জেলা প্রশাসক বলেন, “বিদ্যুৎ, নেটওয়ার্ক না থাকায় কক্সবাজারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। কক্সবাজার অনেকটা অচল হয়ে পড়েছে।”
Published : 25 Oct 2023, 06:13 PM
ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে কক্সবাজারের অনেক জায়গায় গাছপালা উপড়ে গেছে ও বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। শুধু কক্সবাজার পৌরসভাতেই ১৫ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। উপকূলীয় চরকিয়া ও মহেশখালীতে ধ্বংসের বড় ছাপ রেখে গেছে এই ঝড়।
ঘূর্ণিঝড় আঘাতের ২৪ ঘণ্টা পরেও কক্সবাজারে বিদ্যুৎ ফেরেনি। বুধবার শেষ বিকাল থেকে খুব স্বল্প পরিসরে মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারছেন গ্রাহকরা।
জেলা-উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন সড়কে গাছ পড়ে থাকায় মঙ্গলবার রাত থেকেই যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঝড়ে তিনজনের প্রাণহানি ও অর্ধশতাধিক মানুষের আহত হওয়ার তথ্য জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
নিহতরা হলেন- কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী এলাকার খুইল্ল্যা মিয়ার ছেলে আবদুল খালেক (৪০), মহেশখালী এলাকার হারাধন দে (৪৫) এবং চকরিয়া বদরখালী এলাকার জাফর আহমদের ছেলে আসকর আলী (৪৭)।
বুধবার কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান সাংবাদিকদের বলেন, “জেলা শহর ছাড়াও উপজেলাগুলোতে সড়ক-উপসড়কে গাছপালা উপড়ে পড়েছে। ভেঙে পড়েছে বৈদ্যুতিক খুটি। বিদ্যুৎ, নেটওয়ার্ক না থাকায় কক্সবাজারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
“কক্সবাজার অনেকটা অচল হয়ে পড়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের কাজ চলছে। মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় জানতে বিলম্ব হচ্ছে।”
১৫ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্তের তথ্য জানিয়ে কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মো. মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, “প্রধান সড়ক ও উপসড়কে গাছ ভেঙে পড়ে অনেক অংশ এখনও বন্ধ। তা সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। পৌরসভায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ভেঙে গেছে আড়াই শতাধিক ঘর। সমিতিপাড়া, ফদনার ডেইল, নাজিরারটেক এলাকায় ক্ষতির পরিমাণ বেশি।”
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার পরই ঘূর্ণিঝড় হামুন উপকূলে আঘাত হানে। এতে উপড়ে যায় গাছপালা ও ঘরবাড়ি। কক্সবাজার শহরের হলিডে মোড়, সদর হাসপাতাল সড়কেই উপড়ে পড়েছে ১৫টির বেশি গাছ। একই সঙ্গে বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে বৈদ্যুতিক তার; ব্যাহত হচ্ছে যানবাহন চলাচল। নেই বিদ্যুৎ।
শুধু এই সড়কই নয়; কক্সবাজার জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে উপড়ে পড়েছে বিশাল আকৃতির গাছ। বৈদ্যুতিক খুঁটিও উপড়ে পড়েছে সড়কে। ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে কক্সবাজার শহরের পাশাপাশি উপজেলাগুলোতেও একই অবস্থা। চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
চকরিয়ায় বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বখতিয়ার উদ্দিন রুবেল বলেন, “বাতাসের তাণ্ডবে উপকূলীয় ইউনিয়নের অনন্ত দুই শতাধিক ঘর ভেঙে গেছে। আসকর আলীর মৃত্যু ছাড়াও আহত হয়েছে ২০ জনের বেশি।”
তিনি আরও বলেন, “আবহাওয়ার বার্তা ও প্রশাসনে প্রস্তুতির অনেক আগেই আঘাত এনেছে হামুন। ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ধারণার বেশি। এ ছাড়াও পূর্ব বড় ভেওলা, বিএম চর, ডেমুশিয়া ও কোনাখালী ইউনিয়নে শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় ঘরের টিন, গাছের ডালপালা ভেঙে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।”
মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শেখ কামাল বলেন, মহেশখালীর কুতুবজোম, হোয়ানক, ধলঘাটা, মাতারবাড়ি, কালারমারছড়া ইউনিয়ন লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। ঘর, গাছ ভেঙে একাকার হয়ে গেছে। ধলঘাটার কিছু এলাকায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছিল। পরে নেমে গেছে।