পটুয়াখালীতে আওয়ামী লীগ-বিএনপির সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ আহত ৫০

হামলা নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

পটুয়াখালী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 May 2023, 11:42 AM
Updated : 20 May 2023, 11:42 AM

পটুয়াখালী‌তে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষ হয়েছে। এতে সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।

শ‌নিবার শহ‌রের বনানী এলাকায় বিএনপির কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে বলে পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) আহমাদ মাঈনুল হাসান জানান।

খবর পেয়ে পুলিশ লাঠিপেটা, কাঁদুনে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল থেকে শহরে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন বিভিন্ন উপজেলা ও পৌরসভার নেতা-কর্মীরা।

এদিকে সকালে পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শান্তি সমাবেশ শেষে একটি মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা কর্মীরা। এ সময় হঠাৎ দুপক্ষের নেতা-কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ। এ সময় মুসলিমপাড়া মোড় থেকে বনানী পর্যন্ত পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে মাই টিভির জেলা প্রতিনিধি মশিউর রহমান বাবলু ও সময় টিভির ক্যামেরা পারসন সুজন দামসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।

পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্যসচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার চেষ্টা করলেও আমাদের ওপর অর্তকিত হামলা চালায় ছাত্রলীগ-যুবলীগ। সমাবেশে যোগ দিতে আসার সময় নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে তারা।

“তাদের ভয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে না পেরে বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন আহতরা। তারা আমাদের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে। পুলিশ দেখেও এর কোনো প্রতিকার করেনি।”

এদিকে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সকালে নেতা-কর্মীরা শহরের তিতাস সিনেমা হল মোড়ে শান্তি সমাবেশ করেছে। এ সময় ছাত্রদলসহ বিএনপির নেতা-কর্মীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে অন্তত ৭ থেকে ৮ জন আহত হয়েছে।

“তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্যদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।”

হামলার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সেখানে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু।

তিনি বলেছেন, “সকাল ১০টার কর্মসূচিতে যাওয়ার সময় পথে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সঙ্গে পুলিশও বাধা দেয়। তারা আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশস্থল ও এর আশপাশে নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। নেতা-কর্মীদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেছে।”

“সরকার জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে। তারা এদেশে কোনো দল থাকতে দেবে না। অবৈধ ও অনিবার্চিত সরকারকে কোনোভাবেই ক্ষমতায় দেখতে চায় না জনগণ।”

আবদুল আউয়াল মিন্টু আরও বলেন, “অচিরেই এ সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে বিএনপি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনোভাবেই দেশে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। কেননা তত্ত্বাবধায়ক ও নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।”

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশারেফ হোসেন, বরিশাল বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান, সহদপ্তর সম্পাদক মনির হোসেন, সহপ্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য হাসান মামুন, পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টি, সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল আলম তালুকদার।