএসসি, ২০১৮ সালে আইন বিষয়ে স্নাতক (সম্মান-এলএলবি) এবং ২০১৯ সালে স্নতকোত্তর [এলএলএম] পাস করেন। ২০২০ সালে তিনি সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। 

আরও পড়ুন:

Also Read: র‌্যাবের গুলিতে পা হারোনো সেই লিমনের বিয়ে

Also Read: র‌্যাবের বিরুদ্ধে লিমনের মায়ের মামলা চলবে