গাজীপুরে গ্যাসের আগুনে মৃত্যু বেড়ে ৫

চার দিন আগের ওই অগ্নি দুর্ঘটনায় আরো ২৪ জন এখনো হাসপাতালে ভর্তি, তাদের মধ্যে ১৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ঢাকা মেডিকেল প্রতিনিধিগাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 March 2024, 05:18 AM
Updated : 17 March 2024, 05:18 AM

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গ্যাসের আগুনে দগ্ধদের মধ্যে আরো দুজন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

চার দিন আগের ওই অগ্নি দুর্ঘটনায় দগ্ধদের মধ্যে এ নিয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হল। আরো ২৪ জন এখনো হাসপাতালে ভর্তি আছেন, তাদের মধ্যে ১৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।     

বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শঙ্কর শংকর পাল জানান, রোববার ভোর সাড়ে ৫টায় আরিফুল ইসলাম নামের ৩৮ বছর বয়সী এক জনের মৃত্যু হয়। সকাল পৌনে ৭টায় মারা যান ২৫ বছর বয়সী মহিদুল খান।

তারা দুজনই আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন। আরিফুলের পোড়ার মাত্রা ছিল ৭০ শতাংশ, মহিদুলের ৯৫ শতাংশ।

আরিফুলের গ্রামের বাড়ি রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার আলাইপুর গ্রামে, বাবার নাম আব্দুর রাজ্জাক। তিনি গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানার আয়রন ম্যান হিসেবে কাজ করতেন। এক ভাই দুই বোনের মধ্যে ছোট আরিফুল স্ত্রী সুমি আক্তারকে নিয়ে কালিয়াকৈরের টপস্টার এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।

আর মহিদুল সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুর বেড়াকোলা খাপারা গ্রামের ছাবেদ খানের ছেলে। তিনি গার্মেন্ট কারখানার জুট গোডাউনের শ্রমিক ছিলেন। তিনিও টপস্টার এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।

সেদিনের আগুনে মহিদুলের স্ত্রী নার্গিসও (২২) দগ্ধ হন। ৯০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া নার্গিস এখনো চিকিৎসাধীন। গাজীপুরে ভাড়া বাসা থেকে তারা দুজনই কারখানায় ও গুদামে চাকরি করতেন। তাদের একমাত্র ছেলে রয়েছে গ্রামের বাড়িতে। 

বুধবার সন্ধ্যায় ইফতারের আগে আগে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ওই ঘটনা ঘটে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক তেলিরচালা এলাকায়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরা জানান, যে বাসায় ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে গ্যাস বের হতে থাকা গরম সিলিন্ডার ভেজা চট দিয়ে মুড়িয়ে বাইরে রেখে যান পরিবারের কেউ একজন। স্থানীয়দের অনেকে কৌতূহলী হয়ে এগিয়ে এসেছিলেন কী হচ্ছে সেটা দেখতে। সিলিন্ডার থেকে গ্যাস বেরিয়ে যে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে, তা বুঝতে পারেনি কেউ।

সে সময় পাশের আরেকটি বাসায় চুলা ধরাতে গেলে পুরো রাস্তায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তাতেই দগ্ধ হয় সবাই।

ওই ঘটনার পর মারাত্মকভাবে দগ্ধ ৩২ জনকে রাতেই ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়।

তাদের মধ্যে শনিবার তৈয়বা নামে ৪ বছরের এক শিশু এবং মুনসুর আলী আকন্দ নামের ৪৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। শুক্রবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সোলেমান মোল্লা নামে ৪৫ বছর বয়সী আরেকজন।  

বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. তরিকুল ইসলাম জানান,  গাজীপুরে দগ্ধদের মধ্যে ২৪ জন এখন ভর্তি রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

পুরনো খবর...

গাজীপুরে গ্যাসের আগুনে মৃত্যু বেড়ে ৩

গাজীপুরে গ্যাসের আগুন: চলে গেলেন আরেকজন

গাজীপুরে দগ্ধদের একজনের মৃত্যু

গাজীপুরে দগ্ধ একজন লাইফ সাপোর্টে, বাসায় ফিরেছেন একজন

গাজীপুরে গ্যাসের আগুনে দগ্ধ বেশিরভাগের অবস্থা ‘আশঙ্কাজনক’

ভেজা চট পেঁচিয়ে রাখা সিলিন্ডার দেখে কৌতূহলীদের ভিড়, তখনই আগুন

গাজীপুরে রাস্তায় ‘গ্যাস সিলিন্ডার’ বিস্ফোরণে দগ্ধ ৩২